06/05/2024 : 5:06 PM
অন্যান্য

বিশ্ব কবিতা দিবস – LIVE কবিতা

আজ বিশ্ব কবিতা দিবস
আজ সারাদিন জিরো পয়েন্ট-এর সকল কবিদের কবিতা প্রকাশ করছে…..
আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন….অবশ্যই কমেন্ট করুন…..


কবিতা তোমার কাছে

-আরণ্যক বসু

(  কবিতার জন্য আমি হাজার মাইল হাঁটতে পারি , আর , গরম গরম ডাল ভাত , একদলা আলুসেদ্ধর লোভে অন্তত দশ মাইল ! ও কবিতা , তুমি যে আমার লেখার টেবিল থেকে , মানুষের মিছিল থেকে ভাতের থালা পর্যন্ত দেঁড়েমুশে বেঁচে থাকা গো ! ❤ ❤ ❤ )

####
যেন হেঁটে যেতে পারি সেই টিলাজঙ্গল আর বনপলাশের কাছে ।
যেন ক্ষমাপ্রার্থী হতে পারি মুগ্ধতায় ।
যেন নম্রতার ভাষা শিখি আহত ফুলের কাছে ।
যেন শেষ উচ্চারণে বলে যেতে পারি — ভালোবাসি , খুউব ভালোবাসি ।
####
যেন গান গাই , মায়ের ভাষার গান ।
যেন স্তব্ধ হারমোনিয়াম আর
সাদা কালো অ্যালবামে রাখা থাকে ফেলে আসা জীবনের না বলা পরণকথা ।
####
যেন মায়ের গানের খাতা এঁকে রাখে , অপটু হাতের ছোঁয়া , রবিঠাকুরের চেনা ছবি !
####
জীবন জীবন , তুমি কবিতার মতো হয়ে ওঠো !
####
আমি আর কিছুই চাই না । ❤ ❤ ❤


আজকে

– অগ্নিমিত্র ( ডঃ সায়ন ভট্টাচার্য)

আকাশ হলো একটু বেশি
নীলচে আভায় ছাওয়া ..
হাজার মৃত্যুর মিছিলে
এইটুকু শুধু পাওয়া ।
বিষের ধোঁয়ায় পড়েছিল যে
প্রকৃতির নানা সাজ ;
বিষে বিষে বিষক্ষয়
তাই কি হলো আজ?
একটা বিষাণু শিখিয়েছে হায়
মানুষের মতো বাঁচা …
অবরোধেতে থাকবো না আর
খুলবো মনের খাঁচা ।।


প্রকৃতি ধ্বংস

মিরাজুল সেখ, জঙ্গীপুর, মুর্শিদাবাদ

মলিন প্রকৃতির সবুজ বুকে
আঘাত হেনে হেনে,
ক্রমাগত ধ্বংস লীলায়
মেতেছি সর্বজনে।

বৃক্ষ রোপন না করে যে
বিনষ্টের তালে,
প্রকৃতির তাই ভারসাম্য
আজ নাই পৃথিবীর কুলে।

আদ্রতার ও বেশ পরিবর্তন
ঘটছে ক্রমাগত,
বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা ও
বাড়ছে প্রতিনিয়ত।

শহর তলীর সৃষ্টি আসে
বন বিনষ্ট করে,
প্রকৃতির সোভাবরণ
ধ্বংসের সম্মুখে।

সবুজ রঙের প্রকৃতিটা
কৃত্রিম আবিষ্কারে
মানব জাতির ক্ষয়ুষ্নতা
প্রকৃতি ধ্বংসের মূলে।।।


“করোনা”

-পরেশ নাথ কোনার

শুনহ মানুষ ভাই,
প্রকৃতির চেয়ে বড় কেহ নাই ,
নহে কেহ মহীয়ান ;
যত ই কর চেষ্টা জয় করিবার,
পারিয়াছ কি তাই,
যত ই কর না অভিযান।
যত ই আঘাত করিয়াছ তারে,
দ্বিগুণ দিয়াছে ফিরাইয়া;
ঘুরিয়া দাঁড়াইতে কালঘুম ছুটিয়াছে,
বিপদ গিয়াছে বাড়িয়া।
কখনো আয়লা, কখনো ফণী,
দেখিয়াছি তাহার রুদ্র রূপ ;
দাবানলে জ্বলিয়াছে বন,
নিজেরাই বানাইয়াছি মরণ কূপ।
শুনহ মানুষ ভাই ,
প্রকৃতিরে বানাও বন্ধু,
দুষ্কর্ম হইতে রহ দূর ;
করোনা তোমাদের কাড়িয়াছে ঘুম,
নৃত্য করিতেছে মরণাসুর ।
ভয় পাইবার নাহি তো কিছু,
থাকিতে হইবে সাবধানে ;
মিথ্যা গুজব ছড়াইবে না ,
মিথ্যা গুজব দিবে না কানে ।
হাত মুখ সাবান দিয়া ধুইবে সবাই;
দূরত্ব বজায় রাখিবে সদাই,
জমায়েত করিবে কম রাস্তা ঘাটে ;
জ্বর,সর্দি -কাশি,মাথা ব্যাথা,
গলায় ব্যথা, স্বর ভঙ্গ, পায়খানা,বমি বমি ভাব,
বুকের ভেতর চাপ, তৎক্ষণাৎ যাইবে
হাসপাতালে,অন্যথা যেন না ঘটে।
মিথ্যা হুজুগে মাতিও না ,
মজুত হইতে বিরত থাকো ;
কালোবাজারির কালো হাত ,
আর শক্ত করিও নাকো।
কত শত দুঃসময় করিয়াছি পার,
হাতেতে ধরিয়া হাত ;
এবার ও করিব দূর ,সে প্রত্যয় আছে
বুকে, এবার ও হানিবো প্রত্যাঘাত।
শুধু ধৈর্য ধরো,নিয়ম মানো, আতঙ্কিত হইও না;
আতঙ্ক মানুষকে দূর্বল করে,
হরণ করে প্রতিরোধ ক্ষমতা ,বাড়ায় যাতনা।
অচিরেই হইবে দূর জমা হওয়া যত কালো মেঘ,
পরিষ্কার হইবে গগন ;
বাড়াও শুধু সহযোগিতা র হাত,
এখন যাহা অতি প্রয়োজন।।।


অস্তিত্বের জন্যে
— অশোককুমার লাটুয়া

উড়ে যাওয়া পাখি
জলের মাছ
মাটির তলার
পিঁপড়ের সাথে
কথা ব’লে জেনেছি
অস্তিত্বের জন্যে
নিজেকে খুঁজে দেখার মধ্যেই আছে জীবনের মহাকাব্য।
আত্মরক্ষার আকাশ, জল, মাটির গর্ভের অন্ধকার
মাঝেমাঝে বড় বেশি
প্রয়োজন।
স্বপ্নের চক্রব্যূহে
কবিতার যুদ্ধে
ছকভাঙা ভালোবাসা বাঁচতে শেখায়
ন্যূনতম
চাহিদায়।
উড়ে যাওয়া পাখি
গভীর জলের মাছ
পিঁপড়েরা
ভালো থেকো
আকাঙ্খার ভিতরে
মানুষের
মতো
পাকখাওয়া পৃথিবীর
কাছে।


