জিরো পয়েন্ট নিউজ, সুব্রত দে, মগরা, ১৬ অগাষ্ট, ২০২০:
এ যেন এক দ্বৈত সংকল্প। একাধারে স্বাধীনতা সংগ্রামে রক্ত ঝড়ানো বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো,অপর দিকে করোনা পরিস্থিতির জন্য রক্তাল্পতায় ভোগা ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিকে সঙ্কট মোকাবিলায় কিছুটা সাহায্য করতে পারা।এই দুই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে মগরার শতাব্দী প্রাচীন বান্ধব সম্মিলনী ক্লাব ও লায়ন্স ক্লাব অফ পান্ডুয়া ৭৪ তম স্বাধীনতা দিবসের দিনটিকে বেছে নিয়েছিলো সমাজকে এক রক্তদান শিবির উপহার দেবে বলে। কিন্ত কার্যক্ষেত্রে দেখা গেলো এ যেন এক রক্তদানের উৎসবে পরিনত হয়েছে।
পূর্ব প্রতিশ্রুতি মত তারা ঠিক সকাল দশটাতেই এই কর্মসূচির সূচনা করে।এর আগে শিবির প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ক্লাবের সভাপতি ধ্রুবপদ কুণ্ডু মহাশয়।এর পরেই কার্যত এই শিবিরে রক্তদাতাদের ঢল নামে।উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় মহিলা রক্তদাতাদের ভীড় পরিলক্ষিত হয়।বেলা গড়াতেই এই শিবির যেন এক উৎসাহী রক্তদাতাদের মিলনক্ষেত্রে পরিনত হয়। প্রথম ঘন্টাতেই চল্লিশেরও বেশি রক্তদাতা রক্তদান করেন।ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে ,-“Morning shows the day”।প্রথম ঘন্টা থেকেই আভাস পাওয়া যেতে থাকে যে বান্ধব সম্মিলনীর একশত ইউনিট রক্ত জোগাড়ের লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা।
বান্ধব সম্মিলনীর এই মহতী উদ্যোগকে উৎসাহ দিতে সকাল থেকেই বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।প্রাক্তন জাতীয় ফুটবলার রহিম নবি ও বলাগড় বিধানসভার বিধায়ক অসীম মাঝি এই রক্তদান উৎসবে সামিল হন।এছাড়াও প্রশাসনের বিভিন্ন পদে থাকা ব্যক্তিবর্গ ও পান্ডুয়া লায়ন্স ক্লাবের কর্মকর্তারা এই শিবিরে উপস্থিত ছিলেন।ক্লাব সম্পাদক দেবরাজ চক্রবর্তী আমাদের জানলেন যে এই উদ্যোগকে সফল করার জন্য ক্লাবের সকল সদস্য প্রায় দু মাস ধরে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছেন ও মানুষকে রক্তদান সম্পর্কে সচেতন করেছেন। তিনি আরও জানালেন যে আরও একটি শতাব্দী প্রাচীন সংস্থা,লায়ন্স ক্লাব এর পান্ডুয়া শাখা এই শিবির আয়োজনে তাদের প্রভূত সাহায্য করেছেন।
নেতাজী সুভাষচন্দ্রের সেই কালজয়ী আহ্বান,-“তোমরা আমাকে রক্ত দাও,আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো”, যেমন অগ্নিযুগের প্রতিটি মানুষকে উদ্দীপ্ত করেছিলো, ঠিক তেমনই বান্ধব সম্মিলনী এই স্বাধীনতা দিবসে সকলকে রক্তদানের আহ্বান জানিয়েছিল,পরিবর্তে তারা এই করোনা আবহে প্রত্যেক রক্তদাতার নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। স্যানিটাইজেশন টানেল গেট থেকে শুরু করে,থার্মাল গান এবং প্রতিটি রক্তদাতার জন্য পৃথক একবার ব্যবহার যোগ্য বেড শিট্ বরাদ্দ ছিল।এই সুচারু আয়োজনের ফলও পাওয়া গেল হাতে নাতে। ইতিহাস সৃষ্টি হল মগরার বুকে ।105 জন রক্তদাতার রক্তদানের রেকর্ড তৈরির হল আজ।এই কারনে বান্ধব সম্মিলনী জন্য কোনো প্রশংসাই যথেষ্ট নয়।