24/04/2024 : 1:58 AM
আমার বাংলা

উপহারে অক্সিজেন !

দিগন্তিকা বোস


মেমারির খুব কাছে রসুলপুর। রসুলপুরে বৈদ্যডাঙ্গা জয়যাত্রী সংঘের আমন্ত্রণে গত ২৭ সে ডিসেম্বর ২০২০ একটি অমুল্য উপহার পাই।বাড়িতে টবে রোপণ করি। দেখতে দেখতে একমাস অতিক্রান্ত। উপহার পাওয়া আম গাছে নতুন আমের আগমন বার্তা জানান দিচ্ছে তার মুকুল।তার সঙ্গে আমাকে দিয়েছে এই লেখার প্রেরনা।


বিশ্বে প্রতি এক মিনিটে গড়ে একুশ হেক্টর বনভূমি ধ্বংস হচ্ছে ! প্রতি বছর প্রায় ১৪.৬ মিলিয়ন হেক্টর বনাঞ্চল ধ্বংস হচ্ছে । এজন্য আমাদের অস্তিত্ব ও পৃথিবীকে টিকিয়ে রাখতে হলে প্রত্যেকেই কমপক্ষে একটি ফলের , একটি বনের ও একটি ঔষধি গাছ লাগিয়েই তা সম্ভব হতে পারে। আমরা সবাই যদি আমাদের জন্মদিনে, প্রিয়জনের বিবাহ, বিবাহ বার্ষিকী ইত্যদি নানান অনুষ্ঠান ৩টি করে চারা-কলম রোপণ করি ও উপহার দিই, মানুষের উচ্চতা সমান টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে পারি তাহলে অভাবনীয় সফলতা আসবে ।
মেসোপটেমিয়ায় রাজা নেবুচাদ নেজার তার প্রিয়তমা স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার উপহার হিসেবে প্রায় তিন হাজার বছর আগে ইউফ্রেটিস নদীর তীরে প্রথম ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যান তৈরি করেন। এখন কংক্রিটে ঘেরা আধুনিক যান্ত্রিক নগরীর মানুষগুলো কিছুটা নির্মল পরিবেশে বেঁচে থাকার প্রয়োজনেই নিজ বাড়ির বারান্দা, কার্নিশ ও ছাদে বাগান গড়ে তুলছেন।


কলকাতা, দিল্লি মুম্বাইয়ে গজিয়ে উঠছে একের পর এক অক্সিজেন পার্লার। অক্সিজেন পার্লার আবার কি ! যেখানে টাকার বিনিময়ে মিনিট পনেরো বিভিন্ন ফ্লেভারের অক্সিজেন নেওয়া যায় । এটাই প্রশ্ন, তবে কি অক্সিজেন পার্লার আমাদের ভবিষ্যৎ? এখন থেকে শ্বাস, প্রশ্বাস চালাতে কি যেতে হবে পার্লারে? এবার কি শ্বাস নিতেও লাগবে টাকা?


ছোট্ট থেকে পড়েছি গাছ আমাদের বন্ধু। গাছ আছে বলেই আমরা অক্সিজেন পাই। আবার সেই গাছই দূষিত কার্বন ডাই অক্সাইড টেনে নিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে।
তথ্য বলছে, একটা গাছ বছরে ২৬০ পাউন্ড অক্সিজেন উৎপাদন করতে পারে। একটি পূর্ণবয়স্ক গাছ যে অক্সিজেন বাতাসে ছাড়ে তা দুই জন মানুষ বা প্রাণী গ্রহণ করতে পারে বছরভর। বিশ্রামরত অবস্থায় গড়ে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ প্রতিদিন প্রায় 550 লিটার খাঁটি অক্সিজেন গ্রহণ করেন। 2.75 লিটারের বহনযোগ্য অক্সিজেন সিলিন্ডারের গড় ব্যয় 6,500 টাকা। এই হারে, একজন মানুষ প্রতিদিন প্রায় 1.3 লক্ষ টাকার অক্সিজেন গ্রহণ করেন একবছরে একটি গাছ যা দেয় তা হলো ১০টি এয়ারকন্ডিশনার সমপরিমাণ শীততাপ তৈরি করে, ৭৫০ গ্যালন বৃষ্টির জল শোষণ করে এবং ৬০ পাউন্ডের বেশি ক্ষতিকারক গ্যাস বাতাস থেকে শুষে নেয় । এক গ্রাম জলের বাষ্পীভবনে ৫৮০ ক্যালরি সৌরশক্তি ব্যয় হয়। একটি বড় গাছ দিনে ১০০ গ্যালন জল বাষ্পীভূত করে। ১ হেক্টর সবুজ ভূমি থেকে উদ্ভিদ প্রতিদিন গড়ে ৯০০ কেজি কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে এবং ৬৫০ কেজি অক্সিজেন দেয় সালোকসংশ্লেষণ এর সময়। ৫ হেক্টর পরিমাণ বনভূমি থাকলে এলাকার ৩-৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা কমে যায়, ভূমিক্ষয় রোধ এবং বাতাসে আর্দ্রতা বাড়ায় । উদ্ভিদ ৮৫-৯০% শব্দ শোষণ করে, শব্দ দূষণ থেকে আমাদের রক্ষা করে।
তাই ভবিষ্যৎ কী হবে ভাবতে হবে আমাদেরই। গাছ লাগাব না কি কৃত্রিম অক্সিজেন পার্লারে ছুটব?


তথ্য সূত্র: উইকিপিডিয়া, ইন্টারনেট

Related posts

বর্ধমানে আজ উন্মোচন হবে মহানায়ক উত্তমকুমারের মূর্তি

E Zero Point

ধর্ষকের শাস্তির অপেক্ষায় মেমারির নির্ভয়া

E Zero Point

হিন্দু মৃত যুবকের সৎকার কাজে এগিয়ে এলেন মুসলিম ছেলেরা

E Zero Point

মতামত দিন