আজব দেশ

-সুশান্ত পাড়ুই

কেলো,ভূলো, মোটকা আয় ছুটে, ছুটে আয়
নেলো দাদু হাঁক পেড়ে ডাক ছাড়ে হায়হায়।
—শুনলাম রোববার জেনেভার টিভিতে
আজব এক দেশ আছে দক্ষিণ মেরুতে।
দেখা মেলে বিটকেল অদ্ভুত মানুষের
ছেলেমেয়ে ন্যাঙটো কাঁধে ব্যাগ জিন্টস্ এর।
জন্মের সময়েতে দশ ফুট হয় যে
যত বড়ো হয় তারা ছোট হয় সাইজে।
মানুষেরা মাঠে শোয় ঘরে থাকে শকুনে
সারা রাত করে চাষ দিনে থাকে দোকানে।
কাঁকড়ারা বাস করে পাহাড়ের পাসেতে
কেরোসিন খায় লোকে শুয়ে থাকে ঘাসেতে।
পিঁপড়েরা ইয়া বড়ো হাতি তিন ইঞ্চি
সেখানের মন্ত্রী লিওনার্দো-দা-ভিঞ্চি।
জিরাফের গলা নেই শুয়ে থাকে চাতালে
বট পাতা খেয়ে মোটা অনায়াসে ছাগলে।
গরুগুলো হুলিহুলো ডাকে মিউ ম্যাও-ম্যাও
মগডালে মাছ ঝোলে পাড়ো আর খেয়ে নাও।
শুঁয়োপোকা করে ধোঁকা খায় নাকি লোকেরা
কল টেনে মদ খায় সুখী তাই খুব এরা।
বাঘ নাকি ভয় পায় তাড়া করে হরিণে
ঘুরে ঘুরে ছুটে মরে এখানে ও ওখানে।
তিমি মাছ করে নাচ ছাদে উঠে সারাদিন
পায়রা বাজায় ঢাঁক তাক্ ধিন তাক্ ধিন।
কুকুরের ল্যাজ সোজা গায়ে নেই চামড়া
চাই তার বাহা ঘর আহারে দু-কামরা।
ধরে ধরে সাপ খায় কেঁচো পাজি-নচ্ছার
প্রজাপতি যেন হাতি মোটাসোঁটা হাড় তার।
ব্যাঙগুলো খড় খায় দুধ দেয় দু-কিলো
ফিঙে পাখি ডিম পাড়ে এক-একটা ন-কিলো।
ডাক্তারে মাছ ধরে প্রতিদিন সকালে
উকিলেরা রুগি দেখে প্রতি হাসপাতালে।
স্কুলে পড়ে বুড়ো বুড়ি চাষ করে শিশুরা
মাস্টারে ছুট মারে এপাড়া ও ওপাড়া।
সাইকেল ন-চাকার বাস চলে হড়কে
ট্রেনগুলো জলে ভাসে মাসতুলে লটকে।
ভাবছো কি মিছে নাকি দেখা চাই দেশটা
টিকিটটা কেটে নাও করে দেখি চেষ্টা।
কেলো আয় ভুলো আয়, আয় ছুটে মোটকা
হবি নাকো কুঞ্জুস, বদমাস, কিপ্পন নোট-কা।
কাল তবে ভোরবেলা করে দিই যাওয়াতে
আজব সে দেশ এক বলে দিস পাড়াতে।


আঁকা বাঁকা পথে

মনোজ কুমার রায়

তোমাকে সেদিন দেখি আমি উর্মির মত কোনো আঁকা- বাঁকা পথে হারিয়ে গেলে।

যাযাবর হয়ে তমসাচ্ছন্ন আঁধারে তুমি কতটুকু নীচে যেতে পার দেখব আমি।

রবির কিরণে ঝিকিমিকি করা সৈকতে ,তূমি হও কোন স্পর্শে গাঁথা লজ্জাবতী গাছ।

আড়ালে লুকিয়ে দেখা অতীত যেন স্মৃতি হয়ে সেই আঁকা বাঁকা পথে ঘুরপাক খাচ্ছে।

তোমার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছিল কোনো এক বিশাল জলাধারের স্বচ্ছ নীল দর্পণে।

কি অহঙ্কার তোমার রূপের? সাগরে ভাসমান তরীর মতো কোনো
বিশাল ঢেউ লহমায় তোমার রূপকথার গল্প যেন
ইতিহাস হয়ে সাগরতলে আঁকা বাঁকা পথে ঘুরে বেড়াবে। ‌


আমি কবিতা

লিপি ঘোষ হালদার

আমি কবিতা- প্রাণের কথা,বাঁধা পড়ি ছন্দে–
মনের খাতায়,পাতায় পাতায় ব্যাথায় আনন্দে।
মনের ঘরে তিলে তিলে যতন করে গড়া,
নানা রঙে,নানা ঢঙে,কলমে পড়ে ধরা।
আকাশ বাতাস প্রকৃতি কলমেই দেয় ধরা,
শব্দে বাক্যে নিস্তব্ধে কখনো বা আনকোরা!
স্মৃতি বিস্মৃতি,শ্রদ্ধা-ভক্তি কিংবা মানবিক প্রেম-প্রীতি,
চেতনার জাগৃতি,জীবনের কথা বা সামাজিক রীতি দুর্নীতি।
যদি বা হই ছন্দবিহীন,তবুও তো শ্রুতিমধুর–
শব্দচয়নে,ভাষার বুননে,ভাসে আবেগের সুর।
আমায় ভাবছো নিতান্তই কিছু কথা!বাক্যসমূহ টান টান!
আমি কবিতা-সুচিন্তিত আশার কথা-জাগাতেও পারি প্রাণ।
যদি ভাবো- আমার কথা কিছু ঠিক,কিছু বা ভুল;
শোনো তবে- আমি যে গো চেতনার আলোকে ফোটা ফুল।
আমাতেই পাবে আকাশের রঙ,বাতাসের মিঠে সুবাস;
গোপন কত কথা,লেখনীতে পড়ি বাঁধা,তবু হৃদয়মাঝেই আবাস।
ঘটন অঘটন,প্রাণের অনুভূতি মিলেমিশে হই একাকার,
অলীক কল্পনা,বাস্তব জল্পনা পায় ছন্দ আকার।
কবিদের ভাষায় জন্ম আমার, বোঝে কি সকলজন!
খাদ্যে যেমন ভরে উদর,আমি ভরাই প্রাণ মন।
স্রষ্টার সৃষ্টি,মনাকাশে বৃষ্টি, স্বপ্ন আশা কল্পনা;
বয়ে চলি কলমে,বাস্তব অবাস্তব,হৃদয়ের আঁকা আল্পনা।
শয়নে-স্বপনে-আনমনে-জাগরণে,জনে-নির্জনে,ক্ষণে ক্ষণে কবিমনে মোর জন্ম;
মনের কথা,ছন্দে গাঁথা,সমাজ প্রকৃতির ছবি,আমি কবিতা-জানবে প্রজন্ম।।


খোলা চিঠি

-আঞ্জু মনোয়ারা আনসারী

শীত-বসন্তের সন্ধিক্ষণে, মন খারাপের বেলায় কেমন আছো?
জানো, আমাদের জানালার ওপারে বাতাবি লেবুর গাছে ফুল এসেছে, সন্ধ্যার নিলয়ে—
উঃ…কি মাতাল গন্ধ…..
খুব, খুব মনে পড়ছে তোমার কথা–
ফেলে আসা অতীত এতো যন্ত্রনার…ও তুমি, তুমি বুঝবে না।
জানো, পলাশ-ফাগুনের এই পাঁচমিশালি মন খারাপের সময় আমারো ভীষণ ভীষণ মন খারাপ তাই—
ভাবলুম, তোমাকে, খোলা একটা চিঠি লিখি।

তোমার মনে পড়ে, সেদিন তোমার হোয়াটসঅ্যাপ এর প্রান্তর থেকে; একটুকরো জমি চেয়েছিলুম, মনে পড়ে? তুমি, বলেছিলে—
কি করবে, মন চাষ? তবে….
আমি, না-না এমনি এমনি নয়, এমনি যে কিছু পাওয়া যায় না;
সেটুকু বোধবুদ্ধি আমার আছে তাই—
বিনিময়ে যা, হ্যাঁ যা চাইবে তাই দেবো। তবে…
প্লিজ ভালোবাসা চেওনা; ভালোবাসার এখন, বড্ডো আকাল–
তবে– একমুঠো প্রেম দিতে পারি। প্রয়োজন পড়বে, তোমার কবিতার….!

