17/04/2024 : 8:48 AM
আমার বাংলাদক্ষিণ বঙ্গপূর্ব বর্ধমানমেমারি

মেমারি থেকে ঘোরামারা দ্বীপ, প্রয়াসের মানবিক প্রচেষ্টা

জিরো পয়েন্ট নিউজ , অজয় সাহানি, মেমারি, ৪ জুন ২০২১:


গত বছর করোনার মাঝেই আমফান আর এছর করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ইয়াস। দক্ষিন ২৪ পরগণার উপকূলবর্তী বিভিন্ন গ্রামের অবস্থা খুবই সঙ্কটজনক। জেলার মধ্যে আলোচনায় থাকা কিছু বড় শহর গুলি বাদ দিলে বাকি কিছু অনুন্নত শহর, গ্রাম, মফস্বল এলাকা গুলিও যে অস্তিত্ব রাখে তা আমরা ভুলে যায় বললেই চলে। একপ্রকার ছিটকে যাওয়া সমাজ। একই দেশ, একই রাজ্য অথচ সম্পূর্ন দুটি আলাদা জগৎ। তাদের ক্ষয়ক্ষতিতে আলোকপাত হয় না বিশেষ, প্রশাসনের নজর এড়িয়ে চলে যায় সমস্যা।

এমনই একটা জায়গার নাম হচ্ছে  ঘোরামারা দ্বীপ। কাকদ্বীপ থেকে নৌকায় করে প্রায় ৪০ মিনিট সমুদ্রের পথ পেরিয়ে যেতে হয় এই দ্বীপে। প্রসঙ্গত, যাওয়ার জটিলতার কারণে অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও এড়িয়ে গেছে। সরকারের সাহায্য পৌঁছালেও অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অভাবে দিন কাটছে অসহায় মানুষ গুলির। বাড়ি ঘর ঝড়ে উড়ে গেছে, বহু বাড়ি জলের তলায়। বাড়ির প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, জামাকাপড় নষ্ট হয়ে গিয়েছে জলে। দ্বীপে একটি মাত্র প্রাথমিক ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। প্রায় ২৫০ টি পরিবার। বিদ্যুতের সংযোগ নেই। ডাক্তার খানা রয়েছে একটি যা এখন জলমগ্ন।

গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই পান চাষ এবং মাছ শিকার করে জীবনযাপন করে। জলে ঝড়ে সমস্ত কিছু ছারখার হয়ে গেছে এই দ্বীপের। কাজেই খাদ্য সামগ্রী, মেডিসিন, পানীয় জল, জামাকাপড় প্রভৃতি বিভিন্ন জিনিসের জন্য লড়াই করে যাচ্ছে দ্বীপবাসী। অন্যান্য দ্বীপগুলিতে যে পরিমাণ সাহায্য পৌঁছেছে, এখানে তার অর্ধেকও আসেনি। সাহায্যের জন্য কেউ আসবে এই আশায় দিন কাটে মানুষগুলোর।

এক বিশেষ সূত্রে জানা যায় প্রশাসনের কাছে এই খবর ছিল যে, ঘোরামারা দ্বীপের সমস্ত বাসিন্দাদের ঝড় আসার আগেই সুরক্ষিত স্থানে রাখা হয়েছে কিন্তু স্থানীয়দের কাছে জানা যায় প্রশাসন সেরকম কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ঝড় পরবর্তী সময়ে প্রশাসন থেকে জলের পাউচ ও খাদ্যসামগ্রী পাঠানো হলেও তা পর্যাপ্ত নয়।

পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের আঝাপুরের বাসিন্দা রেশমি সুলতানার মাধ্যমে মেমারি শহরের অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা টিম প্রয়াস খোঁজ পায় এই অবহেলিত দ্বীপের মানুষদের দূর্দশার ব্যাপারে। উনার স্বামীর বন্ধু সেক সাইবুল ঘোরামরা দ্বীপের বাসিন্দা। সেই সূত্রে জানতে পারি সমস্ত কিছু। সব জানার পর “মেমারি প্রয়াস এডুকেয়ার ফাউন্ডেশন” সিদ্ধান্ত নেয় এই মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানোর। খুব কম সময়ে যতটা পারা যায় সেই পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী জোগাড় করে টিম প্রয়াস  ৩ জুন বৃহস্পতিবার ভোর বেলা টিম প্রয়াসের পক্ষ থেকে মহঃ বসির শেখ, অঙ্কুর ঘোষ, দীপ্ত পাল, ভরত পাসওয়ান, অর্ঘ্য বসু, রেশমি সুলতানা, নাজমুল হোসেন মন্ডল ও বাদল রায় রওনা দেয় ঘোরামরা দ্বীপের উদ্দেশ্যে মানুষের পাশে থাকার প্রচেষ্টা নিয়ে।

যতটা আশঙ্কা করা হয়েছিল তার থেকেও অনেক খারাপ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে এরা। ছারখার করে দিয়েছে ইয়াস। ত্রিপল খাটিয়ে, কিংবা ভাঙা ঘরের মধ্যে কোনোপ্রকার মাথা গুঁজে আছে। আস্তানা পেলেও ক্ষিদের জ্বালায় কাতরাচ্ছে। অনেক পরিমান সাহায্যের প্রয়োজন এখনো।

সংস্থার পক্ষ থেকে মানস রায় জানান যে,  ঘোরামরা দ্বীপের বাসিন্দাদের অনুরোধে টিম প্রয়াস আর একবার ত্রাণ সামগ্রী সহ এই দ্বীপের মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জিরো পয়েন্টেপ মাধ্যমে  সাহায্যের অনুরোধ জানাচ্ছে প্রয়াস। তিনি আরও বলেন এই অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ান, মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়ান। এদের প্রচুর পরিমান সাহায্যের প্রয়োজন। আপনারা সাহায্য পাঠাতে পারেন প্রয়াসের ইয়াস রিলিফ ফান্ডে। কিংবা খাদ্য সামগ্রী, ওষুধ এবং অন্যান্য জিনিস এর সাহায্যও পাঠাতে পারেন প্রয়াসের মাধ্যমে।

 

Related posts

পূর্ব বর্ধমানের ৮ বিধানসভায় ভোট, ১৫৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী

E Zero Point

মেমারি থানার বড়পলাশনে আবার করোনা পজিটিভ

E Zero Point

সরকারী প্রকল্পের প্রচারাভিযান পূর্বস্থলীতে

E Zero Point

মতামত দিন