যুদ্ধে নিহত যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের নিয়ে করা এক পুরনো বিরূপ মন্তব্য সামনে চলে আসায় তোপের মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ নিয়ে দেশটির রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। যদিও ট্রাম্প ও তার মিত্রদের দাবি, প্রেসিডেন্ট এমন মন্তব্য করেননি।
দ্য আটলান্টিক ম্যাগাজিনে প্রথম ট্রাম্পের বেফাঁস মন্তব্যের খবর বের হয়। সেখানে বলা হয়, ২০১৮ সালে প্যারিস সংলগ্ন সমাধিক্ষেত্র সফর বাতিল করেছিলেন ট্রাম্প। সেখানে শায়িত যুদ্ধে নিহত যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘লুজার’ ও ‘সাকারস’ বলে অভিহিত করেছিলেন। দ্য আটলান্টিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, একই সফরের সময় বেলেউ উডে নিহত ১৮০০ সেনাকে ‘সাকারস’ বলে অভিহিত করেন ট্রাম্প।
বার্তা সংস্থা এপি নিরপেক্ষভাবে ট্রাম্পের এমন অনেক বক্তব্য সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পেরেছে। ফক্স নিউজের একজন প্রতিনিধি বলেছেন, এমন কিছু বক্তব্য সংশোধন করেছিলেন তিনি। আটলান্টিক বলছে, ট্রাম্পের সফর বাতিলের কারণ ছিল বৃষ্টি। এই বৃষ্টিতে তার কেশবিন্যাস নষ্ট হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা ছিল তার। নিজের চুলের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যোদ্ধাদের সম্মানকে গুরুত্ব দেওয়ায় বিশ্বাস করেননি তিনি।
ভেটেরান গ্রুপগুলো এই খবর সামনে আসার পর ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা করেছে। এর মধ্যে প্রগ্রেসিভ গ্রুপ ভোটভেটস একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। সেখানে যুদ্ধে নিহত সেনাদের পরিবারের একজন ট্রাম্পের উদ্দেশে বলছেন, ‘আপনি জানেন না। এই ত্যাগের মূল্য কী।’ ইরাক
আফগানিস্তান ভ্যাটেরানস অব আমেরিকা গ্রুপের পল রিকহোফ টুইটারে প্রশ্ন তুলেছেন, এমন বক্তব্যে কে না বিস্মিত হবেন?
ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের কারণে তাকে প্রেসিডেন্ট পদে আনফিট বা অযোগ্য বলে দাবি করেছেন নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, ‘ওই খবর যদি সত্য হয়, দৃশ্যত এটাকে সত্য বলেই মনে হচ্ছে, তাহলে তা চরমভাবে নিন্দার বিষয়। এটা ভয়াবহ হতাশার বিষয়।’
ইরাক যুদ্ধে নিহত এক যোদ্ধার পিতা, বহুল আলোচিত খিজির খান ২০১৬ সালে ডেমোক্র্যাট দলের কনভেনশনে যোগ দিয়ে ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করেছিলেন। তিনি বলেছেন, যখন দেশের জন্য জীবন দানকারীদের ‘লুজার’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, তখন তার ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে আমরা অনুধাবন করতে পারি।
এর আগেও ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী সম্পর্কে বেফাঁস মন্তব্য করে সমালোচনর জন্ম দিয়েছিলেন।