আবারও, কড়া ভাষায়, আমি কিন্তু, অর্থ দেব একেবারে কড়াই গন্ডায় মিলিয়ে।
তুমি, ঠোঁটের কোনায় একটু হেসে, তাই দিও;
অর্থের এখন, আমার খুব প্রয়োজন।
আধুনিক ডিজাইনের একটা বাড়ি বানাতে হবে,
ছেলেকে নামি স্কুলে ভর্তি করতে হবে;
অর্থ খুঁজতেই তো, আমি বেড়িয়েছি।
অর্থ খুঁজতে, বেড়িয়েছো তুমি! আর তোমার কবিতা?
ও….পেটে টান পড়লে, আর যায় হোক কবিতা হয়না।
না-না দোহাই তুমি কবিতাটা ছেড়ো না;
প্লিজ– কবিতালেখা ছেড়োনা….!!!

জানালার গরাদ ভেঙে, রাত বিছানায়–
লেবুফুলের গন্ধ মাখা জোৎস্নার লুটোপুটি;
আমি, ব্যালকনিতে ডায়েরির পাতা উল্টায়।
এখন, সপ্তঋষির দূরত্ব— তোমার আমার; অথচ,
আঙুলে আঙুল ছুঁয়ে ভালোবাসার অবারিত হাতছানি;
রাত, দিন, মাস, বছর, কাল, থেকে মহাকাল…
পার করে অপেক্ষার তটে– প্রতীক্ষায় প্রতীক্ষা—
যদি, যদি কোনো জন্মান্তর থাকে দেখো;
ঠিক, সেইদিন তুমি আমার হবে,
হবেই হবে……।

আঁধার কেটে কেটে, প্রথম বাঙমোরগের, জলরঙের ভোর।
একটু একটু করে পুবাকাশ আবির রঙে রেঙে উঠছে– তারপর,
তারপর সোনার থালার মত সূয্যি, আমি–
এক পৃথিবী লিখবো ভেবেছিলুম, কিন্তু একটা পাতাও লেখা হয়নি।
অমলিন সকাল, দৃষ্টির অগোচরে আকাশ মাটি এক হয়েছে!
আর প্রান্তর জুড়ে; আমার নাবলা বর্ণমালা, নীলকন্ঠ পাখির ঠোঁটে… মেঘেদের গা কেটে কেটে…. নীল আকাশের বুকে ভেসে চলেছে!
সেই সূদুরে, ধ্বনিত— নীলকন্ঠ পাখির হলুদ ঠোঁটে, আদিমতম শব্দ—-
আমি ভালোবাসি, ভালোবাসায়–
ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি……!!!


করোনা’ নিবারণ

-উত্তম কুমার খাঁ, বালিপুর, খানাকুল, হুগলী

হিংসা বিবাদ দ্বেষ বিদ্বেষ
ভাগাভাগি আর যত হানাহানি,
এক শ্রেণীর স্বার্থ-পূরণে
অপরে পায় কতো হয়রানি।
আজ অনৈক্যের বীজ বোনা নাই –
নাই জাতপাতের বৃষ-বৃষ্টি,
‘করোনা’ গ্রাসে সারা বিশ্বগ্রাম
চাই প্রতিরোধ চাই ঐক্য সৃষ্টি।

মৃত্যু মিছিলে কতো প্রিয়জন
হেথা হাহাকার হা-হুতাশ,
‘করোনা’ এনেছে এই মহমারী
আর তাতে এহেন বিশ্বত্রাস।
এটা বায়োকেমিক্যাল মারণাস্ত্র-
না কৃত্রিম কোন ভাইরাস,
সময় তার করবে বিচার –
প্রতিরোধে চাই আত্মবিশ্বাস।

চাই সঠিক পথ্য পরিচ্ছন্নতা প্রীতি
করব মারণ-ব্যাধির প্রতিরোধ,
মানব জন্মে মানবের কাছে ঋণ
তা হোক মানব সেবায় পরিশোধ।


বে দাঁড়া

বরুণ পাল

( বসন্তোৎসবের নামে কদর্য খেলার প্রতিবাদে )
দাঁড়া তবে দাঁড়া
দেখি রাজা কতো কড়া ?
জাগছে ভীষণ ভয়
নোংরা করছে উঠোনময় ।
ক‍্যা ক‍্যা বৃক্ষশাখে
তাড়ায় না ধরে রাখে ?
যায় রে বেলা –
একি নোতুন খেলা ?
কিচ্ছুর কিছু
না হয় পিছু ;
বুঝতে হবে ছাতা আছে
মাথার ওপর
রোদ এবং বৃষ্টি জলে,,,,,
দাঁড়া তবে দাঁড়া
দেখি,,,,,


কবিতা মাটির গন্ধ খুঁজি

-কবি রমলা মুখার্জী

এলাম এবার অনেক দিনের পর
খড়ের চালে নেই কো মাটির ঘর।
ঝাঁ চকচকে নিকানো নেই দাওয়া
হারিয়ে গেছে হাসনুহানার হাওয়া….
ধান শুকাতো সারা উঠান জুড়ে-
তালের সারি পদ্মদিঘির ধারে।
বট গাছটা কোথায় গেল তবে?
বামন হয়েছে সাজানো বাহারি টবে।
দাওয়ায় পেতে মস্ত শেতল-পাটি
গোল হয়ে পড়া, মাঝে একটাই বাতি।
কত কথাই পড়ছে মনে আজ-
রূপসী বাংলা পড়েছে নকল সাজ|
এলাম এবার অনেক দিনের পর,
এক ভাগেতে একটি দালান ঘর;
আর এক ভাগেতে সাজানো ঘরের টালি
আমি তো শহরে, থাকে শুধু উড়ে মালি।
দুই-তিনের সীমারেখা টানা ঘরে
খেলে না শিশুরা টিভি দেখে বই পড়ে।
পুকুরে শ্যাওলা ভরেছে কচুরীপানা,
ডাহুক, চাতক, পাখি নেই আর নানা।
হারানো মাটির গন্ধ মরি যে খুঁজে–
বৃথাই চেষ্টা! শুধু ভাবি চোখ বুজে।
গ্রামে গ্রামে গিয়ে গ্রামের খোঁজে ঘুরি….
কোথায় গ্রাম! গ্রাম গিয়েছে চুরি।


মুখোশ

-বিউটি আইচ মিত্র

নানা সাজে ছৌ-নাচ
নিত্যদিন মুখোশের আড়ালে
মায়াবী শব্দে মন
আনচান ক’রে কুঁকড়ে যায় দাবার একটা ভুল চালে
বোড়ে যায় সরে
মন্ত্রী দখল করে
সম্পূর্ণ রাজত্ব
আড়াই পা ঘুরে ঘুরে
ঘোড়া অবসন্ন।
নাট্যমঞ্চের পর্দা সরতেই
মুখশধারী দুর্গা
নারীরূপী পুরুষ……
মঞ্চের নীচে বসে থাকা
আমজনতা নির্বিকার
কখন এক পা ঘুরে
দুর্গা দেবে বিরাট লাফ
বাজারে বাড়িতে নেমে আসবে
অভাবের তাড়নায় কুপির আলো –
লন্ঠন ; সে তো কবে
বেচে দিতে হয়েছে ভাঙরি দামে….
তাই পুরানো কাশির। ওষুধের
শিশিতে পলতে হয়ে জ্বলবে
বাবার ছেঁড়া ধুতির কানি।।


সংকেত

-বিমল মণ্ডল

স্ব-শরীরে তুলে তুলে নেয় বর্ণমালা
আকাশ যাপন তখন করছে শেষবেলা
শব্দের ঢেউ ঢেউয়ের ঠোঁটে ঠোঁট চুম্বন
কবিতার ঘরে হলুদ বিকেল সন্ধ্যায় পণ।

