জিরো পয়েন্ট নিউজ – অঞ্জন শ্যাম, হলদিয়া, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২:
হলদিয়ার সুতাহাটা অনন্তপুর এলাকায় এবারে নিজের ২৩ বছরের বিধবা পুত্রবধূর বিবাহ দিলেন তার শশুর শাশুড়ি। বছর কয়েক আগে, নিজেদের একমাত্র ছেলে অর্ণব এর সঙ্গে বিয়ে দিয়ে শুভ্রাকে পুত্রবধূ করে ঘরে নিয়ে আসেন ওই এলাকার বাসিন্দা নকুল ঘাঁটি এবং নন্দিতা ঘাঁটি। বরাবরই শাশুড়ি বৌমার পরিবর্তে তার সঙ্গে শুভ্রা সম্পর্ক একেবারে মেয়ের মতোই। শুভ্রাও তাদের দুজনকে বাবা মায়ের মতোই শ্রদ্ধা করেন।
কিন্তু হঠাৎ করেই ২০২০ সালে শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারে। মহিষাদল এলাকায় পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তাদের ছেলে অর্ণব ঘাঁটির। ততদিনে শুভ্রা-অর্ণবের কোলে এসেছে বছর দেড়েকের শিশুপুত্র।
ছেলেকে হারিয়ে শোকবিহ্বল বাবা মা আবারও বাঁচতে শুরু করেন মেয়ে মানে বৌমা শুভ্রাকে আঁকড়ে। কিন্তু হাজার হোক শ্বশুর শাশুড়ি হলেও বাবা মা তো তারা। এতটুকু বয়সে বিধবা হয়ে সারাজীবন কেমন করে একা থাকবে মেয়ে? এই চিন্তাতেই পাগল হয়ে উঠছিলেন নন্দিতা এবং নকুল ঘাঁটি। অবশেষে পথ বেরোলো। বৌমা তথা মেয়ে শুভ্রাকে আবারও বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁরা। সেই মতো উপযুক্ত পাত্র খোঁজার কাজ শুরু হয়। হলদিয়া রামগোপালচকের ২৬ বছরের বাসিন্দা মধু সাঁতরা এই বিবাহের জন্য রাজি হন। তার সঙ্গেই শুভ্রার দেড় বছরের ছেলে মৈনাককে নিজের ছেলে হিসাবে গ্রহণ করেন তিনি। এই ঘটনায় রীতিমতো ধন্য ধন্য পড়ে গিয়েছে এলাকায়।
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এমনই আধুনিক হোক সমাজের সকলের মানসিকতা।
কুসংস্কার মুক্ত বিজ্ঞানমনস্ক হোক সবাই, সুস্থ সমাজ এভাবেই গড়ে উঠুক।