18/04/2024 : 7:18 AM
আমার বাংলাকলকাতা

মনুষ্যত্বের কি আর লকডাউন হয়? মানবতার টানে, ভয় নেই রক্ত দানে

জিরো পয়েন্ট নিউজ – রূপাঞ্জন রায়, কলকাতা, ২২ অগাষ্ট, ২০২০:


শুক্রবার, ২১ আগস্টের ঘটনা। তখন সকাল সাড়ে এগারোটা হবে। লকডাউনে জনশূন্য হাওড়া ব্রিজ। কলকাতার দিকে পুলিশের নাকা চেকিংয়ে থামানো হল হাওড়ার দিক থেকে আসা একটি বাইক। আরোহীর গায়ে রক্তের দাগ। স্বাভাবিকভাবেই কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারেরা বাইক আরোহীর কাছে জানতে চাইলেন কী ঘটেছে? কেন শরীরে, জামা-কাপড়ে রক্তের দাগ?

থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ১১ বছরের ছেলে সুপ্রিয়র জন্য এক বোতল রক্ত আনতে হাওড়ার মালিপাঁচঘরা থেকে কলকাতার পদ্মপুকুরে একটি ব্লাড ব্যাঙ্কে আসছিলেন বাবা শুভেন্দু ভুক্ত। কুড়ি দিন অন্তর ব্লাড ট্রান্সফিউশনের প্রয়োজন হয় সুপ্রিয়র। শুক্রবার ছিল সুপ্রিয়র ব্লাড ট্রান্সফিউশনের দিন। করোনা পরিস্থিতির জন্য স্বেচ্ছা-রক্তদাতা না পেয়ে শুভেন্দু ঠিক করেছিলেন, ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে নিজের রক্ত দিয়ে বিনিময়ে ছেলের জন্য প্রয়োজনীয় গ্রুপের রক্ত আনবেন। লকডাউনের মধ্যে বেরিয়ে তাড়াহুড়োয় হাওড়া ব্রিজে ওঠার মুখেই দুর্ঘটনায় পড়েন। রাস্তায় বাইকের চাকা কোনও ভাবে পিছলে যায়। কেটে-ছড়ে যায় শরীরের নানা জায়গায়। তাতেই পোশাকে রক্তের দাগ লাগে।

কিন্তু অসুস্থ সন্তানের জন্য রক্ত চাই। তাই চোটের পরোয়া না করে সেই অবস্থাতেই বাইক তুলে ফের রওনা দেন শুভেন্দু। নাকা চেকিংয়ে তাঁকে আটকান কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারেরা। সব শোনার পরে হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ডের সিভিক ভলান্টিয়ার মহম্মদ নিয়াজুদ্দিন এগিয়ে এসে আহত শুভেন্দুবাবুকে আশ্বস্ত করে বলেন, এই শরীর নিয়ে তাঁর রক্ত দেওয়ার দরকার নেই, তার বদলে তিনিই শুভেন্দুবাবুর সন্তানের জন্য রক্ত দেবেন।

নিয়াজুদ্দিনের এই সিদ্ধান্তের কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গেই নাকা চেকিংয়ে উপস্থিত অফিসারেরা তাঁকে শুভেন্দুর সঙ্গে যাওয়ার অনুমতি দেন। পদ্মপুকুরে ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে ‘এ পজিটিভ’ রক্ত দেন মহম্মদ নিয়াজুদ্দিন। পরিবর্তে ছেলের জন্য ‘ও পজিটিভ’ রক্ত নিয়ে হাওড়ার হাসপাতালে ফেরেন শুভেন্দু। রক্ত পায় ১১ বছরের সুপ্রিয়।

 

Related posts

খেলো ইন্ডিয়াঃ বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা মেমারি ক্রিস্টাল মডেল স্কুলে

E Zero Point

একুশের লক্ষ্যে ভারতীয় জনতা পার্টির সভা

E Zero Point

প্রাক্তন বিধায়ককে অসম্মানঃ সমালোচনার ঝড় পূর্ব বর্ধমানে

E Zero Point

মতামত দিন