পাতাঝরা গাছে পাখিরা শব্দের ঘর বুনে
অক্ষর অক্ষর ঠোঁটে কত শব্দ আনে
ভিজে যাওয়া নদী ঢেউ তুলে করে প্রেমালাপ
সংকেত তার শব্দমুখর আয়োজনে আলাপ।

বর্ণের গায়ে সাদামাটা শব্দের ব্যবহার
ছোটো ছোটো কথা সংকেতে আসে বলার।


 “কবিতা” তোমার জন্য

-সুতপা দত্ত

যখন ভালোবাসা সুর হয়ে ঝরে ,
মনের আনাচে কানাচে প্লাবন বয়ে আনে –

যখন ভালোলাগা আকাশ ছুঁতে চায় ,
দুহাতে আগলে রাখে শিশির কণা কে –

যখন চারদেওয়ালের ঘেরাটোপে
আটকে থেকেও মন ,
প্রান্তর পেরোয় এক নিমেষে –

যখন ভেজা ভেজা কষ্টগুলো ,
ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরে পড়ে
ডায়েরির পাতায় অকারণে –

তখনই কি সৃষ্টি হয় তোমার
মোহময়ী রূপের !
ছুঁয়ে যাও মন , রেখে যাও রেশ
হৃদয়ের তন্ত্রী – তে !

চাই না কবি হতে –
(শুধু ) আকণ্ঠ ভালোবাসায় ডুবে ,
আমরণ ভেসে বেড়াতে চাই –
তোমার হৃদয়ের অলিতে গলিতে । ।


মৃত্যু উপত্যকা

-অর্পিতা চ্যাটার্জী

জীবনের শেষে থাকে আর এক জীবন,
আমি আছি জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে
একটি দোদুল্যমান সাঁকোয় দাঁড়িয়ে।
সাঁকোটা দুলছে ভীষণ রকম,
সাঁকোর দুপাশটা ঘনো কুয়াশাময়,
আমি কোনদিকটাই দেখতে পাচ্ছি না।
কেবল অনুভব করছি সাঁকোটা দুলছে।
হঠাৎ একটা তীব্র আলোর ঝলকানিতে
আমার চোখ বন্ধ হয়ে গেছে,
আমি তখনও সাঁকোটাকে
শক্ত হাতে আঁকড়ে আছি।
সাঁকোর ঝাঁকুনি থেমে গেছে ততক্ষনে,
নির্ভয়ে চোখ খুলেছি আবার।
সাঁকোর একদিকে তখনও ধোঁয়াশা,
অপরদিকে অভুতপূর্ব দৃশ্য,
নীল পাহাড়ি নদীর বুক চিরে
দুধ সাদা ঝর্ণা,
লাল , হলুদ , সবুজ ফুলের বাগান,
পেঁজা তুলোর মেঘের ফাঁকে
ময়ূরপঙ্খী নৌকা ভাসছে।
এ দৃশ্য আমাকে অমোঘ শান্তি দিচ্ছে,
নিজের শরীর মন ভীষণ রকম হালকা লাগছে।
মনে পড়ছে না আমি কে? কোথায় ছিলাম?
পিছন ফিরে দেখি ভীষণ কালো ধোঁয়া,
প্রাণপন দেখতে চেষ্টা করলাম
কি আছে ওখানে?
হঠাৎ পিছন থেকে কেউ বলল
ঐ কালো ধোঁয়ায় মিশে গেছে
তোমার জীবনের দুঃখ,কষ্ট, চিন্তা, কর্তব্য,
পুড়ে ছাই হয়ে গেছে
তোমার সমস্ত আকাক্ষারা।
এখন তুমি জীবনের পরের জীবনে পৌঁছে গেছ,
এখানে শুধু আলো , আনন্দ আর অনাবিল শান্তি,
এই উপত্যকার নাম মৃত্যু উপত্যকা।।


এই দেখো কবিতা

-সুজান মিঠি

মেঘের থেকে যেমন করে চুঁইয়ে পরে ভোর
বাতাবি লেবুর ফুল ছুঁয়ে যায়,
পানা পুকুরের ঘাট!
ঠিক তেমনই শব্দেরা পাঁজাকোলা করে
তুলে নিয়ে যায় আমার সুখ,দুঃখ।
বিছানার উপর সজ্জিত থাকে অন্ধকার।
ছাদের উপর চাঁদের বাহার,
পথের ধুলোয় শেষ বসন্ত।
ওরা আমার চুলে বিলি কাটতে কাটতে বলে,
‘মস্ত পাহাড় লিখতে হবে!’
ঘুমের মধ্যে বালিশ জুড়ে লিখেই চলি,
ঘাট মাঠ নদী পাহাড় যা ছিল…
সবই তা!
একমুঠো রোদ্দুর ছুটে এসে জড়ালো
আমার গা।
চালকুমড়োর বোঁটা দিয়ে লিখলো,
‘এই দেখো, জীবন!
এই দেখো কবিতা!
এই দেখো কবিতা!’


অঝোর বৃষ্টিতে

-সুমিত্র দত্ত রায়

কাঁচের অভাবে স্বচ্ছ সরসীনীরে;
প্রতিচ্ছবিখানি দেখেছি বারবার,
ইচ্ছেমতো বলতেও পার আবার-
পূর্ণতা মাঝে কোন কাঁচ কাটা হীরে।

সাঁতার না জানা অশান্ত বুরবাক;
অসময় স্রোতে তল খুঁজতে গিয়ে,
কালস্রোতে হঠাৎ গিয়েছে হারিয়ে,
এখনো লোকে বলে,স্মৃতিটুকু থাক।

একদিন বুকের গভীরে এলোকেশী;
প্রতীক্ষার মর্ম বুঝতে না পেরে,
শুধুমাত্র নিজস্ব জেদের জেরে,
জীবন দরজা খুলে দিলো একাদশী।

আজো তবে দেখি মন হয় গো উদাসী!
পেলো কী সে, আরশি নগরের আরশি???


ভালোবাসি

-দিলীপ সাঁতরা

আমি ভালোবাসি আকাশ বাতাস
ভালোবাসি নির্বাক নদীর সুবাস
মানুষের প্রেম ভালোবাসা
এ সবের মাঝে দেখি যেন
স্তব্ধ হতে চলেছে
বিশ্বমারন করোনা ভাইরাসে।

এসো সবাই প্রতিঞ্জা করি
আজ একুশে মার্চ
আন্তর্জাতিক কবিতা দিবসে
আমরা সবাই ভাল ভাবে বাঁচতে চাই
এই সুন্দর ভুবনের জলহাওয়া ভালোবেসে।
পুরুষোত্তমপুরের বিশা লক্ষী মন্দির সাক্ষী থাক
তোমাদের দিয়েছিলাম কথা
ভালো থাক পৃথিবীর গাছ নদী মানুষ
পৃথিবীতে প্রবেশ করুক মুক্তবায়ু
বেঁচে থাক ঐ মেয়েটার বুকে করে নিয়ে যাওয়া করে ছাগল ছানাগুলো মার বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য।

ভালো থাক সোহিনী সুরীতা আর প্রেম ভালোবাসা
আমরা সবাই একদিন ইতিহাস হবো
তবে এখনি নয় এখনি নয়
নিশ্চিন্তে হোক চৈত্র অবসান
তোমাদের সাথে আছে কত কথা
তাই এখন থামাই আমার কাব্য গাথা।


