29/03/2024 : 4:26 PM
ই-জিরো পয়েন্টপাঠকের কলম

পাঠকের কলমঃ অসামাজিক কাজ এবং তার ধর্মীয় রাজনীতি করণের বিরুদ্ধে সকলকে একসঙ্গে লড়াই করতে হবে

সুরজ মন্ডল

“মজহব নেহি শিখাতা আপশ মেঁ বের রাখনা”
হ্যাঁ! ছোটবেলা থেকেই স্কুল কলেজের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে সামাজিক উৎসব অনুষ্ঠানে আমরা এই উর্দু গানটি শুনতে পাই। গানটির সঙ্গে ভারতের সংস্কৃতি এমন ভাবে জড়িত যে এটি অনেকের কাছেই ” কওমি তারানা” বা জাতীয় সঙ্গীতের মত মর্যাদাপূর্ণ।
কিংবা অন্য এক উর্দু শায়েরের গেয়ে ওঠা , “কাহা হ্যা মেরা হিন্দুস্তান উসে ম্যা ঢুন্ড রহা হুঁ!” ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের মন আবেগে আপ্লুত করে।
একসময় এই বাংলা এবং ভারতে মাওলানা গিরীশ চন্দ্র সেন , রাজা রামমোহন রায়ের মতো আরবী ফার্সী ভাষার পণ্ডিত বাঙালি জাতির নাম গৌরবান্বিত করেছেন। অন্যদিকে মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতো সংস্কৃত পণ্ডিত বাঙালি জাতির নাম গৌরবান্বিত করেছেন।
কিন্তু হায়! আজ “জমানা বদল গিয়া” ! বাংলা এবং ভারত টুকরো টুকরো! এবার যদি পুরনো কাসুন্দি ঘটা হয়! কার্য কারণ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয় তবে তাতে লাভ কিছুই হবে না! সেসব নিয়ে আলোচনা ও গবেষণার আলাদা জায়গা আছে।
আমরা , অর্থাৎ দেশের নবীন প্রজন্ম ; সামাজিক এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সেই পুরনো খেলাটা আবার লক্ষ্য করছি। ইদানিং বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং সন্ত্রাসী সংগঠন , সেই পুরনো হিন্দুত্ব , মুসলমানিত্ব নিয়ে নতুন করে যেভাবে প্রচার করে চলেছে! এবং যেভাবে তরুণ প্রজন্ম সে সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে, তাতে আমাদের ভয় হয় দেশটা ফিলিস্তিন বা সিরিয়ায় না পরিণত হয়। গত কয়েক বছর যাবত ইতিহাসকে যেভাবে বদলের চেষ্টা চলছে। এবং যে পরিমাণ মিথ্যা তথ্য সোশাল মিডিয়াতে ছড়িয়েছে, তা যথেষ্ঠ সঙ্কাজনক!
এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমরা বাধ্য হচ্ছি, হক এবং অধিকারের কথা না বলে , দলিত সংখ্যালঘু এবং পিছিয়ে পড়া মানুষের, মেহনতি মানুষের হয়ে লড়াই না করে সাম্প্রদায়িকতা নির্মূলের লড়াই করতে।
রাজনৈতিক দল গুলো ঠিক আমাদের “শাসন” ই করে চলেছেন। এমন শাসন যেখানে বেঁচে থাকাটা এবং নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়াই আমরা বাঁচার উপায় মনে করছি। উন্নয়ন মনে করছি। এদিকে ক্ষুধা , বেকারত্ব , মহাজনী পুঁজিবাদ ধীরে ধীরে দেশটাকে আদর্শ গণতন্ত্র থেকে ধনতন্ত্রে রূপান্তরিত করছে।
এই পর্যন্ত , কমবেশি সকল সচেতন ভারতবাসীর বক্তব্য এক।
কিন্তু, ধর্মের মহ একটি বড়ো রোগ! এবং ধর্ম একটি বড়ো ঢাল। প্রধানত তাদের জন্য যারা হয় ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে নাহলে বিভিন্ন অসামাজিক কাজ থাকতে।
যে জন্য মূলত আমার এই প্রতিবেদনটি।বআজ খবর পেলাম ধর্মকে কাজে লাগিয়ে যে অসামাজিক কাজ করে চলেছেন কিছু রাজনীতি ঘেঁষা ব্যক্তিত্ব। তা যেহেতু আমাদের বিধানসভা এলাকায় চলছে , এবং মূলত আমাদের অর্থাৎ সংখ্যালঘু মুসলিমদের ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে করা হচ্ছে। বলতে গেলে মেমারি তথা বাংলার সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের কাছে সমাজ এবং ধর্মকে ছোট করা হচ্ছে, কেবল মাত্র নিজ অনৈতিক কাজ লুকানোর জন্য । এজন্য আমি মনে করছি আমার কিছু মন্তব্য করা উচিত।
কোন ব্যক্তি বিশেষের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আমার কোন মাথাব্যথা নেই। কিন্তু যখন কোন ব্যক্তি সমাজের মধ্যে প্রতিনিয়ত ঘটে চলা সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতিতে ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চায়, তখন তার বিরোধিতা করা কর্তব্য হয়ে পড়ে।
প্রতিটি সচেতন মানুষের কাছে অনুরোধ, কোন ভাবেই এই পরিস্থিতিতে কোন ঘটনাকে রাজনৈতিক রং দেবেন না। এবং অবশ্য অবশ্যই ধর্মীয় মতবাদকে ভুল ভাবে প্রর্দশণ করছেন যে সমস্ত ব্যক্তিবর্গ তাদের বিরোধীতা করুন।
অপর দিকে এটাও বলতে চাই, কোন মানুষ প্রকৃতপক্ষেই দোষি কিনা সেটা ঠিক করার আমরা কে? আইন , প্রশাসন অনুসন্ধান করে যা সিদ্ধান্তে উপনীত হবে সেটাই, গৃহীত হবে। কোন ব্যক্তিকে হঠাৎ করে দোষী, অপরাধী বলে দেগে দেওয়ার কোনো যুক্তি হয় না। অভিযোগ এলে তাকে “অভিযুক্ত” ধরা হয় , “অপরাধি” নয়!
এই সময়টা আমাদের খুব সাবধানে চলতে হবে। যাতে করে যুব সমাজের সামাজিক গোলোযোগকে অপব্যবহার করে কোন সাম্প্রদায়িক শক্তি সমাজের কোন ক্ষতি না করতে পারে।
পরিশেষে একটি কথায় বলবো, সমাজে ভালো মন্দ মিলিয়েই মানুষ থাকে, তাই কোন ঘটনার জন্য আমরা যেন কোন কমিউনিটিকে আঘাত না হানী।
ভালো মন্দ আমাদের সকলের মধ্যেই আছে।
আবার সেই ভারতের হিন্দু মুসলিম ঐক্যের অগ্রদূত সন্ত কবীর ই শেষ।সম্বল — “বুরা জো দেখান ম্যা চলা বুরা না মিলিয়া কোঈ। জব মন দেখা আপণা তো মুঝসে বুরা না হোঈ!”

Related posts

পাঠকের কলমঃ স্কুলের পাঠক্রমে রক্তদান অন্তর্ভুক্ত হোক

E Zero Point

জিরো পয়েন্ট কুইজ প্রতিযোগিতাঃ সাপ্তাহিক বিজয়ী স্নেহাশীষ আর্চাযী

E Zero Point

ভারতের প্রথম ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ঃ কুইজের খোঁজ খবর ও প্রতিযোগিতা-৩৭ (ষষ্ঠ সপ্তাহ)

E Zero Point

মতামত দিন