আলেক শেখ, কালনা, ১০ জুনঃ আমমফান ঝড়ের পর থেকেই কাবাডি গ্রাম বলে খ্যাত কালিনগরে নদীভাঙ্গন শুরু হয়েছে । কয়েকদিনের মধ্যেই সেই ভাঙ্গন ব্যাপক আকার নিয়েছে । কালনা-১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত এই গ্রামের বাসিন্দারা লিখিতভাবে প্রশাসনকে জানালে কয়েকজন সরকারি প্রতিনিধি পরিদর্শনে যান । তারপর থেকেই চুপচাপ, কোন পদক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের । পূর্ব বর্ধমান জেলার এই গ্রামটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ভাগীরথী নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত । একমাত্র নৌকায় হল যোগাযোগের অবলম্বন । তবুও এই চরম প্রতিকূলতার মধ্যেও এই গ্রাম বহু সু-সন্তানের জন্ম দিয়েছে । ১৯৮৬ সালে বেজিংয়ে অনুষ্ঠিত এশিয়াডে ভারত একমাত্র সোনা জয়ী হয়েছিল কাবাডিতে । সেই সোনাজয়ী কাবাডি দলে অংশগ্রহণ করেন এই কালিনগর গ্রামের প্রয়াত আনজার আলী শেখ । এছাড়াও রাজ্য ও জাতীয় স্তরের বহু কাবাডি খেলোয়াড়ের জন্ম দিয়েছে এই গ্রাম । তাই কালিনগর আজ কাবাডি গ্রাম বলেই খ্যাত হয়ে উঠেছে । গ্রামবাসীদের অভিযোগ ঐতিহ্যপূর্ণ গ্রামের তকমা নিয়েও কালিনগর বঞ্চনার শিকার । এই গ্রামে নদী ভাঙ্গন সমস্যা আজকের নয়, বহুদিন পূর্বের । মানুষের আইওয়াশ করতে নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধের নামে ছেলেখেলা হয়েছে বারবার । পাকাপাকিভাবে ভাঙ্গনের সমস্যা সমাধান না করে লোক হাসানো প্রকল্প নেওয়া হয়েছে । ভাঙ্গন প্রতিরোধে একবার ভেটিভার নামক ঘাস লাগিয়ে দেওয়া হয় নদী পাড়ে । বলা হয় এই ঘাসই নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ করবে । কিন্তু যে বছর ঘাস লাগানো হয়, সেই বছরই সেই ঘাস ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায় । তারপর নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে ফেলা হয় বাঁশের খাঁচা । সেই বাঁশের খাঁচাও এখন ধুয়েমুছে সাফ । সেই ট্রাডিশন সমানে চলেছে— নদীভাঙ্গন অব্যাহত । গ্রামবাসীদের দাবি পাকাপাকিভাবে ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা হোক । কিন্তু প্রশাসন ঘাস, বাঁশের খাঁচার পর কি প্রকল্প নিয়ে আসে সেটাই এখন দেখার ।
পূর্ববর্তী পোস্ট