শুভ বিশ্ব কবিতা দিবস

-রুদ্র প্রসাদ

জীবন স্রোতের ঘনঘটা মাঝে, মেঘের ছায়ারা আনমনা,
গ্রীষ্ম দাবদাহে তৃষিতের সাজে, সবুজ মায়ার শামিয়ানা।
হয়তো চায় না হ’তে কালবেলা, মরীচিকা ঝড়ে ভাসে তরী,
সময় গহ্বরে সয়ে অবহেলা, সাত সাগরের মাধুকরী।
বরষণে ভেজা অধীর মাতনে, শীতলতা চায় খোঁজ যদি,
শুধুই তোমার থাকার কারণে, প্রেম-ভালোবাসা হয় নদী।
বকুলের মালা পড়ে ঝরে ঝরে, লুটিয়ে শব্দ ক্ষণ যাচে,
চলার পথের কুহেলিকা হরে, গভীর যাপনে মন নাচে।

শিউলি শরতে নকসী কাঁথায়, কাব্য গাথা লিখে হেমন্ত,
ঝরাপাতার ঐ পাগলামী বায়, সেতারের সুরে অনন্ত।
চিঠির আশায় বিভাবরী দেখা, বন্ধ মুখের নীল খামে,
অজানা বিহানে সমাদর রাখা, তোমার দেওয়া চেনা নামে।
এঁকে রাখা সেথা অশোকের বনে, অনুভূতি কেঁদে দিশাহারা,
জোছনে মগন বিরহী গগনে, একা বাঁকা চাঁদ মাতোয়ারা।
জীবন ধারণে তোমা হতে সুখ, বুননে মনের কলরব,
দুর্বারে বাঁধা আশাবরী বুক, নিখুঁত চয়নে অবয়ব।

কখনো আলতো শীত পাখিদের কুহু কলতানে লেখ লেখে,
স্থবিরতা মাপে ভাটা-জোয়ারের, অধরা মাধুরী কি যে দেখে!
বিদুষী বিচারে অগাধ বিভাস, রূঢ় ভাঙাচোরা ব্যঞ্জন,
প্রয়োজনে মাপা অসার আভাস, বহু রঞ্জিত আয়োজন।
ছন্দের ভাষা অস্তিত্ব হারে, বাসন্তী রঙা আচরণে,
স্বাধীনতা তবু বৈচিত্র্যের ভারে, টলমল করে বিচরণে!
ইতি বিবরণে কুলীন সমাজে, তোমাতেই লীন শেষ কথা,
অনুপঙ্খের বিশদে বিরাজে, সালতামামির শত ব্যথা।

যখন এসেছে সাজ নব নবে, মনোহর রূপা কলেবরে,
করেছো আপন যতন গরবে, দিয়েছো রাঙিয়ে আপামরে।
ভেঙেছো-গড়েছো তনু বারেবারে, আপন খেয়ালে পথ চলে,
কাটিয়ে জড়তা আবাহন পারে, নতুনের ঢঙে কিছু বলে!
পরম যাতনে ভোলে নাকো ভবী, অশরীরে শ্যাম দেখে রাই,
প্রকাশে বিকাশে কত শত কবি, তোমারই ভাষে পেল ঠাঁই।
একাকিত্ব গাথা নিভৃতেই রয়, সমীপে ভাসায় যে ছবি তা,
আঁধারের বাতি অনুভবময়, ভীষণ সজীব সে ‘কবিতা’।।


নতুন আলো

-পিয়ালী মালাকার

কান্না আছে দুঃখ আছে, আছে স্বপ্ন জানি,
তত্ত্ব কথা হাজার আছে, যে যার মত মানি।
জীবন চলছে হেলে দুলে,নিজেই নিজের মাঝি,
বিপদ এলেও হাল ছেড়োনা, জিততে হবে বাজি।
কানের কাছে বলছে এসে শেষ বিকেলের আলো,
ভয় পেয়ো না ফিরবো জেনো, ঘুচিয়ে আঁধার কালো।
জীবন যখন মৃত্যু গামী, এই কথা আজ জেনেও,
ছাড়ছি না হাল সংকটেতেও, বিধির বিধান মেনেও।
আসুক বাধা পদে পদে, লক্ষ কিংবা হাজার,
নতুন সকাল আসবে দেখো ,রাত্রি শেষে আবার।


দিগন্ত

-শংকর হালদার

তুই দিগন্ত হয়ে-ই থাক
আমার দৃষ্টি গোচর
প্রতিনিয়ত ভেঙে যাক পাড়
আমার হৃদয়ে ।

আমি কুয়াশা’র প্রভাত চাইনে
বিপদ সংকেত বুঝি
ওর সারা অঙ্গ জুড়ে,
অন্তহীন দিগন্তের মোহিনী চক্রে
পুনঃ হারিয়ে ফেলি সন্ধানী চোখে।

দিবসের ক্ষণগুনি রাতের গভীরে বসে
আর তোকে আঁকতে গিয়ে বেসামাল
অসীম অম্বর হয়ে শ্বাস নেব
অন্তহীন দিগন্তের কোলে ।


করোনার সংক্রমণে

-মোঃ ইজাজ আহামেদ

করোনার সংক্রমণে বিশ্বের মানুষ আজ অসহায়;
আকাশে,বাতাসে করোনার রব ভেসে বেড়ায়;
চীনের বা আমেরিকার সীমানা অতিক্রম করে
বিশ্বের অধিকাংশ দেশে
আজ তার প্রভাব;
রোম, মক্কা, ভেনিস, নিউ ইয়র্ক, উহান,
লন্ডন, দিল্লি, কলকাতা আরো কত শহর স্তব্ধ আজ;
আজ তার ভয়ে কত শহর, কত গ্রাম সুনসান;
প্রার্থনায় যাওয়া বন্ধ ভ্যাটিকান সিটিতে, বন্ধ কাবাতে, বন্ধ কত মন্দিরে;
মানুষ আজ পড়েছে চিন্তাতে,
মানুষ আজ আবদ্ধ ঘরে ঘরে।
আজ সারা বিশ্বের মানুষ করোনার ভয়ে সন্ত্রস্ত;
আন্তর্জাতিক ব্যাবসা বাণিজ্য বন্ধ;
আন্তর্জাতিক জাহাজ,প্লেন চলাচল বন্ধ;
স্থলপথে আন্তর মহাদেশীয় সীমানাও বন্ধ;
মানুষের স্বার্থান্বেষী কৃতকর্মের জন্য
কোনো নোটিস দিয়ে নয়,
কাউকে জানিয়েও নয়,
আকস্মিকভাবে আবির্ভাব এই করোনার।
সহস্র মানবহিতৈষীরা করে চলেছে অক্লান্ত সংগ্রাম।
অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে
ডাক্তার, বিজ্ঞানী প্রতিশোধক তৈরিতে।
সব কিছু ভুলে সবাইমিলে একসাথে
সাহায্যের হাত বাড়িয়ে চেষ্টা করতে হবে
প্রতিরোধ করতে, চেষ্টা করতে হবে
এই মহামারীর হাত থেকে নিষ্কৃতি পেতে।


ঈশ্বর তুমি কোথায় ?

– অজয় কুমার দে

মরণ যজ্ঞে হও গো উদয়
ফেটে উঠুক রক্ত আকাশ…
মৃত্যু মিছিল ভুলুক হ্রদয়
সুন্দর হোক ধরণীর বিকাশ।

দুর্গামার হাতে ব্যথা
আল্লা নিচ্ছেন বিশ্রাম —
প্রভু যীশু পাননি ইসু
ঘুমিয়ে আছেন রাম !

মন্দির ,মসজিদ ,দরগা, গির্জায় —
পাথর ও হার মানে ,
বিশ্ববাসীর আর্তনাদ —
পৌঁছায় না তো কানে !

কোথায় আজ ঈশ্বর তুমি ?
ঘুমিয়ে কেন ওঠো !
সন্তানহারা আর্তনাদে
এবার তুমি জাগো ।

স্বার্থ শুধুই স্বর্গলাভ —
অসুর নিধনে ??
স্বার্থ কেবল সেবা গ্রহণ ?
নন্দন কাননে !

