19/04/2024 : 10:15 AM
আমার দেশ

রাস্তার হকারদের ব্যবসায়িক ও ডিজিটাল লেনদেনের জন্য ওটিটি প্ল্যাটফর্মের সুবিধা দেওয়া হবে : প্রধানমন্ত্রী

জিরো পয়েন্ট নিউজ ডেস্ক, দিল্লী, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০:


প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মধ্যপ্রদেশের রাস্তার হকারদের সঙ্গে ‘স্বনিধি সংবাদ’ মতবিনিময় কর্মসূচিতে অংশ নেন। কেন্দ্রীয় সরকার কোভিড-১৯ এর দরুণ রাস্তার হকারদের জীবন-জীবিকায় যে প্রভাব পড়েছে, তার প্রেক্ষিতে তাঁদের সাহায্য করার জন্য গত পয়লা জুন প্রধানমন্ত্রী স্বনিধি কর্মসূচি শুরু করে। ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রদেশ থেকে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার রাস্তার হকার এই কর্মসূচিতে নথিভুক্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১ লক্ষ ৪০ হাজার রাস্তার হকারের আর্থিক অনুদান সংক্রান্ত আবেদনপত্র গৃহীত হয়েছে। এই খাতে ১ লক্ষ ৪০ হাজার রাস্তার হকারকে ১৪০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হবে।

এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী স্বাভাবিক জীবন-যাপনের ছন্দ ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে তাঁদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বলেন, এদের আত্মবিশ্বাস, আন্তরিকতা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই হকাররা স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পেরেছেন।

৪ লক্ষ ৫০ হাজারেরও বেশি রাস্তার হকার চিহ্নিতকরণ এবং দু’মাসের মধ্যে ১ লক্ষেরও বেশি হকারের ঋণ আবেদনপত্রগুলি খতিয়ে দেখার কাজ শেষ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী মধ্যপ্রদেশ সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, মহামারীর সময়েও রাজ্য সরকার এই কাজ করতে পেরেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কোনও বিপর্যয়ের প্রথম প্রভাব পড়ে দরিদ্রদের উপর, তাঁদের কর্মসংস্থান, অন্ন সংস্থান এবং সঞ্চয়ের উপর।
মহামারীর সময় যখন অধিকাংশ দরিদ্র প্রবাসী ব্যক্তি নিজ নিজ গ্রামে ফিরেছেন, সেই সময়কার কথাও শ্রী মোদী উল্লেখ করেন।
শ্রী মোদী বলেন, প্রথম দিন থেকেই সরকারের প্রচেষ্টা রয়েছে, লকডাউন ও মহামারীর সময়ে যাতে দরিদ্র তথা নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষকে কম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, তা নিশ্চিত করা। তিনি আরও বলেন, সরকার প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযানের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি, বিনামূল্যে খাদ্য, রেশন ও রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের সুবিধা দিতে সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়েছে।

সরকার রাস্তার হকারদের মতো অসুরক্ষিত শ্রেণীর মানুষের ব্যাপারে অগ্রাধিকার দিয়েছে। এই লক্ষ্যেই সরকার রাস্তার হকারদের সহজে মূলধন যোগান দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী স্বনিধি কর্মসূচি শুরু করেছে বলে শ্রী মোদী উলেখ করেন। রাস্তার হকাররা যাতে মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে তাঁদের জীবিকা পুনরায় শুরু করতে পারেন, তার জন্যই এই কর্মসূচি। শ্রী মোদী জানান, এই প্রথম লক্ষ লক্ষ রাস্তার হকার সরাসরি অর্থ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হতে পেরেছেন।

শ্রী মোদী বলেন, স্বনিধি যোজনার উদ্দেশ্য হ’ল – রাস্তার হকারদের স্বরোজগার, স্বাবলম্বী ও আত্মবিশ্বাসী করে তোলা।

এই কর্মসূচির প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে রাস্তার হকারদের অবগত করার গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কর্মসূচি সহজ ও সরল উপায়ে প্রণয়ন করা হয়েছে। সাধারণ মানুষও এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন। তিনি জানান, যে কোনও ব্যক্তি অভিন্ন পরিষেবা কেন্দ্র বা পুর কার্যালয়ের মাধ্যমে এই কর্মসূচিতে সামিল হতে পারেন। অনলাইনের মাধ্যমে হকারদের আর্থিক অনুদান সংক্রান্ত আবেদনপত্রগুলি আপলোড করার সুবিধার ফলে তাঁদের লাইনে দাঁড়িয়ে আবেদন জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। শুধু তাই নয়, ব্যাঙ্কের বিজনেস করেসপন্ডেন্ট এবং পুর কর্মীরাও রাস্তার হকারদের কাছ থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।

