সেখ নিজাম আলমঃ গলসি ২ নং ব্লকের মিঠাপুর গ্রামের ঘটনা। গোহগ্রাম এলাকার আশেপাশে একটায় উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। মিঠাপুর শ্রী দূর্গা হাই স্কুল। ১২০০ পড়ুয়া এখানে পড়াশোনা করে। তাদের করুন কাহিনী। একদিন – আধদিন নয়। কয়েক বছর ধরে কষ্ট পাচ্ছে এই পড়ুয়ারা ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বিষয় হচ্ছে রাস্তা বেহাল। হাল্কাভাবে বেহাল বলে ছেড়ে দিলে হবে না। এতটাই খারাপ যে পড়ুয়াদের হাত ভাঙা থেকে শুরু করে আহত হয়েছে অনেকে। এর প্রতিকার পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে কোন জনদরদীকে এগিয়ে আসতে দেখা যায় নি।
উপায়ান্তর না দেখে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাপ্পাদিত্য পাল তার স্কুলের প্যাডে লিখিতভাবে গলসি ২ বিডিওকে জানিয়েছেন। তাও আজকাল নয়। ৬/৭/২০১৮ তারিখে। দীর্ঘ দুই বৎসর পার হয়ে গিয়েও কোন প্রতিকার হয়নি এই রাস্তার। এই গ্রামে ঢোকার তিনটি পথ। তিনটি পথই অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ খানা খন্দে ভরা। এতটাই খারাপ যে,প্রায়ই দূর্ঘটনা ঘটে। কাদা জলে তাদের পোশাক পরিচ্ছদ প্রতিদিনই নষ্ট হয়। এই কাহিনী শোনে কার না কষ্ট হয়। শেষমেশ গ্রামের এক বধূ স্বপ্না সাম মূখ্যমন্ত্রীকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। স্বপ্না সামের বক্তব্য আমার বাড়ীর সামনে দিয়ে যখন পড়ুয়ারা সবুজসাথী সাইকেলে স্কুলে যায়,সেই দৃশ্য দেখে বুক ফেটে যায়। একে তো সঙ্কীর্ণ রাস্তা, তার মাঝে খাল,তাতে জল জমা। সাইকেল যাওয়ার মত সরু রাস্তায় যেতে গেলে কেউ হয়ত টলমটল করে পড়ে যায়,কখনও মেয়েদের স্কাট জলে ভিজে যায়,আবার পড়ে গিয়ে কেউ আহত হয়। ফলে তার আর স্কুলে যাওয়ায় হয় না।
এমন করুণ কাহিনীর অভিযোগ পেয়ে মূখ্যমন্ত্রী কিন্তু বসে থাকে নি। তিনি পূর্ব বর্ধমান জেলাশাসককে দেখে নিতে বলেছিলেন। জেলাশাসকও দায়িত্ব পালন করেনি, তা নয়। তিনি রাস্তার পি,ডাব্লু,ডি বিভাগে বিষয়টি জানিয়েছেন। পি,ডাব্লু,ডি বিভাগও স্বয়ং স্বপ্না সামকে ফোন করে দায়িত্ব পালন করেছেন। ফোনে জানিয়েছেন স্বয়ং মূখ্যমন্ত্রীকে জানানোর কি দরকার ছিল, আমাদেরকে বললেই তো পারতেন। এই বলে কিছুদিনের মধ্যেই রাস্তা মেরামত হবে। এই সান্তনা দিয়ে সকলেই দিব্যি ঘুম মারছেন। স্কুল যাওয়ার পথের করুণ কাহিনী চলতেই থাকছে, তবু কারও চেতনা নেই। যতই প্রধান শিক্ষক বিডিওকে জানাক, আর গ্রামের মহিলারা মূখ্যমন্ত্রীকে জানাক, আর জেলাশাসক পি,ডাব্লুকে জানাক, কে যে কখন কাজ করবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।