অনেক হয়েছে সেবা গ্রহণ
অনেক হয়েছে ক্লান্তি ,
করোনা নিধ্ণে মর্ত্যধামে
ফেরাও পরম শান্তি ।


তুমি আমার জীবনানন্দ

-রঞ্জন ভট্টাচার্য, বারাকপুর

 

জীবনচর্চার প্রথম কদম ফুল জীবনের যা কিছু সুখ দুখ বিবর্ণ সব তোমাকেই ….
করিনি তো কোন ভুল ।

লালায়িত জীবনে লোলুপতা
তুমি দিয়েছো মুছে
সেদিন থেকেই তোমাকে পেয়েছি
চাঁদের কণা রূপে।

তুমি জীবনের পরমানন্দ নন্দিনী রূপে তাই
যতবার দেখি সেই ফুল সাজে বুকেতে জড়াতে চাই।

তুমি যে আমার আশার আলো আর রত্ন ধন
তুমি আমার স্বর্গীয় সুখ হৃদয়ের কাঞ্চন।

তাই ছুটে যাই বারবার তাই একটু দেখবো বলে
পাইনি দেখা আমি বড় একা যেন ভাসছি গভীর জলে।

কোথায় তুমি হে রাজবালা আমি যে বনমালী
খুঁজে ফিরি তাই করি হাইফাই মনটা যে বড় খালি।

বিমর্ষ রাতে আরো প্রভাতে
এ কোণ্ স্বপ্ন দেখি
তুমি আছো ভেবে, ভেবে ভেবে সারা
তবু কাছে তুমি নেই সে কী !

রেখেছি তোমাকে মনে গভীরে দেবো বলে অঞ্জলি
তাই লিখে রাখি প্রাণপাত পাখি
জীবন কুসুম কলি।

কুসুমের মতো রং’টা তোমার কুসুমের মত মন
সব যাক মুছে সুখ দুখ ঘুচে
তুমিই আপনজন।


বিশ্বত্রাসী

-মনোজ ভৌমিক, ( গুজরাট)

ও চীনাম্যান করলিটা কি!
কী খেলি যে ছাইপাশ!!
তোর কারণে বিশ্ব দেখলো
করোনার ভাইরাস।
কেমনতরো লোক রে তোরা!
পেটে কি করা ধারণ!!
সাপ ব্যাঙ সব মহাখানা
বাদুড়ে নেই বারণ।
একি তোদের ছলচাতুরি!
না জাগতিক বিদ্বেষ!!
নিউক্লিয়ার বোমা না ফেলে
ভাইরাসে ধরা শেষ !!!
নিজের জালে নিজে ফাঁসলি
হাহাকার তোর দেশে!
কেমন করে প্রোটেকশন
ক’দিনেই নিলি শেষে!!
ভাবতে গিয়ে অবাক লাগে
কুটিল তোর ভাবনা,
ত্রাস ছড়িয়ে এ বিশ্বময়
সহানুভূতি পাবিনা।
প্লাস্টিক ডিম, প্লাস্টিক চাল
বাঁধাকপিটাও তাই,
এসব করে দিচ্ছিস নাকি
মনুষ্যত্ব নামে ছাই!
ভাবনাটাকে একটুখানি
লাগাম দেনা রে তোরা,
এমনিকরে মারিস কেন
মানুষের বুকে ছোরা।


গ্রহণ লেগেছে

-ভক্ত গোপাল ভট্টাচার্য (বালুরহাট)

প্রতিদিন সূর্যাস্ত দেখি , মাঝে মাঝে
ভাবি অবিশ্বাস করার কি প্রয়োজন?
স্ব স্ব কাজে ব্যস্ত পৃথিবী
ভবঘুরে, বাউন্ডুলে ভাবেনি কেউ ।
ঘুমিয়ে পড়েছে কৃষকের হাত

ফুরিয়ে গিয়েছে বীজ বোনা
আহ্নিক আবর্তে ঘোরে মাথা
ঘর কিছু আছে বলে…
গ্রহণ লেগেছে কি পৃথিবীর বুকে
ভূতদের নাচ দেখতে দেখতে অবাক শরীর
দারুণ নামহীন স্বাধীনতা গ্রাস করে প্রতিদিন ।

আজ এক নতুন সকাল
সূর্য তার ভিন্ন রং ছড়িয়ে দিয়েছে
ভাবি, আর কিছু দেখবো না
শত কবিতায় বিষে নীলবর্ণ দেহ
অবিরাম ধ্বনি আকাশ জুড়ে।


কবিতা

-দেবপ্রসাদ জানা (কলকাতা)

দুঃখ করো না কবিতা
আজ যারা তোমাকে
অবহেলায় মুখ বাঁকায়
তারাই একদিন তোমার পদতলে যৌবন খুঁজবে।
বইমেলায় যারা তোমাকে দেখে মুখ বেঁকিয়ে চলে গেছে
তারা আবার আসবে। তোমাকে আদর করে চুম্বন করবে।
কেন জানো?
আমি তোমাকে হারিয়ে শিখেছি কেমন করে ভালোবাসতে হয়।
আমি তোমার হৃদয়ে গোলাপ রেখে শিখেছি কল্পনায় কেমন করে ছবি আঁকতে হয়।
আমি তোমার হাতে হাত রেখে শিখেছি কেমন হাত ধরতে হয়।
আমি তোমার প্রেমে আঘাত পেয়ে শিখেছি কেমন করে তোমার প্রেমে পড়তে হয়।
তুমি যে যৌবনা চির যৌবনা।
একশ বছর আগেও তোমার যা রূপ ও বয়স ছিল আজো তাই।
হাজার বছর পরেও তুমি ভরাতে পারবে উন্মাদনায়।
তুমি যে চিরকুমারী মৃত্যঞ্জয়ী কবিতা।


উড়ে যায় শব্দরা

-সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়(কলকাতা)

টেলিফোনটা অনেকক্ষণ বেজে বেজে থেমে গেল।
তুমি কি আছো জেগে? আমি এখনও অপেক্ষায়
নিঝুম গভীর রাতে দাঁড়িয়ে করিডোরে
এখন ও কি শুনতে পাও গানের রিংটোন?

বেজে বেজে থেমে গেছে, থেমে যায় এভাবেই সব কিছু
ভালো আর লাগে না পৃথিবীর এত আয়োজন
উড়ে যায় শব্দরা রাতের আকাশে
শুধু তুমি আর তোমাতেই থেমে যায় যতিচিহ্ন

আমি তো দিয়েছি ডুব এলোকেশী ওই চুলে
চিবুক আর আঙুল ছুঁয়ে যায় ঋতুবতী প্রেম
কবিতার উঠোনে আসি, ধুলো ঝাড়ি রোজকার
খুঁজে খুঁজে ফিরি একা। বড়ো একা এই সময়।

সারাটা দিনের শেষে শিশিরের হাত ধরে
তুমি এলে, চলে গেলে, শুভ রাত্রি বলে
কত কথা জমে থাকে রাতের গভীরে
কাকে আর বলি বলো, তুমিই তো আশ্রয়।


