27/04/2024 : 8:33 AM
আমার দেশ

জীবন-জীবিকার সুযোগ-সুবিধা সহ গরীব কল্যাণ রোজগার অভিযানের মাধ্যমে গ্রামবাসীদের ক্ষমতায়ন

কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে নিজ নিজ গ্রামে ফিরে আসা প্রবাসী শ্রমিক এবং গ্রামাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জীবন-জীবিকার সুযোগ-সুবিধা তথা কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে গরীব কল্যাণ রোজগার অভিযানের সূচনা হয়। এই অভিযানের মাধ্যমে সেই সমস্ত প্রবাসী শ্রমিক যাঁরা নিজে গ্রামে ফিরে এসেছেন তাঁদের মিশন মোড ভিত্তিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদান করা হচ্ছে। দেশের ছয়টি রাজ্যের ১১৬টি জেলায় এই অভিযান রূপায়িত হচ্ছে এবং গ্রামবাসীরা ছাড়াও ফিরে আসা প্রবাসী শ্রমিকদের ক্ষমতায়নে এই অভিযান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে।

এই অভিযানের সাফল্যের সঙ্গে ১২টি কেন্দ্রীয় মন্ত্রক ও দপ্তরের পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলির সর্বাত্মক প্রয়াস যুক্ত রয়েছে। এই অভিযানের সুফল হিসেবে প্রবাসী শ্রমিক ও গ্রামবাসীরা জীবন-জীবিকার স্বার্থে বিভিন্ন সুবিধা পাচ্ছেন। গরীব কল্যাণ রোজগার অভিযানের আওতায় দু’জন সুফলভোগীর দুটি সাফল্যের কাহিনী তুলে ধরা হল।

ওড়িশার বালাঙ্গির জেলার নৈসিঙ্গা ব্লকের হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন তেভা ডুংরি গ্রামের শশী বারিক এই অভিযানের একজন সুফলভোগী। কোভিড-১৯-এর সময় সমগ্র দেশ যখন লকডাউনে রয়েছে, তখন শশী বারিক তাঁর নিজস্ব একটি পাকা বাড়ি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণ কর্মসূচির আওতায় তাঁর বাড়ি নির্মাণের বিষয়টি অনুমোদিত হয়। শ্রীমতী বারিকের পাকা বাড়ি নির্মাণের স্বপ্ন পূরণের জন্য কর্তৃপক্ষ সবরকম সহায়তা দেয়। লকডাউনের সময় যাবতীয় কাঁচামাল সরবরাহ সহ মানবসম্পদের বিষয়টিকেও বিবেচনায় রেখে তাঁর বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এর ফলে, শ্রীমতী শশী বারিক বাড়ি নির্মাণ খাতে প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার এক মাসের মধ্যেই সম্পূর্ণ নির্মাণ কাজ শেষ করেন।

নতুন বাড়ি প্রসঙ্গে শ্রীমতী বারিক বলেছেন, আমরা এখন আনন্দের সঙ্গে সিমেন্টের পাকা বাড়িতে বসবাস করছি। আমাদের মতো দরিদ্র পরিবারগুলিকে সবরকম সহায়তার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ। এখন আমি একটি পাকা বাড়ির গর্বিত মালিক। ৮০ বছর বয়সী বিধবা শশী বারিক এর আগে একটি জরাজীর্ণ বাড়িতে বসবাস করতেন। শ্রীমতী বারিকের একমাত্র পুত্র একজন দিনমজুর। তাঁর অল্প আয়ের বিনিময়ে পাঁচ পরিবারের এই সদস্যের দৈনিক দু’বেলা খাবার মেটানো সম্ভব হত না। স্বাভাবিকভাবেই পাকা বাড়ির স্বপ্ন ছিল দূর অস্ত। সরকার শ্রীমতী বারিককে তাঁর পাকা বাড়ি নির্মাণের স্বপ্ন পূরণের জন্য গ্রামীণ আবাসন কর্মসূচির আওতায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার অর্থ সহায়তা দেয়। এদিকে, শ্রীমতী বারিক সময়ের আগেই তাঁর বাড়ির নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলার জন্য সরকারের কাছ থেকে আরও ২০ হাজার টাকা উৎসাহ হিসেবে পাচ্ছেন।

অভিযানের দ্বিতীয় সুফলভোগী ঝাড়খণ্ড থেকে। হাজারিবাগ জেলার কাঠকামদাগ ব্লকের বেশ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন হুরুদাগ গ্রামের বাসিন্দা দুলারি মসোমাত – তাঁর স্বামী ২০০৮-এ প্রয়াত হন। তাঁর স্বামীর প্রয়াণের পর তিন কন্যাসন্তানকে বড় করার দায়িত্ব দুলারি দেবীর ওপর এসে পড়ে। এই দায়িত্ব তিনি দৃঢ়ভাবে কাঁধে নিয়ে এগিয়ে চলেন। দিনমজুর হিসেবে কাজ করে তিনি পরিবারের কথা ভাবতেন। সেই সময় তাঁর বাড়ির অবস্থা ছিল অত্যন্ত জরাজীর্ণ। এদিকে ২০১৯-২০-তে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণ কর্মসূচির আওতায় তাঁর পাকা বাড়ি নির্মাণের প্রস্তাব কর্তৃপক্ষ অনুমোদন করে। গরীব কল্যাণ রোজগার অভিযানের আওতায় দুলারি দেবী কায়িক পরিশ্রমে নিজের পাকা বাড়ি নির্মাণের কাজ শেষ করতে পেরেছেন। এজন্য আজ তিনি অত্যন্ত খুশি। নিজের পাকা বাড়ির স্বপ্ন পূরণ হওয়ার জন্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে দুলারি দেবী বলেছেন, সরকারের কাছ থেকে সহায়তার পাশাপাশি, তিনি বাড়িতেই একটি শৌচাগার নির্মাণ করেছেন এবং রান্নার গ্যাসের সংযোগও পেয়েছেন। তাই এখন এখন তাঁর পরিবারের জীবনযাপনের মান অনেক বেড়েছে।

 

Related posts

করোনা আবহে উত্তরপ্রদেশ থেকে রাজ্যসভার উপ-নির্বাচন ঘোষণা

E Zero Point

‘মিট দ্য অ্যাচিভার্স’ অনুষ্ঠানে সফল চার মহিলার গল্প

E Zero Point

দেশে গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনা মুক্ত হয়েছেন ৬৮,৫৮৪ জন

E Zero Point

মতামত দিন