29/03/2024 : 11:20 AM
আমার বাংলাদক্ষিণ বঙ্গপূর্ব বর্ধমানমেমারি

‘পরশপাথর’-এর ছোঁয়ায় প্রাণ ফিরে পেল ভবিষ্যৎ প্রজন্ম

প্রেরণা দেঃ স্বপ্ন একটা কিছু করে দেখানোর। সমাজগঠনের প্রক্রিয়াতে একটু হাত লাগানো। একই পৃথিবীর বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও কিছু মানুষ এখন বঞ্চিত। কোন না কোন ভাবে বিভিন্ন মানুষ একক ভাবে কিংবা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে সেই সকল মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে।

মেমারি শহর থেকে কিছুটা দূরে কোলসরা গ্রাম। আর সেই গ্রামের এক চাষী সুজিত দলুই। যার জমির ফসল মানুষের পেটের ক্ষিদে মেটাতে সাহায্য করে, ঠিক তেমনই তার মনের জমিতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কিছু করার অদম্য ইচ্ছার বীজ অঙ্কুরিত হয়।

সুজিত দলুই-এর সাথে কথা বলে জানা গেল যে, করোনার প্রভাবে লকডাউনের জন্য মাস তিনেক হল সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। অতিনিম্নবিত্ত এলাকায় স্কুল বন্ধ মানে দুটো প্রধান সমস্যা, এক, স্কুলের সাথে সংযোগ হারিয়ে এলাকার কচিকাঁচাগুলোর পড়াশোনার অভ্যেস নষ্ট হয়ে যায়। দুই, মিড-ডে মিল থেকে দৈনন্দিন যে পুষ্টিকর খাবার পেত সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। রাজ্য সরকার দ্বিতীয় সমস্যার সাময়িক সমাধান করলেও। সুজিত দলুই প্রথম সমস্যাটার সমাধান করার চেষ্টা করেছে। নিজের একতলা বাড়ির ছাদে গ্রামের অতি দুঃস্থ ছেলেমেয়েদের পড়িয়ে চলেছে গত তিনমাস ধরে। অনেককিছু ইচ্ছা থাকলেও অর্থ এক্ষেত্রেও অন্তরায়। খুদে পড়ুয়াদের কারোর খাতা নেই, কারোর পেনসিল নেই, কারোর ব্যাগ নেই তো কারোর পরণের একমাত্র জামাটাও শতচ্ছিন্ন। সুজিত দলুই সীমিত সাধ্যের মধ্যে চেষ্টা করে তাদের প্রয়োজন মেটানোর।

কথায় আছে সমস্যা যেমন থাকে তার সমাধানও থাকে। ঠিক সেই সময় মেমারি শহরের বুকে জন্ম নিয়েছে ‘পরশপাথর’।  বেশ কিছু মনের মণিকোঠায় জমে থাকা ইচ্ছার সমষ্টিগত রুপ। সুজিত দলুই-এর সেই অঙ্কুরিত স্বপ্নে জল সিঞ্চন করতে এগিয়ে এলো মেমারি শহরের বেশ কিছু যুবক।

সদ্যজাত সংস্থা পরশপাথর-এর পক্ষ থেকে গত ২০ জুন প্রাথমিক ভাবে প্রত্যেক খুদে পড়ুয়ার হাতে খাতা, পেন, পেনসিল তুলে দেওয়া হল। সংস্থার পক্ষ থেকে উক্ত শিক্ষণসামগ্রী প্রদানে উপস্থিত ছিলেন দিলীপ চক্রবর্তী, অপূর্ব কুমার সু, অর্ক পাল।

‘পরশপাথর’-এর পক্ষ থেকে শিক্ষক অপূর্ব কুমার সু জানান যে, প্রয়োজন অনেকটাই। পড়ুয়াদের ব্যাগ, বসবার জন্য মাদুর বা শতরঞ্জি, রোদ-জল এড়াতে ত্রিপল এগুলি প্রয়োজন। এরসাথে প্রয়োজন খাবার- প্যাকেটজাত শুকনো পুষ্টিকর খাবার ও দুধ। আমরা চেষ্টা করেছে যে ক্ষুদে মনের মধ্যে একটা সু্প্ত স্বপ্ন অঙ্কুরিত হয়েছে, তা সকল মানুষের সহযোগিতায় বটবৃক্ষে পরিণত হোক।

মেমারি শহরের যুব সংগঠক ও বিভিন্ন সামাজিক কাজে লিপ্ত অর্ক পাল জানান যে, আমরা মেমারিবাসী এই বাচ্চাগুলোর সাহায্যার্থে এগিয়ে এলে সুজিত দলুই-এর এই প্রচেষ্টা অনেকটাই অক্সিজেন পাবে। আপনি ‘পরশপাথর’- এর মাধ্যমে সহযোগিতা করতে পারেন অথবা নিজে গিয়ে দিয়ে আসতে পারেন আপনার পরশপাথরটি – যার  ছোঁয়ায় প্রাণ ফিরে পাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।

 

Related posts

অসহায় টিবি রোগীদের দত্তক গ্রহন বর্ধমানে

E Zero Point

রায়নায় খুন তৃণমূল কর্মী, অভিযোগ বিজেপির দিকে

E Zero Point

এসএসসির ৩০ হাজার শিক্ষক নিয়োগে বৈধতা দিয়ে মামলাকারীদের পিটিশন খারিজ 

E Zero Point

মতামত দিন