25/04/2024 : 10:15 PM
আমার বাংলাভ্রমণ

ভ্রমণঃ ঘুরে আসুন মঙ্গলকোটের কোগ্রামে

জিরো পয়েন্ট নিউজ – পরাগ জ্যোতি ঘোষ, মঙ্গলকোট:

এই করোনা পরিস্থিতিতে গৃহবন্দী থেকে মুক্তি পেতে চান। তাহলে ঘুরে যেতে পারেন মঙ্গলকোটের কোগ্রাম এ। অজয় কুনুরের সঙ্গমস্থলে কোগ্রাম আপনার মনের মধ্যে এক অপার্থিব সুর সৃষ্টি করবে ।

মনে করিয়ে দেবে “বাড়ি আমার ভাঙন ধরা অজয় নদীর বাঁকে /জল যেখানে সোহাগ ভরে স্থলকে ঘিরে রাখে”- কবিতার কবি কুমুদ রঞ্জন মল্লিক কে । পল্লীকবির আম্রকুঞ্জে সুশীতল ছায়া আর সামনে অজয় নদীর প্লাবিনি রূপ আপনার দুচোখ সার্থক করবে । দেখে নেবেন পল্লীকবির বাসভিটা।

এখানেই শেষ নয়। পাশেই রয়েছে সতী মায়ের ৫১ শক্তিপীঠ এর একটি পীঠ শ্রী শ্রী মা মঙ্গল চন্ডী মন্দির । উল্লেখ্য গ্রামের প্রাচীন নাম উজানী। কথিত আছে ভগবান শ্রী শ্রী বিষ্ণুর চক্র সতী দেবীর বাম হাতের কনুই অংশ কেটে ফেললে তা এখানে পতিত হয়েছিল ।

এই মন্দিরে শ্রী শ্রী মঙ্গল চন্ডী মাতা ও ভৈরব কপিলেশ্বর মূর্তি দর্শন পরম ভাগ্যের বিষয়। বৈষ্ণব কবি রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র তার কাব্যগ্রন্থ অন্নদামঙ্গলের পীঠমালা পর্বে সতী মায়ের ৫১ পীঠের বর্ণনায় লিখেছেন যে উজানিতে কফোনি মঙ্গল চন্ডী দেবী/ ভৈরব কপিলামবর শুভ যারে সেবি “—অজয়ের ধার ঘেঁষে মায়ের মন্দির এ গেলে মন প্রাণ পবিত্র আনন্দে ভরে ওঠে ।

মন্দিরের গর্ভগৃহে কাল কষ্টি পাথরের ১২ ইঞ্চি উচ্চতার দশোভূজা সিংহবাহিনী মহিষাসুরমর্দিনী মঙ্গল চন্ডী দেবীর মূর্তি ,মায়ের পাশে রয়েছে ছোট গণেশের মূর্তি, তারপাশেই আরেক বেদীতে রয়েছে ভৈরব কপিলেশ্বর ও তার বাহন নন্দী ।এছাড়াও দেখতে পাওয়া যাবে এক অতি প্রাচীন শালগ্রাম শিলা ও ভগবান বুদ্ধের মূর্তি ।গবেষকরা বলেন বুদ্ধ মূর্তি পাল রাজাদের যুগের। দারুণভাবে সুসজ্জিত এই মন্দিরের পাশেই থাকেন সোমনাথ রায়, মন্দিরের সেবায়েত। শারদীয় উৎসবের সময় মায়ের প্রধান উৎসব পালিত হয় ।

এছাড়া বছরের অন্যান্য সময় নানা উপাচারের নিত্যপূজা হয়েই থাকে এখানে। যদি আগে থেকে বলে রাখা হয় তাহলে আপনি মায়ের ভোগ খেতে পাবেন সামান্য কিছু দক্ষিণার বিনিময় এ। মন্দির সংলগ্ন স্নানাগার, শৌচাগার আছে ।আপনার কোনরূপ অসুবিধা এখানে হবে না ।

এছাড়াও এখানে রয়েছে নীল রোহিতেশ্বর শিব মন্দির। কথিত আছে কবি কুমুদ রঞ্জন মল্লিক শিবলিঙ্গটি নদী থেকে পান এবং প্রতিষ্ঠা করেন। এর পাশেই রয়েছে বৈষ্ণব কবি লোচন দাসের সমাধি মন্দির ।

এককথায় সারাদিনের একটি মন ভরানো ভ্রমণের উত্তম স্থান এই কোগ্রাম । এখানে প্রকৃতি ও প্রাচীনত্ব আপনাকে ভাবাবেই ভাবাবে। যাবেন কীভাবে । অবশ্যই এই লকডাউন পিরিয়ডে প্রাইভেট কার বা two-wheeler একমাত্র ভরসা । গুসকরা থেকে নতুনহাট যাওয়ার পথে কুমুদ সেতুর একটু আগেই বাঁদিকে রাস্তা। লাল মাটির রাস্তা চলে গেছে গ্রামের দিকে । মাত্র ২ মিনিট গেলেই আপনি আসল জায়গায় পৌঁছে যাবেন। অবশ্যই মাস্ক ,স্যানিটাইজার, সকল রকম হালকা খাবার দাবার নিয়ে যাবেন। সঙ্গে পরিচয় পত্র অবশ্যই রাখবেন । নিরিবিলি ছায়ায় বসে ঘুরে আসুন আর বিকেলের ছায়া পড়ার সাথে সাথেই আপন নীড়ে ফিরতে ভুলবেন না কিন্তু। কারণ লকডাউনে করোনার জন্য হোটেলে স্থান পাওয়া মুশকিল হবে আর এটা আপনার পক্ষে স্বাস্থ্যকর ও হবে না।

Related posts

একদিকে বেহাল দশা রেল গেটের রাস্তার অন্যদিকে লক ডাউনে এটিএম বন্ধঃ পাল্লারোডে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ

E Zero Point

শিকাগো ধর্ম মহাসভাকে স্মরণ করে দুর্গা মন্দির প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির

E Zero Point

বর্ধমানে প্রথম বৈকালিক রক্তদান শিবির

E Zero Point

মতামত দিন