তিনি বলেন, এই কর্মসূচিতে কোনও হকার যদি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ অনুদান পাওয়ার এক বছরের মধ্যেই তা পরিশোধ করতে পারেন, তা হলে ৭ শতাংশ পর্যন্ত সুদ ছাড় পাবেন। এছাড়াও, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে আরও কয়েকটি আর্থিক সুবিধা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে ক্যাশ-ব্যাকের সুবিধা রয়েছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেন করলে মোট সুদের চেয়েও সঞ্চয়ের পরিমাণ বেশি হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৩-৪ বছরে দেশে ডিজিটাল লেনদেন দ্রুতগতিতে বেড়েছে।

এই কর্মসূচি নতুন করে এবং সহজে মূলধনের সুবিধা নিয়ে যে কোনও রাস্তার হকার পুনরায় তাঁর ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। এই প্রথমবার লক্ষ লক্ষ রাস্তার হকারকে প্রকৃত অর্থ ব্যবস্থার সঙ্গে সামিল করা হয়েছে এবং তাঁরা স্বতন্ত্র পরিচিতি পেয়েছেন বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। শ্রী মোদী বলেন, এই কর্মসূচি একজন রাস্তার হকারকে সুদ ছাড়ের ক্ষেত্রে সহায়তা দেবে। কর্মসূচির আওতায় ৭ শতাংশ হারে সুদ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। ব্যাঙ্ক এবং ডিজিটাল মাশুল প্রদান ব্যবস্থার মাধ্যমে সমন্বয় গড়ে তুলে এক নতুন ব্যবস্থার সূচনা হয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ব্যবস্থা চালু হওয়ার ফলে রাস্তার হকারও আর ডিজিটাল লেনদনের ব্যবস্থার বাইরে থাকবেন না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার সময় গ্রাহকরা নগদের পরিবর্তে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থাকে বেশি করে সদ্ব্যবহার করেছে। এই প্রেক্ষিতে তিনি রাস্তার হকারদেরকেও ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেন করার আহ্বান জানান।

শ্রী মোদী বলেন, সরকার রাস্তার হকারদের জন্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে ব্যবসায়িক লেনদেন চালু করার জন্য ওটিটি প্ল্যাটফর্ম শুরু করার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, স্বনিধি কর্মসূচির সুফলভোগীরা উজ্জ্বলা গ্যাস, আয়ুষ্মান ভারত প্রভৃতি কর্মসূচির সুবিধা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পাবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জন ধন যোজনার মাধ্যমে ৪০ কোটিরও বেশি দরিদ্র মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। এমনকি, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সহজেই ঋণের সুবিধা গ্রহণ করতে পারছেন। তিনি সাধারণ মানুষের জন্য ডিজিটাল স্বাস্থ্য মিশন, প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী জীবন জীবিকা যোজনা এবং আয়ুষ্মান ভারতের মতো কর্মসূচি শুরু করার কথা উল্লেখ করেন।

শ্রী মোদী বলেন, দেশে গরিব মানুষের জীবনযাপনের মানোন্নয়নে সরকার গত ৬ বছরে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। শহর ও মহানাগরগুলিতে স্বল্প ভাড়ায় বসবাসের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।

‘এক দেশ, এক রেশন কার্ড’ কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী জানান, এর ফলে যে কোনও ব্যক্তি দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকে সহজেই রেশন সংগ্রহ করতে পারবেন।

আগামী ১ হাজার দিনের মধ্যে ৬ লক্ষ গ্রামে অপ্টিকাল ফাইবারের মাধ্যমে ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কর্মসূচি রূপায়িত হলে গ্রামীণ ভারত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারগুলির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ গড়ে তুলতে পারবে এবং গ্রামীণ মানুষের জীবন-জীবিকায় মানোন্নয়ন ঘটাবে। প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে রাস্তার হকারদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং সমস্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা অবলম্বনের জন্য পরামর্শ দেন। এর ফলে, প্রকৃত পক্ষে তাঁদের ব্যবসায়িক কাজকর্মের প্রসার ঘটবে বলেও প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন।

 

Related posts

কৃষি কাজে আধুনিক প্রযুক্তিঃ স্বস্তি মেশিনারীর পথ চলা শুরু মেমারিতে

E Zero Point

লকডাউন – 5.0 ঘোষণাঃ ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হল লকডাউন

E Zero Point

কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী আজ নতুন দিল্লিতে রাষ্ট্রীয় বাল ভবনের পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন

E Zero Point

মতামত দিন