28/03/2024 : 6:35 PM
আমার বাংলাদক্ষিণ বঙ্গপূর্ব বর্ধমানমেমারি

মৃত্যু শংসাপত্রে ভুল, বিতর্ক মেমারিতে

জিরো পয়েন্ট নিউজ ডেস্ক, মেমারি, ৩ ডিসেম্বর ২০২২:


পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি ১ পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত দলুইবাজার ২পঞ্চায়েত থেকে ইস্যু করা মৃত্যু শংসাপত্রকে ঘিরে বির্তক তৈরি হয়েছে। দলুইবাজার ২ পঞ্চায়েত প্রধান ঝুমা কোঁড়ার স্বাক্ষরিত এই মৃত্যু শংসাপত্রে ভুল হয়েছে বলে পরিবারের দাবী – আর সে ভুল একবার নয়, দু-দুবার।

২৫ নভেম্বর সকালে পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি কলানবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা দিলীপকুমার চক্রবর্তী নাড়া পোড়ানোর সময় জমিতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল বলে মেমারি থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়। পুলিশ মৃত ব্যক্তির দেহ জমি থেকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন ময়না তদন্তের জন্য। পরিবারের লোকজন মৃত ব্যক্তির সৎকারের জন্য স্থানীয় দলুইবাজার ২পঞ্চায়েতের কাছে শংসাপত্র সংগ্রহ করেছিলেন আর বির্তক সেখানেই।

মৃত্যু শংসাপত্রে পঞ্চায়েত প্রধানের সাক্ষর করা থাকলেও শংসাপত্রে মৃত ব্যক্তি দিলীপকুমার চক্রবর্তীর মৃত্যুর কারণ দেখানো হয়েছে ‘কার্ডিও রেসপিরেটরি ফেলিওর’। এছাড়াও মৃত্যুর স্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে দিলীপ বাবুর নিজ বাসভবন।

যদিও পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দিলীপকুমার চক্রবর্তী সেদিন জমিতে নাড়া পোড়ানোর সময় সেই আগুন তার পাশের জমিতে জড়ো করা কাটা ধানের গাদায় ছড়িয়ে পরার কারণে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ায় মাঠেই সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েছিলেন। আর তারপর সেই আগুন দিলীপ বাবুর শরীরে লেগে গেলে তিনি জমির মধ্যেই দগ্ধ হয়ে যান।

স্বাভাবিকভাবেই ২৯ নভেম্বর দলুইবাজার ২ পঞ্চায়েতর দেওয়া সেই মৃত্যু শংসাপত্র কে নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। দিলীপকুমার চক্রবর্তীর বড় জামাই কাঞ্চন বাগচী বলেন, ‘ পঞ্চায়েত থেকে প্রধানের সাক্ষর করা দাহকার্যের জন্য দেওয়া শংসাপত্রে মৃত্যুর কারণ ও স্থান নিয়ে আমাদের আপত্তি ছিল। কারণ দিলীপকুমার চক্রবর্তীর মৃত্যু তাঁর বাড়িতে হয়নি এবং জমিতে যাওয়ার পর তাঁর শারীরিক ঠিক কি সমস্যা হয়েছিল, কেনই বা আগুন লাগার পর তিনি জমি থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেন না, তারও সঠিক কারণ কোনো চিকিৎসক এখনও আমাদের জানান নি। তারপরেও পঞ্চায়েতের মৃত্যু শংসাপত্রে শ্বশুর মশাইয়ের মৃত্যুর কারণ কার্ডিয়াক ফেলিওর দেখানো হয়েছে। আমরা পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওনারা বিষয়টি বুঝতে পেরে সেটির সংশোধন করে দেবেন বলে জানায়।  শুক্রবার (২ ডিসেম্বর)  সেই মৃত্যু শংসাপত্র নতুন করে আমার হাতে তুলে দেয়।’ কিন্তু এবারেও সেখানে রয়ে গেছে ভুল। আর এই নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

এদিকে দলুইবাজার-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ঝুমা কোঁড়ার সাথে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভুল স্বীকার করে বলেন, “টেকনিক্যাল ভুল হয়েছে। অনেক সময় আমাদের কম্পিউটারে রেডি করে রাখা শংসাপত্রের নাম ঠিকানা পাল্টে তাড়াতাড়ি পরিবারের লোকেদের হাত তুলে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে তাড়াহুড়ার জন্যই হয়তো কিছু ভুল হয়ে গেছে। আমরা তা সংশোধন করে নতুন শংসাপত্র দিচ্ছি।”

কিন্তু শুক্রবার মৃতের পরিজনদের ডেকে নতুন ২ ডিসেম্বর মৃত্যু শংসাপত্রও দেন প্রধান ঝুমা কোঁড়া। কিন্তু ফের ভুল থেকে গেছে শংসাপত্রে। নতুন শংসাপত্রে মৃত্যুর কারণটা না লিখলেও তাতে উল্লেখ করা হয়েছে নিজ বাসভবনে মারা গিয়েছেন বলে।

এব্যপারে মেমারি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সেখ মোয়াজ্জেম জানান, আমরা শুনেছি পোস্টমর্টেম রিপোর্টে মৃত ব্যক্তির স্ট্রোক হয়েছিল বলা হয়েছে। মেমারি থানার পুলিশ  দিলীপকুমার চক্রবর্তীর জলন্ত দেহ জমি থেকে উদ্ধার করেছিল। দলুইবাজার ২ পঞ্চায়েত থেকে ইস্যু করা মৃত্যু শংসাপত্রে যদি দু-দুবার ভুল হয়ে থাকে, তা কেন হলো সে ব্যপারে মেমারি ১ পঞ্চায়েত সমিতি থেকে খতিয়ে দেখা হবে।

দিলীপকুমার চক্রবর্তী মাঠের জমিতে নাড়া পোড়াতে গিয়ে যিনি মারা গেলেন, সেই জমি থেকে মেমারি থানার পুলিশ যার দেহ উদ্ধার করলো, তিনি কীভাবে নিজ বাসভবনে মারা গেলেন? স্বাভাবিকভাবেই দলুইবাজার ২ পঞ্চায়েত প্রধান ঝুমা কোঁড়ার স্বাক্ষরিতদু দুবারের এই শংসাপত্র ঘিরে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।

Related posts

ওরা চায় মাথা তুলে বাঁচতেঃ প্যারাটিচার সুবিচারের আশায় প্রতীক্ষমান

E Zero Point

সিঙ্গুরে আমফানের ক্ষতি পূরণের সাহায্য চাইতে গিয়ে এক মহিলাকে ধর্ষণ, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

E Zero Point

বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শনাক্তকরণ শিবির

E Zero Point

মতামত দিন