পরাগ জ্যোতি ঘোষ, রানীগঞ্জ : পশ্চিম বর্ধমানের রানীগঞ্জের বক্তারনগর রেলগেটের বাসিন্দা ববিতা সরেন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ববিতা লক্ষ্য করেন তার মায়ের পানীয় জল আনতে যাওয়ার কষ্ট । পাড়ায় তিনটে পানীয় জলের টিউবয়েল আছে কিন্তু তাদের বাড়ি পাড়ার এক প্রান্তে। সেখান থেকে বয়স্ক মায়ের পক্ষে জল আনাও বিরাট কষ্টকর ।এছাড়াও যাদের বাড়ির সামনে টিউবওয়েল গুলি আছে তাদেরই জোর বেশি, জানান ববিতা। তাই মায়ের পক্ষে দীর্ঘক্ষন লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে জল আনা যে কি বেদনাদায়ক তা পর্যবেক্ষণ করে ববিতা ভাবতে শুরু করে কি করা যায় মায়ের জন্য । বাবা সামান্য কাজ করেন একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে । সেখান থেকে স্বল্প আয়ের থেকে মেপে মেপে চলতে হয় তাদের। তাই বাড়িতে একটি ব্যক্তিগত টিউবওয়েল বসাবেন তারও কোন উপায় নেই।
এই অবস্থায় ববিতা নিজেই সিদ্ধান্ত নেন যে নিজেই একটি পাতকুয়া করবেন । আগে থেকেই কয়েক মাস ধরে নিজেই ছয় ফুট মত গর্ত করেন নিজের বাড়িতে। যখন বাড়িতে আসতেন ছুটির দিনে তখন তিনি এই কাজ করতেন। বাকি কাজটুকু দারুণভাবে সেরে নিলেন এই লক ডাউন এ । ববিতার পরিশ্রম বৃথা যায়নি জলের দেখা মিলেছে। তবে জলটা এখন ঘোলাটে । আশাবাদী এটাও আরেকটু গর্ত করলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। সাঁওতাল পরিবারের মেধাবী মেয়ে ববিতার এমন কার্যকলাপে এলাকায় সাড়া পড়ে গেছে । ববিতার মা খুব খুশী মেয়ের এমন কর্মকাণ্ডে। তিনি জানান শিক্ষিত মেয়ে সম্পূর্ণ নিজে পরিশ্রম করে কূপ তৈরি করে যে মাতৃভক্তি দেখিয়েছে তা সকলের কাছে উদাহরণ। অভাবের সংসারে এমন পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে সমস্যার সমাধান ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পথ দেখাবে।