জিরো পয়েন্ট নিউজ – আলেক শেখ, কালনা, ২২ অগাস্ট ২০২০:
ভাঙ্গনরোধে নদীপাড় বাঁধাইয়ের এক মাসের মধ্যেই আবার নদী ভাঙ্গন শুরু কাবাডি গ্রাম খ্যাত কালিনগরে। জুন মাসের আমফান ঝড়ের পর থেকেই এই গ্রামে নদী ভাঙ্গন শুরু হয। কয়েক দিনের মধ্যেই সেই ভাঙ্গন ব্যাপক আকার ধারণ করে। কালনা-১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত এই গ্রামের বাসিন্দারা লিখিতভাবে প্রশাসনকে জানালে, কয়েকজন সরকারি প্রতিনিধি
সরেজমিন তদন্তের পর ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। জুলাই মাসেই বালির বস্তা দিয়ে নদী পাড় বাঁধানো হয়। পাড় বাঁধানোর এক মাসের মধ্যেই আবার নদী ভাঙ্গন ব্যাপকভাবে শুরু হয়েছে। এই গ্রামে নদী ভাঙ্গন সমস্যা আজকের নয়, বহুদিন পূর্বের । অভিযোগ মানুষের আইওয়াশ করতে নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধের নামে ছেলেখেলা হয়েছে বারবার । পাকাপাকিভাবে ভাঙ্গনের সমস্যা সমাধান না করে লোক হাসানো প্রকল্প নেওয়া হয়েছে । ভাঙ্গন প্রতিরোধে একবার ভেটিভার নামক ঘাস লাগিয়ে দেওয়া হয় নদী পাড়ে । বলা হয় এই ঘাসই নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ করবে । কিন্তু যে বছর ঘাস লাগানো হয়, সেই বছরই সেই ঘাস ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায় । তারপর নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে ফেলা হয় বাঁশের খাঁচা । সেই বাঁশের খাঁচাও ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যায়। তারপরে গত জুলাই মাসে বালির বস্তা দিয়ে নদীপার বাঁধানো হয়। কিন্তু তার পরেও নদীর ভাঙ্গন বন্ধ হয়নি। সেই ট্রাডিশন সমানে চলেছে— নদীভাঙ্গন অব্যাহত । গ্রামবাসীদের দাবি পাকাপাকিভাবে ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা হোক । কিন্তু প্রশাসন ঘাস, বাঁশের খাঁচা, বালির বস্তার পর কি প্রকল্প নিয়ে আসে সেটাই এখন দেখার। পূর্ব বর্ধমান জেলার এই গ্রামটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ভাগীরথী নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত । একমাত্র নৌকায় হল যোগাযোগের অবলম্বন । তবুও এই চরম প্রতিকূলতার মধ্যেও এই গ্রাম বহু সু-সন্তানের জন্ম দিয়েছে । ১৯৮৬ সালে বেজিংয়ে অনুষ্ঠিত এশিয়াডে ভারত একমাত্র সোনা জয়ী হয়েছিল কাবাডিতে । সেই সোনাজয়ী কাবাডি দলে অংশগ্রহণ করেন এই কালিনগর গ্রামের প্রয়াত আনজার আলী শেখ । এছাড়াও রাজ্য ও জাতীয় স্তরের বহু কাবাডি খেলোয়াড়ের জন্ম দিয়েছে এই গ্রাম । তাই কালিনগর আজ কাবাডি গ্রাম বলেই খ্যাত। ঐতিহ্যপূর্ণ গ্রামের তকমা নিয়ে কালিনগর গ্রাম ব্যাপক ভাঙ্গনের মুখে দাঁড়িয়ে। গ্রামবাসীদের দাবি আর কোন বিকল্প পথে নয়, পাকাপাকিভাবে এই নদী ভাঙ্গন রোধ করা হোক।