সুখ বিলাস

-ভবানী প্রসাদ দাশগুপ্ত, বাংলাদেশ

জগতজোড়া সুখের কদর সহজে পায় না তারে দেখা,
রঙ বেরঙের সেই সুখ পাখিটা যেন মায়া মরিচিকা।
জীবনটাতো দুঃখের আকর কাটে প্রহর কর্মমূখর,
সুখের লাগি সবাই কাতর সারা জনমভর।
দুঃখের সুখের স্মৃতি দারুন এক আনন্দানুভূতি,
শান্তিতে যত মন ভরে যাক আসলে তা’ ক্ষনিক প্রাপ্তি।
কর্মজীবি কর্মশেষে ক্লান্তবেশে অবশেষে নিদ্রায় শান্তি খোঁজে,
কর্মে আনে সুখ-স্বচ্ছলতা সুনিদ্রায় তনুমনসাজে।
অনাচারী ব্যভিচারী সুখান্বষণে ভোগ বিলাসে মত্ত,
অনিত্য সুখের মোহমায়ায় সাধের মানবজীবন জ্বরা ব্যাধিগ্রস্ত।
ধনীর রুচি ভোগ প্রাচুর্য্যে জীবন কাটায় আতিশ্বৈর্য্যে,
সুখের লাগি গরীব মারে ধন সম্পদ লুট করে চাতুর্যে।
নিঃস্বজনে ঈশ্বর চেনে ভক্তিতে কায়মনে পরম তৃপ্তি আনে,
অভাব স্বভাব নিত্য সঙ্গী স্বল্পে তুষ্টি মনোভঙ্গি প্রকৃত সুখ বলে জানে।
সুখ জিনিষটা কি পরম বস্তু আদৌ কি তা’ কেউ জানে,
অনূভুতির বিবেচনায় ভোগে কিংবা ত্যাগে সুখ বলে মানে।
দুঃখে বাড়ে অস্বস্তি কষ্ট সুখে হয় মনতুষ্ট মানবের নিছক বিশ্বাস,
সুখ-দুঃখ পার্থিব ভোগ ত্যাগই পরম সুখ সুধীজনের সুমুখে প্রকাশ।


মনের মানুষ

-গৌতম মান্না (হাওড়া,বাগনান)

মনের মানুষ এলো ফিরে
কোনো এক অজানা গলিপথ বেয়ে!
অনেক দিনের ছোঁয়া হাওয়া
সুন্দর স্বপ্নের টানে;
হাতের পরশে নিবিড় কিছু আলোচনা,
চোখের দেখাই এক পলকে তাকিয়ে থাকা অভ্যাসে
হারিয়ে গেল সমস্ত জমানো কথা,
দুজনেই হতবাক হয়ে চেয়ে রইলাম কিছুক্ষণ!
বিলক্ষণের অপেক্ষাই আর নিজের মধ্যে রাখলাম না
আমি দুরন্ত মত চোখের কথোপকথনে–
অশ্রু ভরা ওই দুই নয়ণ শুধু ফিরে তাকার অপেক্ষাই।


অন্তর্দহন

-কেতকী মির্জা

 

রাতের নিস্তব্ধতায় শুনেছো কি ? সদ্য মা হারা নিশাচর শাবকের কান্না !
দেখেছো কি ? মৃত হিমশীতল শরীরের জমাট বাঁধা রক্তপিন্ড ।।

আমি দেখেছি ধান ক্ষেতে পড়ে থাকা ক্ষতবিক্ষত যুবতীর লাশ !
লোকচক্ষুর অন্তরালে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া সদ্যজাতর কান্না শুনেছি আমি ।।

চুরির অপরাধে গণধোলাই যুবকের নিষ্পলকে এক চোখ খোলা , নিস্পন্দন শরীর ঘিরে প্রিয়জনের কান্না দেখেছি !
সদা উচ্ছল সুন্দরী কিশোরীর অ্যাসিডে ঝলসানো বিকৃত মুখ ঢেকে,অসহায় চাপা দীর্ঘশ্বাস শুনেছি আমি ।।

রাতের অন্ধকারে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরানো বস্তিবাসীর বুকফাটা আর্তনাদে , ঘুম ভাঙ্গা শিশু কোলে মায়ের কাতর আকুতি দেখেছি !
গর্ভবতী মায়ের পেট চিরে ভ্রুণ নিয়ে উল্লাসে উন্মত্ত হওয়ার ঘটনাও শুনেছি আমি ।।

দেখেছো কি ? উনুনে হাঁড়িতে শুধুই জল চড়িয়ে , অনাহারি বাচ্চাদের ধোঁকাধারি মায়ের লুকিয়ে আঁচলে চোখের জল মোছা !
রাস্তার কঙ্কালসার ক্ষুধার্ত বৃদ্ধটিকে এঁটো শালপাতা চেটে খেতে দেখেছি আমি ।।

দেখেছো কি সোনার পালঙ্কে সাপ লুডো খেলা স্বৈরাচারী শাসকের সাম্প্রদায়িক বীজ বপনের ফসল !
কোনও এক মহামানবের নেতৃত্বে জমাদারের মজুদ গোলার ধান বিতরনের কাহিনী শুনেছি আমি ।।

আমিত্বের আয়নায় দাঁড়িয়ে নিজের চূর্ণবিচূর্ণ হৃৎপিন্ডের রক্ত ক্ষরণ দেখেছি আমি !
অব্যক্ত বেদনার কথা গুলি উপরে উঠে আসতে চাইলে , গলা টিপে নিচে নামিয়ে দিই । ক্ষয়ে যাওয়া মস্তিষ্কের তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে ছড়িয়ে পড়ার চিনচিনে ব্যর্থতার সুর তুমি শুনেছো কি ?


চিত্রকর

-হৃদয় কুমার দাস

 

তোর চোখ আঁকতে গিয়ে নিজের তারাই বৃষ্টি এঁকে ফেলি।
প্রচেষ্টা আমার অটুট থাকুক, এই ভরসায় চলি।
সেলফোনের ফটোর ভিড়ে তুই নয়, যেন এক আস্ত কঙ্কাল;
সঞ্চিত বোকাবাক্স, অনুভূতির কবরে আজ স্তুপের জঞ্জাল।

প্রাণ কোথায়? এ তো দেখি দেহের অজস্র সমাবেশ;
হৃদয়ের কলতান, কন্ঠের উষ্ণ শ্বাস, কোথায় প্রিয়ার অনন্ত আবেশ?
তোর ঠোঁটের হাসি আঁকতে গিয়ে, আপনভোলা এই বুক;
হাসতে হাসতে কান্না চোখে হঠাৎই ছলকে ওঠে মৃত্যু-সুখ।

তোর আকাশকুসুম মন আঁকতে, ঠুনকো হয় রং তুলি
প্রেম, শ্রদ্ধার হৃদয় দিয়ে সাজিয়েছি তোর রঙ্গোলী।
তোর ছবির ভিতর প্রাণ বসাবো, থাকবে সারাক্ষণ;
মোর জীবনের আয়ু বিধি, রাখবে যতক্ষণ।

শক্ত হাতে গড়বো তোকে, নাইবা হলাম চিত্রকর।
মনের অবুঝ কল্পনাতে, রবে রংতুলির সম্ভার।
গগন পটোর মতই তোকে এঁকে যাব বারংবার;
না হোস আমার জীবন-সাগর, নাইবা আমার অহংকার।


❤কবিতা দিবস

-হাস্নে আরা বেগম

কবিতা দিবস আজ
তাই কবিদের রব সাজ সাজ!
ভাষা আজ উন্মোচিত হবে-
কবির কলমে উড়িয়ে যত লাজ!
সময় যে কেড়ে নিবে তাদের কাজ!
অক্ষরের সংযমে বন্দী হবে যে শব্দ!
হরেক অনুভূতি হবে যে জব্দ!
আসবে সবে রঙ বেরঙের ছন্দে-
ভালো মন্দের বিশেষণের দ্বন্দ্বে!
শব্দরা সব নেচে উঠবে নব পোষাকের আনন্দে!
ভরে উঠবে সাদা খাতা
ফেসবুকে যে টাইম লাইন পাতা!
করবে সেথায় মাতামাতি-
হাজার কবির হরেক কবিতা!
লেখনী যাবে যে কাগজ ছাপিয়ে!
তারা আজ ঘুরবে
হোয়াটস্যাপ ফেসবুক দাপিয়ে!
লাইক আর কমেন্ট দিতে
বন্ধুরা যাবে আজ হাঁপিয়ে!
আমি আজ চুপ
বিগড়েছে মোর ফেসবুকের রূপ!
পারব না ঢুকতে তাতে যে লাফিয়ে!
নোটিফিকেশনে হাত দিয়ে
আছি তাই তাকিয়ে!
ঠিক হলে যন্ত্রের যাতনা
দেখব যখন টাইম লাইনে
ঘাড়টা বাঁকিয়ে!
আজ আর রাখবোনা বেদনার রূপ!
চেতনার সান্ত্বনায় থাকে সে চুপ!
কবিতার বেশে কবির যত অনুভূতি
কাগজ কলম কালির সংমিশ্রণে
হৃদয়ে এসে মিশে!
নড়ে উঠে হরেক অনুভূতি!
কেউ পাই স্বস্তি
কোথাও বা রোধ হয় হরেক গতি!
আজ যত কবি আঁকবে অনুভূতির ছবি!
সোনা রঙ্গ মাখবে দুহাতে
যতদূরেই থাক না রবি!
আজ শুধু বলব – শুভ হোক সবার ভবি!!


