জিরো পয়েন্ট নিউজ – জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, ৩০ জুলাই ২০২১:
বছর দুই-তিন আগে সীমিত সামর্থ্যকে পাথেয় করে দুস্থদের সাহায্য করার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছিল পথ চলা। এবার একটু অন্য জগতে পা-রাখল উত্তর দমদমের শরৎ বসু রোডের শরৎ কলোনির ‘আদরবাসা’। প্রসঙ্গত এটা আদরবাসার দশম পদক্ষেপ।
করোনা অতিমারির আঘাতে গত দেড় বছর ধরে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা কার্যত এলেমেলো। শুধু পশ্চিমবঙ্গ বা ভারতের নয় গোটা বিশ্বের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আজ বন্ধ। কোথাও কোথাও অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষাদানের কাজ চললেও প্রথাগত শিক্ষার স্বাদ পাওয়া থেকে সবাই বঞ্চিত। আবার সবার বিশেষ করে গরীব ঘরের বাচ্চাদের স্মার্টফোন না থাকার জন্য তাদের অনলাইনে পড়াশোনা করার সুযোগ নাই । এবার তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল আদরবাসা।
যাদের হাত ধরে আদরবাসা পথ চলা শুরু করেছিল তাদের অন্যতমা অর্পিতা ইন্দ্রের নিজস্ব বাসভবনে এলাকার প্রায় ১৫ টি শিশুকে নিয়ে গত ২৪ ই জুলাই শুরু হয় ‘আদরবাসা’-র পাঠশালা। শিক্ষিকার ভূমিকায় অর্পিতা ও অপর সদস্যা মধুমিতা। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন এলাকার বাসিন্দা সুজিত গুপ্তা। আপাতত ঠিক হয়েছে কোভিড বিধি মেনে প্রতি শনিবার আলাদা আলাদা ‘ব্যাচ’ কে শিক্ষাদান করা হবে। প্রথম দিনই ছেলেমেয়েদের হাতে পেন, পেনসিল, খাতা সহ বিভিন্ন পড়ার সামগ্রীর সঙ্গে সঙ্গে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার তুলে দেওয়া হয়েছে। ঠিক হয়েছে প্রতিটি ‘ব্যাচ’ এর হাতে পড়ার সামগ্রী এবং খাবার তুলে দেওয়া হবে। বন্ধুদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ পেয়ে বাচ্চারা খুব খুশি। পড়ার ফাঁকে ফাঁকে হৈ হুল্লোড়ে মেতে ওঠে রুহি , শ্রুতি, অহনা, মধুরিমারা।
জনৈক অভিভাবিকা বললেন – হোকনা সপ্তাহে একদিন তবুও তো পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ছেলেমেয়েগুলো একসঙ্গে আনন্দ করার সুযোগ পাচ্ছে। বাড়িতে বন্দী থাকতে থাকতে ওরা তো মনমরা হয়ে যাচ্ছিল।
অর্পিতা দেবী বললেন – লকডাউনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার জন্য এলাকার গরীব ঘরের বাচ্চারা শিক্ষা লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেখে আমি ও মধুমিতা তাদের শিক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। সমস্যা হচ্ছিল ঘরের।
তাই আপাতত নিজের বাসভবনেই শুরু করলাম। অন্যত্র ঘর পেলে একদিনের পরিবর্তে প্রতিদিনই শিক্ষাদানের চেষ্টা করব। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনি সুজিত বাবুর ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং অন্যদেরও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। একই সুর শোনা গেল মধুমিতার কণ্ঠে।