জিরো পয়েন্ট নিউজ ডেস্ক, ২৫ অগাষ্ট, ২০২০:
ভারতীয় শিল্প সংস্থার অগ্রণী শিল্পপতিদের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় অর্থ তথা কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রী শ্রীমতী নির্মলা সীতারমন জোর দিয়ে বলেছেন, কাঠামোগত সংস্কার সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকারের বিষয় এবং এ ধরনের সংস্কারের ক্ষেত্রে গৃহীত উদ্যোগগুলি কোভিড-১৯ মহামারীর সময় ঘোষিত বিভিন্ন ব্যবস্থা ও নীতি-পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়েছে। কাঠামোগত সংস্কারের ফলে অর্থ ব্যবস্থার পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়েছে, যা এখন সর্বত্রই স্পষ্ট লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
অর্থ ব্যবস্থার পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পক্ষ থেকে পণ্য ও পরিষেবার আন্তঃরাজ্য বিনিময়ে কোনরকম বিঘ্ন না ঘটানোর জন্য রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকার এবং নিয়ন্ত্রণমূলক কর্তৃপক্ষগুলির মধ্যে দৃষ্টান্তমূলক সহযোগিতার ক্ষেত্রে এর থেকে ভালো সময় আর হতে পারে না বলে মন্তব্য করে শ্রীমতী সীতারমন বলেন, একইসঙ্গে শিল্প সংস্থাগুলিকেও এটা সুনিশ্চিত করতে হবে যে, বর্তমান সঙ্কট থেকে দেশকে কিভাবে উদ্ধার করা যায়।
করোনা মহামারীর দরুণ পর্যটন, হোটেল ও আতিথেয়তা, রিয়েল এস্টেট ও নির্মাণ তথা বিমান পরিবহণ ক্ষেত্র নির্বিশেষ যে অভিন্ন প্রভাব পড়েছে তা স্বীকার করে নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই ক্ষেত্রগুলির সঙ্গে অর্থনীতির গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তাই এই ক্ষেত্রগুলির সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি দূর করতে হোটেল, রেস্তোরাঁ, ব্যাঙ্কোয়েট প্রভৃতি ক্ষেত্রের জন্য আদর্শ কার্যপরিচালন বিধি জারি করা হবে। কৌশলগত বিলগ্নিকরণ প্রসঙ্গে শ্রীমতী সীতারমন জানান, বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় দ্রুত প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
কর্পোরেট কর ক্ষেত্রে গত সেপ্টেম্বর মাসে কর হার হ্রাস করার ফলে বেসরকারি বিনিয়োগ প্রবাহ প্রসঙ্গে শ্রীমতী সীতারমন বলেন, কোভিড পরবর্তী বিশ্বে বেসরকারি বিনিয়োগ উন্নয়নের গতি সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
স্থানীয় উৎপাদন প্রসঙ্গে শ্রীমতী সীতারমন বলেন, উৎপাদনশীলতা সংযুক্ত উৎসাহ ভাতা কর্মসূচিতে বিপুল সাড়া পাওয়া গেছে এবং ছয়টি রাজ্যে এই কর্মসূচি বাল্ক ড্রাগ এবং এটিআই উৎপাদনের ক্ষেত্রে গতি সঞ্চার করেছে।
বিভিন্ন সরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে মাশুল মেটানোর ক্ষেত্রে বিলম্ব প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রক বিষয়টি নিয়ে নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা করছে যাতে শিল্প সংস্থাগুলির বকেয়া দ্রুত মেটানো যায়। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখতে পরিকাঠামো ক্ষেত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। একইসঙ্গে, এই ক্ষেত্র অভ্যন্তরীণ তহবিল গঠনেও বড় ভূমিকা নিয়ে শিল্প সংস্থাগুলির আর্থিক চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়ে উঠতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই এই পদক্ষেপকে সর্বস্তরে স্বাগত জানানো হবে। দু’চাকার যানের ক্ষেত্রে জিএসটি হার কম করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে যাতে কোন পক্ষের স্বার্থ বিঘ্নিত না করেই কর হার হ্রাসের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংশোধন করা যায়। জিএসটি পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করা হবে বলেও তিনি জানান।
ভারতীয় শিল্প মহাসঙ্ঘ, সিআইআই-এর সভাপতি শ্রী উদয় কোটাক বলেন, গত এপ্রিল-মে মাসে অর্থ ব্যবস্থার পুনরুদ্ধারের গতি মন্থর হয়েছে। তবে, কেন্দ্রীয় সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গৃহীত একাধিক সহায়ক পদক্ষেপের দরুণ অর্থ ব্যবস্থার পুনরুদ্ধারের গতি সচল থেকেছে। তিনি বলেন, বিভিন্ন রাজ্যে স্থানীয়ভাবে লকডাউনের দরুণ শিল্প সংস্থাগুলি বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হয়েছে এবং স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়েছে উৎপাদনের ওপর। শ্রী কোটাক আরও বলেন, অর্থ ব্যবস্থার পুনরুদ্ধারে মদত যোগাতে নাবার্ড, সিডবি-র মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির বড় ভূমিকা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে সিআইআই-এর মহানির্দেশক শ্রী চন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।