28/03/2024 : 7:21 PM
আমার বাংলাদক্ষিণ বঙ্গপূর্ব বর্ধমানমঙ্গলকোটমেমারি

করোনা থাবা বসাতে পারেনি শিশুমনেঃ রথের দড়িতে টান…সামাজিক বিধি মেনে

পরাগ জ্যোতি ঘোষঃ সময়ের চাকা অনন্তকাল থেকে ঘুরে চলেছে। ভালো-খারাপ শব্দ প্রয়োগে আমরা সময়কে বেঁধে রাখতে চায়। তাই করোনা আবহে একদিকে যখন বিশ্ব থমকে গেছে ঠিক তেমনই সচেতন হয়ে অন্যদিকে বিশ্ব নাগরিক করোনাকে সাথে নিয়েই তার বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছে। কিন্তু সময়ের মতোই শিশুমনকে বেঁধে রাখা যায় না। তাই করোনা থাবা বসাতে পারেনি শিশুমনে।

সরকারি বিধি নিষেধ থাকার ফলে বাঙালির বড় উৎসব রথযাত্রায় এবার নেই কোন জৌলুস। করোনা আতঙ্কে কোন জমায়েত  হবে না, কোন জায়গাতেই হচ্ছে না তাই রথের দড়ি টানার হুড়োহুড়ি কোথাও। রাজ্য তথা জেলার বিভিন্ন স্বনামধন্য রথযাত্রার চাকা গতকাল স্তব্ধ থাকলেও বৈশ্বিক মহামারী থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রার্থণায় পুজো হয়েছে সর্বত্র।

কিন্তু শিশুমনে রথের দড়ি টানার আবেগকে তো সেভাবে বেধে রাখা যায় না। তাই মঙ্গলকোট নিবাসী শিক্ষক পিতামাতার আদরের মনি আয়ুষকে বেঁধে রাখতে পারলো না তার বাবা-মা । বহু কষ্ট করে সে নিজেই বানিয়েছে তার ছোট্ট রথ খানি। কিন্তু এবার নাকি মাসির বাড়ি রথ নিয়ে যাওয়া যাবে না । বায়না ধরল সে যে  জ্যামার বাড়িতে নিয়ে যেতেই হবে তার রথটা কে। আর পাড়াতেও ঘুরতে হবে তার রথটা কে নিয়ে। কি আর করা যায় দাদু ঠাকুমা পিসি আর নিজেই মাক্স পড়ে বেরিয়ে পড়ল তার আদরের রথের দড়ি টানতে টানতে। সারা পাড়া ঘুরল ঘুরে এসে জ্যামার বাড়িতে রথ টাকে রেখে গেল কারণ এটাই জগন্নাথের মাসির বাড়ি। তাই করোনা আতঙ্কে রথের মেলার আনন্দ যত ই মাটি হোক না কেন, শিশুমনে তার কোনো প্রভাব ফেলেনি। জাল পাড়ার আনাচে-কানাচে এমন আয়ুষের সংখ্যা অনেক।

প্রত্যেকেই রথের দড়িতে টান দিয়েছে তাদের মতন কর । এভাবেই বেঁচে থাকল জগন্নাথের রথ ও তার দড়ি টানা মঙ্গলকোটের জাল পাড়াতে।

শুধু মঙ্গলকোট নয় জেলার বিভিন্ন প্রান্তে শিশুদের রথযাত্রা চোখে পড়লো। মেমারি শহরের নতুন পুকুর পাড়ের শিক্ষক অপূর্ব কুমার সু-এর পরিবারের কন্যা সমৃদ্ধির বায়না প্রতিবারের মতো পাড়ার বন্ধুদের নিয়ে রথযাত্রা করবেই। মেয়ের আব্দার বাবা ফেলতে না পেরে সামাজিকবিধি মেনে মাস্ক পরে রথ নিয়ে বেড়িয়ে পড়লেন পাড়ার পথে। সমৃদ্ধিও খুশি বন্ধু গার্গী, রূপমা, নির্ণয়, সৌরিশ, আয়ুষ, কুট্টুসদের সাথে পেয়ে। পরিক্রমা শেষে গ্লাভস ব্যবহার করে প্রসাদ বিলি করা হয়েছে।

পরিবারের পক্ষ থেকে বীণাপানি সু জানান যে, রথযাত্রা শেষে অন্যান্যবার সিঙারা, চপ, জিলিপি থাকলেও এবার কেবলমাত্র প্যাকেটজাত খাবারই খাওয়া হয়েছে। ভগবান জগন্নাথ সবার মঙ্গল করুক, করোনা মুক্ত হোক পৃথিবী।

 

Related posts

অসহায় পথবাসীদের পাশে মেমারির দধীচি

E Zero Point

কান্দিতে শেষ মুহূর্তের পুজোর প্রস্তুতি

E Zero Point

ভোট শেষ, প্রতিশ্রুতি শেষঃ ভগ্নপ্রায় কাঠের ব্রিজ মেমারিতে

E Zero Point

মতামত দিন