26/04/2024 : 6:13 PM
অন্যান্য

যেমন দেখি তাঁকে : পরাগজ্যোতি ঘোষ ~ (তৃতীয় কিস্তি)

পরাগজ্যোতি ঘোষ

দুটো কিস্তি ইতিমধ্যে আশাকরি আপনারা পড়ে ফেলেছেন। কেমন লাগছে – অবশ্যই আমাদের পত্রিকায় ‘পাঠকের মতামত’ কলমে লিখে জানান। ‘জনতা জনার্দন’এর আশীর্বাদ ই আমাদের পরম পাথেয়। একটা কথা সবসময় মনে রাখবেন যে পরিস্থিতিই আসুক না কেন – সব অবস্থার মধ্যে একটা পজিটিভ দিক আছে। যেমন ধরুন এই ‘লকডাউন’ পরিস্থিতি। হাজার ক্ষতির মাঝেও এর কয়েক লক্ষ গুণ লাভের দিক আছে। করোনা ভুলিয়ে দিয়ে গেল ‘মদ’। সমাজকে এই বিষ যে কতটা পিছনে ফেলে রেখেছে তা কথায় প্রকাশ করা যাবে না। দ্বিতীয় হলো ‘লটারী’ কাটার নেশা। এর মতো মারন নেশা জগতে বোধ হয় আর নেই। ‘লকডাউনে’ এই ব্যবসা বন্ধ হয়ে হয়তো এর বিক্রেতাদের ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু বেঁচে গেছে লাখ লাখ পরিবার। অত্যন্ত বাজে নেশা, স্বয়ং ‘যুধিষ্ঠির’ পর্যন্ত্য তাঁর বৌ কে বাজি রেখেছিলেন এই খেলায়। তাই সাধারণ মানুষ তো দূর অস্ত। দীর্ঘদিন এই লটারী খেলা বন্ধ থাকার ফলে – যে নেশা কেউ ছাড়াতে পারতো না – তা মনে হয় অনেকেই ভুলে গেছেন। এছাড়াও অবাধ যৌন-মেলামেশা, অবৈধ প্রেমের ক্ষেত্রেও মানুষকে বাধ্য করেছে সংযমী হতে। অসহায় মানুষদের ‘অনুদান’ এর মধ্য দিয়ে ফের জাগ্রত হয়েছে দানের অভ্যাস। আর ‘করোনা’ মানুষকে চিনতে শিখিয়েছে ‘ঈশ্বর’ কে। তাঁর ‘অনুশাসন’ যে কত কড়া সেটা অহংকারী মানব জগৎ সমগ্র বিশ্ব জুড়ে হাড়ে হাড়ে অনুভব করছে। তাই একথা বুক ঠুকে বলা যায় – সব (নেগেটিভ এর মধ্যেই পজিটিভ আছে।)

শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র বললেন –

“অন্যায় বা অত্যাচার
বিশেষতঃ অশুভসন্দীপী যা –
তা যার – প্রতিই কর না কেন –
প্রতিক্রিয়ায় নানা আপদ মূর্তিতে –
তোমার কাছে হাজির হবেই কি হবে,
রেহাই পাবে না তাঁর আক্রমণ থেকে তুমি,
তাই, হিসাব করে চলো।”
(সদ্ বিধারনা, ১ম, বানী ৩৮)

পড়শীরা নিপাত যাবে আর আমরা সুখে থাকব তা কোনোদিন হয়নি আর হবেও না। তাই সকল সৃষ্টির প্রতি আমাদের উদার হতে হবে যতটুকু সম্ভব। অনেক সময় মানুষকে বিদ্রুপ, অপমান অত্যাচার করতে আমাদের আনন্দ হয়। এ যে কতবড় ভয়ানক রোগ তা একদিন অশুভ পরিণতি হয়ে আমাদের কাছে ফিরে আসে। এর থেকে আমরা কেউ ই রেহাই পাই না। পূর্ববর্তী কিস্তিতে আমি শ্রী শ্রী ঠাকুরের পঞ্চবিধান নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিলাম। তন্মধ্যে তিনটি বিধান – ‘যজন’, ‘যাজন’ ও ‘ইষ্টভৃতি’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এবার আসি চতুর্থ বিধান – যা সবথেকে বড় বিধান নিজের জন্য, সমাজের জন্য ও রাষ্ট্রের জন্য। সেটি হলো ‘স্বস্ত্যয়িনী’। সু অস্তি-অয়ন। নিজের শরীরকে ঈশ্বরের মন্দির রূপে পূজা করতে হয়। তাই ‘সদাচার’ পালন যেটি ঠাকুরের পঞ্চম ও শেষ বিধান তা দারুন ভাবে মেনে চলতে হয়। এবার প্রশ্ন হলো শরীর কি চায় – সেটি ‘মন’ আর ‘বিবেক’ দু’জনকেই প্রশ্ন করুন। দেখবেন ‘মন’ বলবে সেই সব কথা যা আপনার শরীরকে কাবু করে, দুর্বল করে ভবিষ্যতে। আর বিবেক বলবে সেই সব কথা যা আপনার শরীরকে সুন্দর করবে, সুস্থ করবে, ভালো রাখবে।
তাই ঠাকুর বলেন – “মনের অনুসরণ করো না বিবেকের অনুসরণ করো”।

শ্রী শ্রী ঠাকুর বলেন –

“মাছ মাংস খাসনে আর/
পেঁয়াজ রসুন মাদক ছাড়।”

এ যে কতবড় কথা যারা এটি অক্ষরে অক্ষরে বা আংশিক ভাবে মেনে চলেন উপলব্ধি করেছেন। সহজপাচ্য খাদ্য যে আমাদের পাকস্থলীকে কতটা ভালো রাখে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। শারীরিক বিধানকে উত্তেজিত করে সেই সব খাবার না খাওয়াই ভালো। উদাহরণ স্বরূপ বলতে পারি – আমিষাষী প্রানীদের বিষ্ঠার ‘দুর্গন্ধ’। কেমন দেখুন- বাঘ শিকার করার পর – সকলেই জানেন সব মাংস খায় না। ফেলে রেখে দিয়ে যায় এবং পরে এসে খায়। যাতে অন্য প্রানী সেই মাংস খেয়ে না ফেলে বাঘ তার পাশে মলত্যাগ করে যায়। যাতে সেই মলের দুর্গন্ধে অন্য প্রানী না আসতে পারে। অপরদিকে তৃনভোজী গরুর গোবর পূজা আর্চায়, বাড়ী নিকোনোর কাজে ব্যবহৃত হয়। আরও বলতে পারি একজন আমিষাষী মানুষ যদি নিত্য একটি চারাগাছের গোড়ায় মূত্রত্যাগ করে গাছটি মারা যায়। কিন্তু একজন সত্যিকারের নিরামিষাষী ঐ কাজ করলে গাছটি তরতর করে সজীব হয়ে ওঠে। এগুলি কোনো গাঁজাখুরি কথা নয় নিজের জীবনে প্রমাণ পেয়েছি তাই লিখছি।
(ক্রমশঃ)

Related posts

প্রধানমন্রী গরীব কল্যাণ যোজনা, বিস্তারিত ভাবে জানুন

E Zero Point

আজ রাত ৮ টায় দেশবাসীর জন্য ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীঃ

E Zero Point

করোনার রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

E Zero Point

মতামত দিন