08/09/2024 : 2:25 PM
অন্যান্য

বড়শুল কিশোর সংঘের বিনা পয়সার হাট

বিশেষ প্রতিবেদনঃ ক্লাব সংগঠন নিয়ে মানুষের মধ্যে একটা বদ্ধমূল ভ্রান্ত ধারনা আছে যে ক্লাব সংগঠন মানেই হচ্ছে ক্যারাম খেলা, তাস খেলা, বছরে একটা ছোটো খাটো যে কোনো খেলার আয়োজন করা। আর সারা বছরে চাঁদার রসিদ বই ছাপিয়ে দু-চারটে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নাম করে চাঁদা তুলে অর্ধেক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে খরচ করে। বাকি অর্ধেক চলে যায় নিজেদের আনন্দ ফুর্তি করতে. আর সকাল-সন্ধ্যা-রাত্রিতে কিছু অতি উৎসাহী যুবক সদস্যদের নেশার দ্রব্য সেবনের সাথে সাথে মুখে অশ্রাব্য (ছাপার অযোগ্য) ভাষার ফুলঝুড়ি ছোটে, আর বর্তমানে মোবাইলের মাধ্যমে সবজান্তা কিছু অশিক্ষিত জ্ঞানী যোগ্যতার বাইরে গিয়ে অন্যদের চুলচেরা সমালোচনা করতেই ব্যস্ত থাকেন।
অনেক ক্লাব বর্তমান পরিস্থিতিতে এখানো সামাজিক দায়িত্ব পালনে উদ্যোগী হয়নি।
কিন্তু পূর্ব বর্ধমান জেলার, বর্ধমান উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের, বর্ধমান ২ নং ব্লকের, শক্তিগড় থানা ও বড়শুল ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত “বড়শুল কিশোর সংঘ” ক্লাব সংগঠন সম্পর্কিত সমস্ত ধারনা পাল্টে দিয়ে এগিয়ে চলেছে। করোনা ভাইরাস এর জন্য সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক লকডাউন চলছে। এই লকডাউন চলার জন্য এলাকার দিন আনে দিন খায় এই রকম অসহায় দুঃস্থ পরিবার গুলিই পড়েছে বেশি সমস্যায়। আর এই মূহুর্তে সেই পরিবার গুলির পাশে ত্রাতার ভূমিকায় বড়শুল কিশোর সংঘ।

গত ৭ মে বড়শুল কিশোর সংঘের উদ্যোগে এলাকার ৫০ জন দিন আনে দিন খায় এই রকম দুঃস্থ মানুষকে সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত একজন মানুষের সারাদিনে খাবারের জন্য যা যা প্রয়োজন তার মধ্যে থেকে ২১ রকমের (মাজন, চা, চিনি,বিস্কুট, মুড়ি, কুমড়ো, পিয়াঁজ,পটল, বরবটি, ঢেঁরস, হলুদ গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, তেজপাতা, সর্ষের তেল, শুকনো লঙ্কা, কাঁচা ছোলা, সোয়াবিন, মুসুরি ডাল, চিঁড়ে, ডিম, সাবান/সার্ফ) খাদ্য সামগ্রী ক্লাবের মাঠে বিনা পয়সার হাটে তুলে দেওয়া হলো। উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ও বর্ধমান উত্তর ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি  নিশীথ কুমার মালিক, শক্তিগড় থানার এ এস আই  প্রশান্ত সেন। বর্ধমান উত্তর উক্ত ত্রাণবিলি কার্যক্রমে বিধায়ক  নিশীথ কুমার মালিক জানিয়েছেন যে, বড়শুল কিশোর সংঘ যেভাবে সামাজিক দায়িত্ব পালন করছে,  এলাকার বিধায়ক হয়ে তিনি গর্ববোধ করছেন। বর্ধমান উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের এই ক্লাব একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র।

বড়শুল কিশোর সংঘের সাধারণ সম্পাদক পার্থ ঘোষ বলেন, যতদিন না লকডাউন উঠছে ততদিন আমাদের এই উদ্যোগ চলবে। ক্লাবের পক্ষ থেকে ৫ টি মোবাইল নম্বর দিয়ে হেল্প লাইন চালু করা হয়েছে। ২৪ ঘন্টার মধ্যেই তাদের বাড়িতে ক্লাবের সদস্যরা খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে. অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার আছেন তাঁরা না চাইলেও আমাদের ক্লাবের সদস্যরা পাশাপাশি বাড়ির লোকজনদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে রাত্রিতে সবার অলক্ষে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিচ্ছে চাইতে না পারা পরিবার গুলিকে।

তিনি আরও জানান যে একটা ক্লাব তৈরি হয় চারটি “ক” দিয়ে, ১) কার্য্যালয়(ক্লাব ঘর), ২) কর্মী(সদস্য – সদস্যা), ৩) কোষ(অর্থ), ৪) কর্মসূচি(বিভিন্ন অনুষ্ঠানআয়োজিত করা)। কার্য্যালয় না থাকলে কর্মীরা বসবে কোথায়, অর্থ না থাকলে ক্লাবের কোনো অনুষ্ঠান করা যায় না আবার, কার্য্যালয় – কর্মী – কোষ থাকলেই তো হবে না তার জন্য কর্মসূচি নিতে হবে – এই চারটি “ক” ওতোপ্রোত ভাবে যুক্ত।

তিনি আমাদের প্রতিনিধি কে জানান, যে আবার একটি ক্লাব দাঁড়িয়ে থাকে ৪ টি স্তম্ভের উপর- ১) Cultural Programme, ২) Sports
৩) Social Activities, ৪) Social Duty। কোভিড-১৯ প্রতিরোধে দিন আনে দিন খায় এই রকম মানুষকে খাদ্য সামগ্রী জোগান দিয়ে তাদের বাঁচানোর তাগিদে বড়শুল কিশোর সংঘ এই মূহুর্তে Social Duty করতে বদ্ধপরিকর।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ প্রশাসন ও সাংবাদিক বন্ধুগন যেভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন তার জন্য বড়শুল কিশোর সংঘ পক্ষ থেকে সমস্ত করোনা যোদ্ধাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে।

 

Related posts

রেশন নিয়ে রাজ্যে দুর্নীতির অভিযোগঃ পূর্ব বর্ধমানে বিভিন্ন রেশন ডিলারের কারচুপি

E Zero Point

মেমারি দমকল কেন্দ্রের জীবানু মুক্ত অভিযান

E Zero Point

চীন-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্বে শেষ মুহূর্তে বাতিল জি-২০ ভিডিও কনফারেন্স বৈঠক

E Zero Point

মতামত দিন