11/12/2024 : 9:53 AM
অন্যান্য

বিশ্বের বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই আমাদের পরিকল্পনা গ্রহন করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

সংবাদসংস্থাঃ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, আজ কোভিড – ১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির  সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতে এই মহামারীর সংক্রমণের  কিভাবে ভৌগলিক  এলাকায় বিস্তার ঘটেছে, এমনকি কোন কোন এলাকায় অত্যধিক সংক্রমণ ঘটেছে, সেসম্পর্ক    আমাদের এখন স্পষ্ট ধারণা তৈরি হয়েছে । সর্বোপরি গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আধিকারিকরা বুঝতে পেরেছেন, যে এই মহামারীর মোকাবিলা এখন জেলাস্তরে করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড – ১৯ এর সংক্রমণ সম্পর্কে এই ধারণা থেকে পরবর্তী লড়াই-এর  দিশা নির্দেশ স্থির  করতে আমাদের সাহায্য করবে। তিনি বলেন, ‘আর তাই এই করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে আমরা আমাদের যুদ্ধের কৌশল এখন স্থির করতে পারবো। আমাদের এখন দ্বিমুখী চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে। একদিকে এই অসুখের সংক্রমণের হার কমাতে হবে আর অন্যদিকে  সমস্ত নির্দেশাবলী মেনে সকলের কাজকর্মের পরিমাণ ক্রমশ বাড়াতে হবে।  এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আমাদের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, গ্রামীণ এলাকায় কোভিড – ১৯ এর সংক্রমণ বন্ধ করতে উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি  বলেন, অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে রাজ্যগুলির পরামর্শকে বিবেচনা করা হবে।

মুখ্যমন্ত্রীরা, কোভিড – ১৯ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বদানের প্রশংসা করেন এবং দেশের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা পরিকাঠামো বৃদ্ধির ওপর জোর দেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই বলেন, পরিযায়ীদের ঘরে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক ব্যবহার করা এবং সংক্রমণ প্রতিহত করার বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে হবে। যার ফলে গ্রামীণ এলাকা সহ সর্বত্র নতুন করে সংক্রমণ আটকানো নিশ্চিত করা যাবে।

বিদেশে আটকে থাকা ভারতীয়রা দেশে ফিরলে বাধ্যতামূলক কোয়ারান্টাইনে থাকার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীরা অর্থনীতির বিষয়ে তাঁদের পরামর্শ দিয়েছেন। অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ, বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের মতো পরিকাঠামো ক্ষেত্রগুলিতে সাহায্যের প্রস্তাবের পাশাপাশি ঋণের সুদের হার সহজ করা এবং কৃষিপণ্যের নিশ্চিতভাবে বাজারজাত করার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী, কোভিড – ১৯ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীদের সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, তাঁদের তৃণমূল স্তরের অভিজ্ঞতার কারণেই তাঁরা মূল্যবান মতামত আদান – প্রদান করতে পারছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের বুঝতে হবে, কোভিড – ১৯ পরবর্তী সময় বিশ্বের মূল বিষয়ে পরিবর্তন হয়েছে। এখন বিশ্বযুদ্ধের মতো প্রাক-করোনা এবং করোনা পরবর্তী সময় চিহ্নিত হবে। আর এর মাধ্যমে আমাদের কাজের ধারারও তাৎপর্যপূর্ণভাবে পরিবর্তন আসবে।“

তিনি বলেন, জীবনের নতুন ধারা এখন ‘জন সে লে কার জগ তক’ নীতিতে চলবে। অর্থাৎ একজন ব্যক্তিবিশেষ থেকে কোন কিছু শুরু হয়ে সমস্ত মানব জাতি পর্যন্ত তা  ছড়িয়ে দেবার  নীতিতে জীবন চলবে।

শ্রী মোদী বলেন, নতুন বাস্তবতার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে।  প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন আমরা পর্যায়ক্রমে লকডাউন প্রত্যাহার করার কথা ভাবছি, একই সঙ্গে আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা এখনও কোনো টীকা বা অন্য সমাধান  খুঁজে পাই নি। এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সামাজিক দূরত্বই আমাদের এখন বড় হাতিয়ার।’

প্রধানমন্ত্রী আবারও ‘দো গজ কি দূরী’ নীতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন মুখ্যমন্ত্রী, রাত্রিকালীন কারফিউয়ের যে পরামর্শ দিয়েছেন, তার থেকে জনসাধারণের মধ্যে সতর্ক থাকার প্রবণতাই প্রতিফলিত হচ্ছে।

সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীদের কাছে তিনি এই লকডাউনের বিষয়ে নির্দিষ্ট করে তাঁদের মতামত জানানোর অনুরোধ জানান।

শ্রী মোদী  সকলকে  আগামী ১৫ই মে-র মধ্যে একটি বিস্তারিত নীতিকৌশল  জানাতে বলেছেন, যেখানে রাজ্যগুলি লকডাউনের সময় কিভাবে কাজ করবে, সেবিষয়ে একটি ধারণা পাওয়া যাবে। লকডাউনের সময় এবং পরবর্তী পর্যায়ে তা ধীরে ধীরে শিথিল করার সময়, রাজ্যগুলি কিভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করবে, সেবিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সামনে যে সব চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলা করার জন্য একটি সর্বাত্মক প্রয়াস নিতে হবে। বর্ষার আগে কোভিড – ১৯ ছাড়াও অন্য অনেক রকমের অসুখ সামনে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে আমাদের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরিষেবাকে আরো জোরদার করতে হবে।“

নীতি নির্ধারকদের তিনি শিক্ষাক্ষেত্রে লেখাপড়ার কৌশলের জন্য নতুন মডেল নিয়ে ভাবনা – চিন্তা করতে বলেন।

পর্যটন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ পর্যটনের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। এখন আমাদের এবিষয়ে ভাবনা – চিন্তা করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, প্রথম পর্যায়ের লকডাউনে যেসব  ব্যবস্থা  নেওয়া হয়েছিল, দ্বিতীয় পর্যায়ে সেগুলির প্রয়োজন নেই। একইভাবে তৃতীয় পর্যায়ের গৃহীত ব্যবস্থাগুলি চতুর্থ পর্যায়ে কোনো প্রয়োজন নেই।’

ট্রেন পরিষেবা আবারও চালু করার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক কাজকর্ম শুরু করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। কিন্তু এখনই সব রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হবে না। আপাতত নির্দিষ্ট সংখ্যক কিছু ট্রেন চলবে।

প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, সর্বাত্মকভাবে ভারত, কোভিড – ১৯ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভ করবে এবং কোনো রাজ্যই এই পরিস্থিতিতে পিছিয়ে থাকবে না।

তিনি বলেন, কোভিড পরবর্তী সময়ে ভারতের  প্রভাবশালী হয়ে ওঠার একটি সুযোগ তৈরি হবে। (পিআইবি)

Related posts

লকডাউনের জেরে অনাহারে মারা যেতে পারে ৩ কোটি মানুষ

E Zero Point

মেমারি শ্রীকৃষ্ণানন্দ মিশনে বাসন্তী পূজা ও কুমারী পূজা

E Zero Point

আগামী ২১ তারিখ থেকে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে বেসরকারী বাস চলার সম্ভাবনা নেই

E Zero Point

মতামত দিন