❤কোভিড-১৯

-আব্দুল হিল শেখ

মূর্ছিত দেশ, অসহায় জাতি, আতঙ্কিত বিশ্ব
করোনা তোমার থাবার লীলায় মানবজাতি ভস্ম।
মোদেরও যে টুকরো দোষ দিনকে দিন একটু একটু করে
মেতেছি ধ্বংসে প্রকৃতি ছেদনে তাই কোণঠাসা দিয়েছ করে।
স্থল-জলে যত অপকর্ম, অশ্লীলতায় ভরা ঘরবাড়ি
দিয়েছে বালাই ধরার তরে প্রভু মোদের মহামারী।
বুহান, ফ্রান্স, ইতালি, জাপান, আমেরিকা, কানাডা
বাদ নেইকো বিচিত্র ভারত, আমার সোনার বাংলা।
জ্বর ধরেছে, সর্দি কাশি, শ্বাসকষ্ট, গলাব্যথা
কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশন করেছে বুক ছ্যাদা।
দিনকে দিন বেড়েই চলেছে অস্বাস্থকর পরিবেশ,
লাগেনা ভালো কাজ করিতে মন শেষ হয়না অশ্রুলেশ।
পরিষ্কার , পরিচ্ছন্নতাই আসল ব্যাধির দাওয়া,
নোংরা থেকোনা মানবজাতি হাত ধুয়ে করো খাওয়া।
হে প্রভু ক্ষমা করো মোদের দূর করে দাও আঁধার রাতি,
হেদায়েত দাও মোদের ‘পরে দূর করে দাও ব্যাধি।
তুমিনা রহমান, দয়ার ভান্ডার দয়া করো তাড়াতাড়ি,
ওগো খোদা বাঁচাও মোদের তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি।


❤সুখ

-সুপর্ণা সেনগুপ্ত

সাগর সেচে কুড়িয়ে পেলাম একটি ছোট কণা
ঝিনুক গাঁথা মুক্তো ভেবে
হলাম অন্যমনা।
মুক্তো না তো-এ যে দেখি
সাদা পাথর নুড়ি,
আকাশ পারের আকাশী গায়
সোনার লুকো চুরি।
উতল বাতাস লাগল বুঝি
বুকের বেলাভূমে
শিশির ছুঁলাম পদ্মপাতায়
ভোরের আলো চুমে।
ভাট ফুলের ঐ গন্ধে ভেজা
জোছনা ভাসা রাত
শুকনো মরু সবুজ হলো
উছল নদী খাত।
মুক্তো যদি নাই বা পেলাম
নেই কো মনে দুখ-
নুড়ির বুকে পেলাম খুঁজে
বৃষ্টি ভেজার সুখ।

আসুন সকলে মিলে একদিন গৃহবন্দি থেকে
চিরদিন বাইরে থাকার পথকে প্রশস্ত করি।


❤জনতা কারফিউ

-সনাতন স্যর

 

করোনা ড্রপলেট ইনফেকশন
ছড়িয়ে রাস্তা ঘাটে,
জনসমাগম বাসে,ট্রেনে আর
মলে,বাজার হাটে।।

দশ থেকে বারো ঘন্টার পরমায়ু
করোনা একটি স্থানে,
সুসময়ে চাই তার অকালমরণ
বিশেষজ্ঞরা তা জানে।।

না হয় মানলাম জনতা কারফিউ
গৃহবন্দি চোদ্দ ঘন্টা,
সকলের প্রচেষ্টায় পারবো ভাঙ্গতে
ভাইরাস সংক্রমণের চেনটা ।।

আজ রবিবার ছুটির দিন তাই
রবো ঘরে সারাক্ষণ,
নেই বাধ্যবাধকতা অকারণে বাইরে
বেরোনোর প্রয়োজন ।।

হয়তো জনতা কারফিউ নয় সত্য
এক ও একমাত্র পথ,
সচেতনতাতেই ঠেকাতে পারবো
করোনার বিজয়রথ ।।

এমারজেন্সিতে মান্যতা দেবো আজ
সি এম, পি এম এর বাণী,
নয় রাজনীতি রুখবো সবার সদা
করোনায় প্রাণহানি ।।

একদিনের জনতা কারফিউয়েতে
থাকি যদি উদাসীন,
অশ্রু নয়নে দেখতে হবে আগামীতে
মানবজীবন বিলীন।।

অসচেতন হলেই জেনো এ জীবন
যাবেই বারোটা বেজে,
রাখলে পা এ দেশে বিশ্ব মহামারী
কোভিড ঊনিশ থার্ড স্টেজে।।

মানবে না তারা যারা চিরকাল
চোখ থাকতেও অন্ধ,
ন্যাশনাল এমারজেন্সিতেও কথায়
খোঁজে রাজনীতির গন্ধ ।।

আছে স্বাধীনতা মানা না মানা
জনতা কারফিউ,
অমান্যে হবে অস্তিত্বের সংকট
থাকবে না আর কেউ ।।

সদা সচেতন আর দায়িত্ববান
মোদের গরিব দেশ,
দেখুক বিশ্ব মোরা রুখেছি প্রথম
করোনা বৃদ্ধির রেশ।।


❤সামনে কার্ফু, আর কবিতা
-মনকলমী

বিভেদ অনেক তবু
মাঝে মাঝে এক হই,
মিলে চলার মাঝে
কিছু আড়ি করবই।

শিশুবেলা ভোলোনি তো
মনে করে দেখো আজ
কোন কথা শোনা নেই
ভন্ডুল সব কাজ।

দিন গুলো চলে গেছে
অভ্যাস যায়নি।
সুযোগ পেলেই ঠিক
সেসব ঝালিয়ে নি।

আজ তো পৃথিবীতে
কোরোনার বড়ো থাবা
রাম শ্যাম যেই হও
দানা ভয় ওরে নাবা।

কাল আছে বড়ো করে
Gap এক বাড়ানো,
মই সিঁড়ি সব কেড়ে
কোরোনা কে তাড়ানো।

দেখা যাক কদ্দুর
ওর পিছে ছোটা যায়
সফল হতেও পারি
যদি সব মেলে হায়।

তর্কেতে কাজ কি
ঘরে বসে থাকব,
ভাববো সুখেই আছি
ফেসবুকে লিখব।

♥♥♥♥♥♥♥♥♥

Related posts

লকডাউনে বাড়ির বাইরে গেলে হতে পারে দু’বছরের জেল | মেমারি শহরে লকডাউনে পুলিশ কার্যরত

E Zero Point

ফেসবুকে করোনা নিয়ে ভুয়ো খবর পোস্ট করে, ফালাকাটার এক যুবক গ্রেফতার

E Zero Point

মেমারি পুলিশের মার্কেট পরির্দশন

E Zero Point