তন্দ্রা বোস
পূর্ব বর্ধমান জেলার বিজুরের গ্রামের নাম করুড়ী।মায়া নদী পরিবেষ্ঠিত, অপরূপা আমার গ্রাম। এই গ্রামে বসবাস বোস পরিবারের। তিনভাই- বনোয়ারিলাল বোস, বিপীন বিহারী বোস ও বিনয় কৃষ্ণ বোস। কর্ম সূত্রে গ্রামের বাইরে থাকতেন বনোয়ারি লাল ও বিনয় কৃষ্ণ,গ্রামে থাকতেন বিহীন বিহারী।
তিনি করতেন এই বোস বংশের দশভূজা র আরাধনা।
৫০০ বছর অতিক্রান্ত করে আজও স্বমহিমায় পূজিত হচ্ছেন দেবী । দেবীর নিজস্ব সম্পদ আছে, তিনি কারো অনুগ্রহ গ্রহণকারী নন। পঞ্চমীর সন্ধ্যায় ভরা হয় মঙ্গল ঘট। ষষ্ঠীতে পূজিতা হন নবপত্রিকা।
এই পূজায় সন্ধিক্ষণে র পূজার সময় এতটাই নিস্তব্ধ থাকে, যে পিন পড়লে ও তার শব্দ শোনা যায়।ওই দিন ওই বাড়ির কেউ ফটকা ফাটান না। নবমীতে দেবী অপরাজিতা রূপে পূজিতা হন। উপস্থিত সকলের হাতে অপরাজিতার ডাল বাঁধা হয়। এখানে বলী হয়, কিন্তু দেবী ছাঁচি কুমড়ো বলী নেন।
অবশেষে আসে বিজয়া দশমী। সারাদিন উপবাসী থেকে বাড়ীর মেয়ে, বৌরা বরণ করে দেবী মা কে।
সন্ধ্যা বেলায় চোখের জলে নিরঞ্জন হয় প্রতীমা । আসছে বছর আবার হবার পতীক্ষায় থাকা।
ছোট বেলার স্মৃতি বিজড়িত এই পূজার আনন্দ ই আলাদা। ঢাকের আওয়াজ আজ ও কানে ভাসে।
অমোঘ টানে ছুটে যাই,আমি যে ওই বাড়ীর ই মেয়ে।
আমাদের মা লক্ষী দশভূজার সাথেই পূজিতা হন। আলাদা করে আর কোজাগরীতে আসেন না।
এছাড়া নবমীতে অষ্টম প্রহর নাম কীর্তন হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এই বাড়ীর সন্তান বৃন্দাবন বোস কীর্তন করতে করতে সমাধিস্থ হন,খোল এর উপর মাথা রেখে।সেই খোল বাড়ীর তুলসী মঞ্চের সামনে বাঁধানো আছে। কেউ গেলে দেখতে পাবেন। আমাদের অনেক স্মৃতি বিজড়িত এই পূজা।।সবাই মিলে ১০৮ টা বেলপাতা র মালা গাঁথা ,১০১ পদ্ম দিয়ে সন্ধি পূজো,মনের মনি কোঠায় আজ ও ভাস্বর ।
প্রনাম তোমায় দেবী দশভূজা। শক্তি দাও,সাহস দাও,অসুর দমনে।