জিরো পয়েন্ট বিশেষ প্রতিবেদন, ৯ মার্চ ২০২২:
আন্তর্জাতিক শ্রমজীবি নারী দিবস উপলক্ষ্যে মেমারির কিছু মানুষের ইন্টার্ভিউ নেওয়া হয়েছিল “তিতাস” নামক সংস্থার পক্ষ থেকে। সেখান থেকে পাঁচজনের কথা এই প্রতিবেদনে পাবেন। সুলতানা (সাম্মানিক স্নাতক), অনন্যা কর্মকার (পশুসেবিকা, শিক্ষিকা), সন্ধান (নার্স), খুশবু শর্মা (সদ্য স্নাতক, কমার্স বিভাগ) ও অনুরাধা মণ্ডল (এল.এল.বি. ছাত্রী), এরা প্রত্যেকেই যুবসমাজের অংশ এবং মেমারির মেয়ে।
প্রথম প্রশ্ন, কেমন আছো?
সুলতানাঃ খুব ভালো নেই।
অনন্যাঃ ভালো আছি।
সন্ধানঃ বেশ ভালো।
খুশবুঃ মনে হয় ভালোই।
অনুরাধাঃ ভালো আছি।
দ্বিতীয় প্রশ্ন, নারীদিবস বলতে…
সুলতানাঃ . আমার মতে নামমাত্র একটি দিবস পালন করা হয় তাছাড়া আর কোনো ব্যাপারই নেই।
অনন্যাঃ কিছু না। নিজেকে গুরুত্ব দিতে শেখ।
খুশবুঃ কিছুইনা…..
অনুরাধাঃ নারীদের আলাদা করে কোনো দিন হয় না আমার মতে। একটি নারী যেভাবে একটা সমাজকে আলোকিত করে তার জন্য একটা special day পালন করে সম্মানিত করা উচিৎ।
সন্ধানঃ নারীদিবস আমার কাছে শুধু একটা দিন বা একটা তারিখ। যেদিন প্রকৃত অর্থে কোনো নারী নির্যাতিতা হবে না সেদিনই হবে আসলে নারীর জয়। আলাদা করে কোনো দিন বরাধ্য করতে হবে না।
তৃতীয় প্রশ্ন, স্বাধীনতা বলতে…
খুশবুঃ নিজের মতো করে বাঁচতে পারা।
অনন্যাঃ অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং উন্নয়ন মূলক চিন্তাধারা।
সন্ধানঃ আমার কাছে স্বাধীনতা মানে মুক্তি নয়, স্বাধীন মানে যা খুশি তাই করতে পারবো এমনটাও নয়। স্বাধীনতা মানে স্বাধীন ভাবে নিজের মতামত প্রসনের একটা সুযোগ পাওয়া। বাড়ির বাইরে একা যাওয়ার জন্য দিন নাকি রাত সেটা যেনো ভাবতে না হয়।
অনুরাধাঃ নিজের মত আমি কতটা প্রকাশ করতে পারছি এবং আমার মতটি কতটা কার্যকরি এবং কতটা গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে।
সুলতানাঃ নিজের মতো করে বাঁচা। যেখানে ভেদাভেদ থাকবে না। আর মানুষের কুদৃষ্টি থাকবে না.
চতুর্থ প্রশ্ন, আপনি কি নিজেকে স্বাধীন মনে করেন?
সুলতানাঃ একদমই না।
অনন্যাঃ না।
সন্ধানঃ না, আমরা মেয়েরা সেদিনই স্বাধীন হব যেদিন আমাদের উপর বাইরের লোলুপ মানুষের দৃষ্টি পরবে না।
খুশবুঃ হ্যাঁ……কিন্তু এখনও আরো হতে হবে।
অনুরাধাঃ হ্যাঁ অবশ্যই মনে করি।
পঞ্চম প্রশ্নঃ আপনার মতে, বিশেষভাবে মেমারির মতো শহরে (বা অন্য কোথাও) ‘ইন্ডিপেন্ডেন্টলি” বেঁচে থাকতে চাওয়া মহিলাদের সুবিধা ও অসুবিধা কী কী ??
অনুরাধাঃ তাদের মনের জোর থাকা সত্ত্বেও তারা হয়ত সেই Support পায় না। তারা হয়ত Mentally and physically পরিবারের কারো প্রতি নির্ভর৷ প্রথম থেকে তাদের কে বদ্ধ ঘরে রাখা হয়েছে। কুয়োর ব্যাঙ হয়ে আছে। তাদের কে এটাই প্রতিনিয়ত বলা হয় পারবে না, হবে না ইত্যাদি। তাই তারা মনে জোর নিয়ে এগোতে পারে না।
সন্ধানঃ নিজের শহর বলে এমন বলছি তা নয় সত্যি বলতে এখানে অনেক ভালো মানুষ আছে, যাদের আমরা প্রকৃত অর্থে পুরুষ বলতে পারি, তাদের কাছে সত্যিই নিজেকে সুরক্ষিত মনে হয়। তেমনই বেশ কিছু মানুষ আছে যারা এই চিত্রটাকে ভেঙে দিচ্ছে নিজেদের অশ্লীলতার মাধ্যমে।
খুশবুঃ এটা বলা খুব মুশকিল কারণ সবার সমস্যা আলাদা হয় কিন্তু একটা সমস্যা সবারই ইন্ডিপেন্ডেন্ট মেয়েদের সমাজ অন্য চোখে দেখে তাদের কাছে আমাদের মত মেয়েদের কোনো সম্মান হয়না।
অনন্যাঃ সুবিধা সহজে রোজকার করা যায় শিক্ষিত হলে। অসুবিধা আধুনিক শিক্ষার। সেটা শিক্ষাক্ষেত্রে এবং ভাবনাচিন্তার।
সুলতানাঃ একজন যদি স্বাধীনতার লড়াই লড়ে সেটা দেখে বা অন্য কাউকে বুঝিয়ে আরো পাঁচজন সেটা দেখে স্বাধীনতার লড়াই লড়তে পারবে এটাই সবথেকে বড়। কিন্তু কেউ কি চাইবে নিজের রাজত্ব ছেড়ে দিতে? কেউ নিজের অধিকারের লড়াই লড়তে চাইলে, নিজের অধিকার নিয়ে বাঁচতে চাইলে, নিজের স্বাধীনতা চাইলে সেটাইতো সবথেকে বড় সমস্যা সবার কাছে!
(বাকী কথা পরের পর্বে আগামীকাল)
প্রতিবেদকঃ STREETLIGHTS