বিশেষ প্রতিবেদনঃ রমজান মাস চলছে৷ মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা ধর্মীয় রীতি মেনে উপবাস পালন করছেন৷ প্রবল গরমের মাঝে রমজান মাস পড়েছে। এই গরমে রোজায় বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা ও জটিলতা দেখা দেয়। যেমন : অতিরিক্ত জলশূন্যতা, পেটের ব্যথা, মাথাব্যথা৷
১. জলশূন্যতাঃ অতিরিক্ত গরমে রোজাদারদের সবচেয়ে বেশি যে সমস্যা হয় সেটি হলো জলশূন্যতা। এতে মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, চোখে ঝাপসা দেখা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।এই অবস্থায় ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত বেশি করে তরল খাবার খেতে হবে। একসঙ্গে বেশি জল পান না করাই ভালো৷ শরীরে জল ধরে রাখে এমন শসা, তরমুজ খাওয়া দরকার৷
২. পেটের ব্যথাঃ গরমে উপবাসের কারণে শরীর দুর্বল থাকে৷ আবার নিয়মিত খাবারের অভ্যাস পাল্টে যাওয়ার কারণে পেটের পেটের পীড়া, বদহজম, পেট ফুলে যেতে পারে৷ এই কারণে ব্যথা হতে পারে৷ তাই শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় এমন খাবার খাওয়া যাবে না। শরীর ঠিক রাখতে ভাজা বা অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এই ধরনের খাবার শরীরকে গরম করে জল বের করে দেয়। কম চর্বিযুক্ত খাবার খেতে হবে। শাকসবজি, লাল আটার রুটি, ঢেঁকি ছাঁটা চাল, সামুদ্রিক মাছ, জলপাইয়ের তেল, সূর্যমুখীর তেল ইত্যাদি।
৩. মাথাব্যথাঃ রমজান চলাকালীন সমস্যা হলো মাথাব্যথা। সাধারণত দীর্ঘক্ষণ জল না খেলে পা-মাথা ধরা ও তার থেকে ব্যথা হয়৷ সেই সময় চা-কফি, কোমল পানীয় জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না। অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার, শুকনো ও প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। পরে উপবাস ভাঙার সময় পরিমাণ মতো জল খেতে হবে৷
৪. ক্লান্তি ভাবঃ রোজার সময় স্বাভাবিক ঘুম ব্যাহত হয়। এতে ক্লান্তি ভাব বাড়ে। পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। বেশি রাত জাগা যাবে না।
৫. পিপাসাঃ রোজার সময় অনেকেই অভিযোগ করেন পিপাসা পাচ্ছে বলে। তাই ইফতারের সময় বেশি বেশি বরফ দেওয়া জল পান করেন। এটি করা যাবে না। এই ঠাণ্ডা জল রোজাদারদের রক্তনালীর সংকোচন বাড়িয়ে হজমে সমস্যা করে। তাই ইফতার ও সেহরিতে বরফযুক্ত জল পান না করে সাধারণ জল পান করুন।
৬. মনোযোগহানিঃ রোজা রাখার চার ঘণ্টা পর থেকে শরীরের গ্লাইকোজেন ভাঙতে শুরু করে। এই গ্লাইকোজেন ভাঙার পরিমাণ বিকেল ৩টা বা ৪টার দিকে অনেক বেড়ে যায়। আর এই কারণে মনোযোগের ঘাটতি হয়। এই সমস্যা প্রতিরোধে রোজাদারদের কখনো সেহরি বাদ দেওয়া যাবে না। সেহরি খেতে হবে একেবারে শেষ রাতের দিকে।
৭. খাদ্যে বিষক্রিয়াঃ গরমে আবহাওয়ায় খাবার দ্রুত পচে যায়। এতে ফুড পয়জনিং বা খাদের বিষক্রিয়ার সমস্যা হয়। তাই ইফতার বা সেহরির সময় বাইরের খাবার এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। গরম গরম খাবার খেতে হবে। যারা খাদ্য রান্না ও সংরক্ষণের সঙ্গে জড়িত, তারা কতটুকু পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলছে, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।