26/04/2024 : 9:43 AM
আমার বাংলাকলকাতাদক্ষিণ বঙ্গপূর্ব বর্ধমান

সিআইডি কে নিয়ে নিখোঁজ বধূর সন্ধান দিতে কেতুগ্রাম থানা কে নির্দেশ

জিরো পয়েন্ট নিউজ, মোল্লা জসিমউদ্দিন, কলকাতা, ১৫ অগাষ্ট, ২০২০:


পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া সংলগ্ন কেতুগ্রাম থেকে সাড়ে তিন মাসের বেশি সময়কাল ধরে নিখোঁজ এক গৃহবধূ। নিখোঁজের মা সংশ্লিষ্ট অর্থাৎ কেতুগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ নিয়ে গেলেও গুরত্বপূর্ণ বিষয় হলেও  সেটি প্রথমে সাধারণ ডাইরি হিসাবে নথিভুক্ত করে  কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। জিডি গ্রহণের ১৭ দিন পর অবশ্য এফআইআর রুজু করে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম পুলিশ। অভিযুক্তদের বড় অংশ অর্থাৎ তিনজন কে গ্রেপ্তারও করে। তবে নিখোঁজের সন্ধানে কোন তদন্তের দিশা দেখাতে পারেনি স্থানীয় থানার পুলিশ ।  অভিযোগকারী মায়ের আশংকা – ‘তার মেয়ে কে হয়তো মেরে বাড়ি সংলগ্ন নদীতে কোথাও পুতে দিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ‘। তাই কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী দীপেন্দু নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আরেক আইনজীবী দীপঙ্কর পালের হাত ধরে চলতি সপ্তাহে পুলিশি নিস্ক্রিয়তা নিয়ে রিট পিটিশন দাখিল করেন নিখোঁজ বধূর মা জয়ন্তী হালদার। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে এই মামলার ভার্চুয়াল শুনানি চলে। সেখানে বিচারপতি উভয়পক্ষের অনলাইন সওয়াল-জবাব শুনে পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার পুলিশ কে সিআইডির সাহায্য নিয়ে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট যেন ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই পেশ করা হয় তার নির্দেশিকা রয়েছে আদেশনামায়। উল্লেখ্য, এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর। গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের ভার্চুয়াল শুনানিতে সরকার পক্ষের আইনজীবী অবশ্য দাবি করেন –  নিখোঁজের পুত্র সন্তান পুলিশের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে তার মায়ের মানসিক অসুস্থতার কথা জানিয়েছে’। তবে নিখোঁজের মা তথা এই মামলার অভিযোগকারী অবশ্য সংবাদমাধ্যম কে জানিয়েছেন – ‘ তার মেয়ে কোনদিনই পাগল ছিল না। তার দুই নাতি অভিযুক্তদের অর্থাৎ মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে থাকে তাই পুলিশের একাংশের সাথে যোগসাজশ করে এখন নিখোঁজ মেয়ের ব্যাপারে পাগল তকমা দিতে চাইছে ‘। তার প্রশ্ন – ‘মেয়ের বিবাহ হয়েছে ১৮ বছর আগে, তাই মানসিক রোগী ( পাগল)  হলে সরকারি কিংবা বেসরকারি হাসপাতালে কোন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছে ধারাবাহিক চিকিৎসা করাতো তার প্রমাণ দিক ‘। অভিযোগকারীর আইনজীবী দীপেন্দু নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও দীপঙ্কর পাল জানান –  , “মুর্শিদাবাদ জেলার শক্তিপুর থানা এলাকার জয়ন্তী হালদারের মেয়ে শান্তনা হালদারের সাথে পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার বিষ্ণপুর গ্রামের নিখিল হালদারের সাথে বিবাহ হয়েছিল ১৮ বছর আগে । বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন বধূটির উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতো। চলতি বছরের গত ২৮ এপ্রিল দুপুর থেকেই বাড়ী থেকে নিখোঁজ হন শান্তনা হালদার (৩৬)। কেতুগ্রাম থানায় নিখোঁজের অভিযোগ নিয়ে যাওয়া হলে পুলিশ অজ্ঞাত কারণে নিস্ক্রিয়তা দেখায়”।  এফআইআর  না রুজু করে সাধারণ ডাইরি হিসাবে নথিভুক্ত করা হয় এহেন গুরত্বপূর্ণ অভিযোগ। যদিও জিডি গ্রহণের ১৭ দিন পর কেতুগ্রাম থানার   পুলিশ এটি কে ৪৯৮ এ, ৩৬৩, ৩৬৫ এবং ১২০ বি ধারায় এফআইআর করে নিখোঁজের স্বামী, শ্বশুর ও ভাসুর কে গ্রেপ্তার করে নিজেদের হেফাজতে নেয়। তবে পরবর্তীতে  অভিযুক্তরা ব্যক্তিগত বন্ডে কাটোয়া মহকুমা আদালত থেকে জামিন পায়।প্রায় সাড়ে তিন মাস অতিক্রান্ত হলেও নিখোঁজ বধূর কোন সন্ধান মেলেনি। উল্টে অভিযুক্তদের বাড়িতে থাকা নিখোঁজের পুত্রের জবানবন্দিতে বধূর মানসিক অসুস্থতার বিষয়টি সামনে আনা হয় পুলিশের তরফে। মামলাকারীর আশংকা – তার মেয়ে কে নদীর উপকূলে থাকা শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেরে ফেলে কোথাও বালির চরে পুতে ফেলেছে। পুলিশি নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে রিট পিটিশন দাখিল করেন নিখোঁজ বধূর মা। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে এই মামলার ভার্চুয়াল শুনানি চলে। সেখানে বিচারপতি নিখোঁজ বধূর মামলার তদন্ত প্রক্রিয়ায় সিআইডির সহযোগিতা নিয়ে আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুলিশ কে রিপোর্ট দাখিল করতে নির্দেশ দেন। পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত জেলা ও পুলিশ সুপার ধ্রুব দাস বলেন ” উচ্চ আদালতের নির্দেশ  এখনো আমরা পাইনি। তবে উচ্চ আদালত যে নির্দেশ দিয়েছে তা   মেনে আমরা এই মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া দ্রুত চালাবো “।

Related posts

গঙ্গাসাগর মেলা ২০২১ – মেলা থেকে বেলাতটে

E Zero Point

বর্ধমান শহরে আবার বাড়লো করোনা আক্রান্তের সংখ্যা

E Zero Point

মৎস্য চাষের উপকরণ বিতরণ মেমারিতে

E Zero Point

মতামত দিন