জিরো পয়েন্ট নিউজ, হাওড়া, ১ অক্টোবর ২০২১:
অনবরত বৃষ্টির জেরে মাটির ঠাকুর শুকোতে লাগছে দীর্ঘ সময়। ফলে অর্ডার থাকা সত্ত্বেও কাজ এগোচ্ছে না কিছুই। আবার হাতেও সময় কম।
দুর্গা পূজোর বাকি আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকটা দিন। পুজোর কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। চারিদিকেই এখন শুধুই পুজোর গন্ধ। আর এর মধ্যেই কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে শুরু হয়েছে প্রবল বৃষ্টিপাত।
গত কয়েকদিন থেকেই একটানা বৃষ্টির জেরে রাজ্য-সহ কলকাতার জনজীবন পুরোপুরি বিপর্যস্ত। অবিরাম হয়ে চলছে বৃষ্টি। আগামী সপ্তাহেও বাংলার আকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা। জল জমেছে উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায়। জল থৈ থৈ করছে আন্দুলের প্রতিমা শিল্পীদের বাড়িতেও। ওই জলের মধ্যে দাঁড়িয়েই চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। জোলো আবহাওয়ার জন্য শুকোচ্ছে না প্রতিমার গায়ে লাগানো মাটি। তৈরি হয়ে যাওয়া দুর্গা প্রতিমা যাতে জলে গলে না যায় তা নিয়ে আন্দুলের প্রতিমা শিল্পীরাও বেশ দুর্ভোগে পড়েছেন।
অনবরত বৃষ্টির জেরে মাটির ঠাকুর শুকোতে লাগছে দীর্ঘ সময়। ফলে অর্ডার থাকা সত্ত্বেও কাজ এগোচ্ছে না কিছুই। আবার হাতেও সময় কম। তার মধ্যে রাস্তায় জমে থাকার ফলে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদিও কিনতে যেতে সময় লাগছে। এদিকে একটানা বৃষ্টিতে নষ্টও হয়ে গিয়েছে বেশ অনেক তৈরী প্রতিমাও। ত্রিপল দিয়ে ঢেকেও বাঁচানো যায়নি। এই পরিস্থিতিতে মাথায় হাত প্রতিমা শিল্পীদের। লোকসানের চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে তাদের। গত পরশু থেকে ভারী বৃষ্টির যে পুর্বাভাস দিয়েছিল আলিপুর হাওয়া অফিস। সেই মতোই একটানা বৃষ্টি শুরু হয়েছে গতকাল থেকে। তাই এবারে কী হবে তা জানেন না অনেকেই। সময় মতো ডেলিভারি কি সম্ভব? উত্তর জানা নেই শিল্পীদেরও।
প্রবল বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে প্রতিমা। এভাবে বৃষ্টি চলতে থাকলে পুজোর অর্ডারেরে কাজ সম্পূর্ণ করতে আরও বেশি সময় লাগবে। শম্ভুনাথ মন্ডল নামের প্রতিমা শিল্পী, জানিয়েছেন, প্রবল বৃষ্টিতে, জল কাদায় ঠাকুর তৈরির কাজে ক্ষতি হচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে পুজোর পরিস্থিতি কী হতে চলেছে তা ভেবেই আশঙ্কায় রয়েছেন শিল্পীরা। করোনা কালে এমনিতেই বাজার মন্দা, তার উপর অবিরাম বৃষ্টি তাদের ব্যবসায় থাবা বসিয়েছে।
এখান থেকে দুর্গা প্রতিমা প্রায় প্রতি বছরই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যায়। কিন্তু একটানা বৃষ্টির জেরে কাজ একদমই এগোচ্ছে না। কিন্তু বৃষ্টির উপদ্রবে পরিস্থিতি এখন ইচ্ছের বিপরিতেই চলছে। তাই মন ভাল নেই এখানের শিল্পীদের। মাটির দাম প্রায় দ্বিগুণ, বাজার আগুন! অথচ সব সামগ্রী তাদের নগদ পয়সা দিয়েই কিনতে হয়। অথচ পুজোর উদ্যোক্তারা আগাম বায়না টুকুই শুধু দিয়ে যায়। তাই প্রতিমা তৈরির সব খরচ সামলে কী করে সংসার চলবে সেটাই ভাবাচ্ছে এখানকার শিল্পীদের।
রাজ্যে অন্যসময় বৃষ্টির দাপট থাকলেও এতটা চিন্তা হয় না। বৃষ্টি প্রকৃতির উপহার স্বরূপ। কিন্তু ক্যালেন্ডারের পাতায় এখন শুধুই পুজোর গন্ধ। এদিকে একটানা মুষলধারে বৃষ্টিতে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পুজোর কাজ এগোচ্ছে না। তাই দুশ্চিন্তা বাড়ছে আন্দুলের শিল্পীদের। বড় ঠাকুরের সেভাবে চাহিদা নেই। প্রতিমা তৈরির জায়গাতেও জমে আছে জল। তার উুপর প্রবল বৃষ্টিতে ত্রিপল টাঙিয়েও বৃষ্টির হাত থেকে ঠাকুর বাঁচাতে না পারার আক্ষেপ তিলে তিলে গ্রাস করেছে আন্দুলের প্রশস্ত প্রতিমা শিল্পীদের।
আপনার এলাকার দুর্গাপুজোর যেকোন খবর প্রকাশের জন্যযোগাযোগ করুন 9375434824 / 9609529471