রূপাঞ্জন রায়ঃ গত ৭ জুন রবিবার গোবরডাঙ্গা শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে হাসনাবাদ ব্লকের পাটনীখানপুর এলাকায় আমফান ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ বিলি করা হল।
একদিকে ইছামতি ও অন্য দিকে ডাসা নদীর মধ্যবর্তী একটি উপদ্বীপের মত এই পাটলিখানপুর। তবে ডাসা নদীকে এখন স্নেহময়ী মায়ের মত মনে হচ্ছে না; বরং সে ভয়াল-ভয়ঙ্কর এক সর্বগ্রাসী রাক্ষসীর মত বললেও ঘাটতি থেকে যায় কিছুটা। সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় আমফানের প্রবল শক্তির কাছে মাথা নত করে বঙ্গোপসাগর। দিনকয়েক আগেই রাতের অন্ধকারে প্রেরণ করে তার মারণ অস্ত্রগুলোকে। ইন্টার কন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইলের গতিতে ছুটে আসা জলের চাপ নিতে পারল না ডাসা নদীর দুর্বল বাঁধগুলো।
ভয়ঙ্কর ঝড়ের রাতে কৃষ্ণকালো অন্ধকারের ছায়ায় ঘরে আশ্রয় নেওয়া কম্পমান মানুষ গুলোর শেষ আশ্রয় কত সহজে কেড়ে নিল ডাসা নদী! তাই যেদিকেই চোখ যায়, শুধু জল আর জল আর তার মধ্যে সভ্যতার চিহ্ন বহনকারী ইতস্তত বাড়িঘর আর গাছপালা। কোথাও কোথাও জলের মধ্যেই খাট পাতিয়ে আবার বেঁচে থাকার লড়াই, স্রোতে ভেসে যাওয়া পাকা রাস্তা আর অসহায় গবাদি পশুর হাহাকার।
এরই মধ্যে গোবরডাঙ্গা শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে ৪৫০টি পরিবারের মধ্যে ত্রান বিলি – যা ধ্বংসের নিরিখে অতি সামান্যই। সংস্থার পক্ষ থেকে সুশান্ত দাম জানান যে, হয়ত আবার ফিরে আসতে হবে এখানে, হয়ত ততদিনে প্রাণ চলে যাবে আরও কত আরাবুল, ফতিমা বিবিদের, হয়ত আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় সেটাই অনেক কারণ প্রশাসনের তরফে নজরে পড়ল না কোনও তৎপরতা। তাই ভোট আসে ভোট যায়, সরকারও হয়ত বদল হয় একদিন, কিন্তু সাধারণ মানুষ থেকে যায় সেই সাধারণ মানুষেই।