05/05/2025 : 10:37 PM
আমার বাংলাদক্ষিণ বঙ্গপূর্ব বর্ধমানমেমারি

দেবীপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রোগী দেখছেন ফার্মাসিস্ট

জিরো পয়েন্ট নিউজ – নূর আহামেদ, মেমারি, ১২ জানুয়ারি ২০২১:


পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানার অন্তর্গত, দেবীপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরেই চিকিৎসকের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসার পরিষেবা। বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থাকলেও ডাক্তার ও নার্স না থাকার জন্য সঠিকভাবে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। একজন মাত্র ডাক্তার তিনি মাত্র ৩ দিন সপ্তাহে আসেন। এবং তিন ঘন্টা করে থাকেন। পরবর্তী সময়ে মেমারি হাসপাতালে তিনি ডিউটি করেন। একসঙ্গে দুদিকে সামলানো কার্যত প্রায় অসম্ভব।

সিপিআইএম মেমারি ১ পূর্ব এরিয়া কমিটির উদ্যোগে মঙ্গলবার দেবীপুর নিশরাগরের   দেবীপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে বামকর্মী ও গ্রামবাসীরা অবস্থান-বিক্ষোভ ও ডেপুটেশন দেওয়া হয়। বিক্ষোভ সভা চলাকালীন ৫ জন প্রতিনিধি ৬ দফার দাবির ভিত্তিতে স্মারকলিপি তুলে দেন দেবীপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট সুদিন ভট্টাচার্যের হাতে। প্রতিনিধি দলে ছিলেন হীরুলাল সরেন, উদয় ঘোষ, অসিত রায়, ষষ্ঠীচরণ পাল, শঙ্কর কর্মকার।

বামপন্থী নেতা জগন্নাথ গাঙ্গুলি অভিযোগ করেন, হাসপাতালে নির্দিষ্টভাবে রোগী ভর্তি রাখার কোন পরিকাঠামো নেই। রাতের অন্ধকারে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যে অসামাজিক কার্যকলাপ চলতে থাকে। চিকিৎসকের অভাবে ফার্মাসিস্ট দিয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা চালানো হচ্ছে। সর্বক্ষণের কোন চিকিৎসক সেখানে নেই। ১০ বছর আগে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে যে সুবিধাগুলো পাওয়া যেতো এখন সে সব কিছুই নেই।

তাদের মূল দাবীগুলো হলো, সপ্তাহে ৬ দিন আউটডোরে ডাক্তারবাবু কে উপস্থিত থাকতে হবে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অবিলম্বে রোগী ভর্ত্তির পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে, স্টাফ নিয়োগ করতে হবে, স্টাফদের বসবাসের জন্য ও ইন্ডোর, জরুরী পরিষেবার জন্য গৃহ নির্মাণ করতে হবে, প্রয়োজনীয় ওষুধ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সরবরাহ করতে হবে। স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে ইত্যাদি।

দেবীপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট সুদিন ভট্টাচার্য কার্যত সব অভিযোগ স্বীকার করে নেন।

পার্শ্ববর্তী প্রায় ১৫ থেকে ১৭ টি গ্রামের বাসিন্দারা এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীল। এই এলাকা থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গ্রামীণ হাসপাতাল। কিন্তু দেবীপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র টি, পূর্ব বর্ধমান ও হুগলি সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত হওয়ায়। পার্শ্ববর্তী হুগলি জেলার বেশকিছু মানুষ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিষেবা নেওয়ার জন্য আসেন । কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন স্বাস্থ্য পরিকাঠামো বারংবার ঢেলে সাজানোর কথা বলছেন, ঠিক সেইসময় স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এহেন অব্যবস্থার ছবি সামনে আশায়, স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের মুখে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো।

অন্যদিকে বিজেপি নেতা ভীষ্মদেব ভট্টাচার্য জানান, বারংবার আধিকারিক সহ বি. এম. ও. এইচ এবং সি. এম. ও. এইচ. কে আবেদন করা সত্ত্বেও শুধু আশ্বাসই মিলেছে। মেলেনি কোন পরিষেবা। আগে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দিনে প্রায় সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ জন এর মতন রোগী আসতেন। কিন্তু বর্তমানে এই অব্যবস্থার ফলে মেলেনা কোন পরিষেবা। স্বাভাবিকভাবেই পাড়ি দিতে হয় মেমারি গ্রামীণ হাসপাতাল কিংবা বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
বিজেপি নেতা আরো দাবি করেন, নির্বাচনের পর তারা ক্ষমতায় এলে প্রথমে মানুষের সুবিধার্থে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র কে ঢেলে সাজাবেন। এখন দেখার বিষয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্য প্রকল্পের আওতায় থাকা সত্ত্বেও এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আদৌ পরিষেবা প্রদানের জন্য সচেষ্ট হয় কিনা।

Related posts

থাইরয়েডে থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রাকৃতিক উপায়

E Zero Point

করোনা আবহে এবার কদর কমেছে ভাদু গানের

E Zero Point

মেমারি পৌরসভার উদ্যোগে জলের ট্যাঙ্ক প্রকল্পের শিলান্যাস

E Zero Point

মতামত দিন