সুমিত চৌধুরী
কলেজ স্ট্রিটের পিপলস কিচেন অন্তত ৩১ শে জুলাই অব্দি চালু থাকছে জানি। এখন প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ লোক খাচ্ছে কলেজ স্ট্রিটের এই কিচেনে। প্রেসিডেন্সি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্যাসাগর কলেজ সিটি কলেজ এবং আরো বেশ কিছু কলেজ ইউনিভার্সিটির ছেলেমেয়েরা কলাবাগানে রান্না ঘর বানিয়ে এই কিচেন টানা চার মাস টেনে দিল।
মুলধারার সংসদীয় বামেদের বাইরে অন্য ধারার বামপন্থী ছাত্র যুব সংগঠন কোয়ারিনন্ড স্টুডেন্ট-ইয়ুথ নেটওয়ার্ক QSYN এই কলেজ স্ট্রিটের রান্নাঘর ছাড়াও লাকডাউনের পর্বে প্রায় ৭৬ টি জায়গায় হয় রান্নাঘর চালিয়েছে নয় রেশনিং করেছে। গোটা রাজ্যে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা দেশদ্রোহী। ওরাও এইসব কাজ কারবার করবে সেটা তো স্বাভাবিক।
পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর সময় সলিডারিটি নেটওয়ার্ক প্রায় ১০০০০ পরিযায়ী শ্রমিককে সরাসরি সাহায্য করেছে। সে অর্থে কোন বড় রাজনৈতিক দলের ব্যাকআপ ছাড়াই যারা এই নেটওয়ার্ক চালিয়েছে তাদের অধিকাংশের গড় বয়স দেখছিলাম ২২ থেকে ৪০ এর মধ্যে। আমি খুব ভুল না করে থাকলে এরা সবাই বামপন্থী।
এছাড়া নকশালপন্থী গ্রুপগুলোর মধ্যে যেটুকু ছাত্র যুব শক্তি আছে তারাও প্রাণপন কাজ করেছে।
সংসদীয় বামেদের মূল শক্তি সিপিএম, যারা এই মুহূর্তে ক্ষমতার দৌড়ে পুওর থার্ড ও হবে কিনা সন্দেহ তাদের শ্রমিক সংগঠন সিটু পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য মাটি কামড়ে কাজ করেছে দেখলাম। সিপিএমের ছাত্র যুব দের একাংশ লকডাউনের সময় রাস্তায় নেমে কাজ করেছে।
আরএসএস এর বিশাল সংগঠন। হিন্দি বলয়ে কোথাও দেখলাম না রাস্তার ধারে আর এস্ এস্ পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ক্যাম্প করে সামান্য সাহায্য করার চেষ্টা করছে।
ফেসবুকের বড় বড় পন্ডিত দিবারাত্র বামপন্থীদের প্রতি কটুকাটব্য করে চলেছেন। জাম্পকাট, লঙ কাট, ক্লোজআপ ট্রলি শটের মতো নানা অ্যাঙ্গেলে
বামপন্থীদের ব্যর্থতাকে ধরে ফেলতে এরা বড় দড়। এই প্রজন্ম কতটা আত্মকেন্দ্রিক তার সূক্ষ্ম বিশ্লেষণে এরা ক্যাপিলারি সার্জেন কেউ হার মানাবেন।
আমার অবাক লাগে শয়ে শয়ে তরুণ প্রজন্মের ছেলে মেয়ে করোনার ভয় কে পাত্তা না দিয়ে
পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে, গণ রান্নাঘর চালু রেখে মানবিক উদ্যোগ এর উজ্জ্বল মশাল জ্বেলে দিল তখন মুক্তকণ্ঠে এদের সাবাস জানানোর মতো কণ্ঠস্বর দেখলাম খুবই সীমিত। আমাদের দেখার চোখটা ও কি জন্ডিসে আক্রান্ত?