16/04/2024 : 11:49 PM
আমার বাংলাকালনাদক্ষিণ বঙ্গপূর্ব বর্ধমান

প্রথমে খুন তার পর যৌন নির্যাতন, কালনার কুখ্যাত চেনকিলারের ফাঁসির সাজা শোনাল আদালত

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালনাঃ খুনের পর যৌন নির্যাতনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত পূর্ব বর্ধমানের কালনার চেন কিলার কামারুজ্জামান সরকারকে ফাঁসির সাজা দিল কালনা আদালত। সোমবার কালনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক তপনকুমার মণ্ডল খুনি কামরুজ্জামানের সাজা ঘোষণা করেন। এই রায়ে খুশি নির্যাতিতা ও মৃতদের পরিবারের সদস্যরা।

একসময় কলকাতায় স্টোনম্যানের আতঙ্ক ঘুম উড়েছিল ফুটবাথবাসীদের। একই কায়দায় কয়েকবছর ধরে পূর্ব বর্ধমানজেলার কালনা সহ সংলগ্ন বলাগড়,  পাণ্ডুয়া, মেমারি, মন্তেশ্বর প্রভৃতি থানাতে ১৩ টি অপরাধের ঘটনা ঘটিয়েছিল। তবে খুনের ধরণটা ছিল একটু আলাদা। মহিলা সদস্য বাড়িতে একা রয়েছেন সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়েই বিদ্যুতের মিটার দেখার অছিলায় গৃহস্থ বাড়িতে ঢুকত অভিযুক্ত। মুহূর্তে চেন দিয়ে পেঁচিয়ে খুন করত মহিলাদের। এরপর দেহের সঙ্গে মেতে উঠত যৌনতায়। একের পর এহেন ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছিল পুলিশ। অভিযুক্ত কামরুজ্জামান নিজের মুখেই সব ঘটনার কথা স্বীকার করে। পূর্বে ২০১৩ সালে আরো তিনটি অপরাধ ঘটানোর  কথাও সে কবুল করে।  নাদনঘাট থানার নসরতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত  চর-গোয়ালপাড়ার বাসিন্দা কামারুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের পর থেকেই সে জেল হেফাজতে রয়েছে।  সেখান থেকেই বিভিন্ন  ঘটনার তদন্ত ও  ছাত্রী খুনের মামলার শুনানি চলছিল।  শুনানি শেষে ছাত্রী হত্যা মামলায় গত ২ জুলাই বৃহস্পতিবার কামরুজ্জামান দোষী সাব্যস্ত হয় এবং আজ তার ফাঁসির সাজা দিল কালনা আদালত।

কালনার চেনকিলার বলে কুখ্যাত হয়ে ওঠা কামারুজ্জামান সরকারের শেষ শিকার ছিল সোমা সিং নামের এক দশম শ্রেণীর ছাত্রী।   কালনা থানার সিঙ্গারকোন গ্রামে গত ৩০ মে বৈকালে সোমা সিংকে বাড়িতে একা পেয়ে কামরুজ্জামান অভিযান চালায় |  প্রথমে  সোমাকে মাথায় আঘাত করে অজ্ঞান, পরে গলায় চেন পেঁচিয়ে হত্যার চেষ্টা  শেষে ধর্ষণ করে সে। তারপর লুটপাট চালিয়ে সেখান থেকে লাল মোটর সাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।  মা সন্ধ্যায় বাড়ি  ফিরে এসে মেয়ের এই  অবস্থা দেখার পর সোমাকে প্রথমে  কালনা হাসপাতাল পরে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়।  ভেন্টিলেশন রেখে সেখানেই তার চিকিৎসা চলাকালীন  ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয়। কিন্তু বুধবার রাত্রি দশটা নাগাদ সোমার মৃত্যু হয় |  কালনা শ্মশানে শেষকৃত্য সমাধার পর সব মানুষের একটাই দাবি ছিল —  ওর যে প্রাণ কেড়েছে, তার যেন কঠোর সাজা হয়।  কেরলে শ্রমিকের কাজে যাওয়া, ভাঙা-চোরা লোহা ও গুলের ব্যবসা করেও আয়ে পোষাচ্ছিল না কামারুজ্জামানের।  শেষে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে একটার পর একটা মহিলা খুন করে তাদের সর্বস্ব লুঠ করে নেওয়াই তার জীবিকা হয়ে উঠেছিল ।

Related posts

অন্য ভাবনায় আত্মবলিদান দিবস পালন

E Zero Point

বামেরা বন্ধ সফল করতে, মরিয়া চেষ্টা নেতাদের

E Zero Point

এটিএম প্রতারণাঃ ৫০ হাজার টাকা গায়েব

E Zero Point

মতামত দিন