জিরো পয়েন্ট নিউজ ডেস্ক, অশোকনগর, ১২ অগাষ্ট, ২০২০:
জন্মাষ্টমীর ছুটির দিনে স্কুলের মাস্টারমশাই দিদিমণিরা কেন স্কুলের কাজ করছেন, এই অভিযোগ জানিয়ে অশোকনগরের কল্যাণগড় সংস্কৃতি সংঘ বিদ্যালয়ে তালা দিয়ে দেয় স্থানীয় বিজেপি নেতৃবৃন্দ। এই ঘটনায় সমগ্র শিক্ষা মহলে বিতর্কের ঝড় ওঠে।এমনিতেই বর্তমান সময় শিক্ষা বহির্ভূত অনেক বিষয়ে শিক্ষকদের যুক্ত থাকতে হয় এবং সমস্ত কাজের দায় দায়িত্ব প্রধান শিক্ষকের উপর বর্তায়।লকডাউন এরমধ্যেই প্রতিনিয়ত শিক্ষক শিক্ষিকা শিক্ষা কর্মীকে মিড ডে মিলের জিনিসপত্র কেনা, তা বিতরণ করার কাজে, অনলাইন ক্লাস এবং পাশাপাশি পরীক্ষার রেজাল্ট তৈরি,অ্যাক্টিভিটি টাস্ক দেখে দেওয়া,ভর্তি, টিসি,বাংলার শিক্ষা পোর্টালে আপডেট, ছাত্র ছাত্রীদের বিভিন্ন স্কলারশিপ এর বিষয়ে সহযোগিতা করা,অনলাইন পিএফ, বিভিন্ন খাতের ইউসি প্রদান ইত্যাদি কাজ নিয়ে জেরবার স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা এবং প্রধান শিক্ষকেরা।এরকম পরিস্থিতিতে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর কল্যাণগড় সংস্কৃতির সংঘের প্রধান শিক্ষক কতিপয় শিক্ষককে নিয়ে কিছু জরুরি কাজের জন্য জন্মষ্টমী ছুটির দিনে স্কুলে আসেন।স্কুল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে অত্যন্ত জরুরী কাজ থাকায় এ ছাড়া তাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা ছিলো না।এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের পক্ষ থেকে স্কুলে এসে বিক্ষোভ দেখানো হয় এবং সদর গেটে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়।এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্থানীয় অশোকনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।এই ঘটনায় অশোকনগর থানার পক্ষ থেকে শ্যামল মল্লিক,পার্থ প্রতিম চক্রবর্তী, নীলমনি মিত্র নামে তিন বিজেপি নেতা কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।বিজেপির পক্ষ থেকে শিক্ষকদের জোর করে স্কুলে আনার অভিযোগ আনা হলেও প্রধান শিক্ষক প্রবীর কুমার সাহা তা অস্বীকার করেছেন এবং শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এরকম কোন কথা স্বীকার করা হয়নি।এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে এবিটিএ নেতৃবৃন্দ। এবিটি এর উত্তর ২৪পরগনা জেলা সম্পাদক অশোক রায় চৌধুরী এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন,ধর্ম যার যার কিন্তু বিদ্যালয়ের স্বার্থে, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থে প্রধান শিক্ষক স্বেচ্ছায় যে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা এসেছেন তাদের নিয়েই স্কুলের জরুরী কাজ সেরেছেন।এক্ষেত্রে বিজেপির তালা লাগানোর ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক এবং তালিবানি মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ।তিনি অভিযোগ করেন, জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন এর মধ্য দিয়েই বিজেপি তার উগ্র হিন্দুত্ববাদ শিক্ষার উপরে চাপিয়ে দিতে চাইছে এবং সমস্ত শিক্ষা নিয়ামক সংস্থাকে দখল করে নিজেদের মনোভাবকে চাপিয়ে দেবার চেষ্টা করছে।অশোকনগর কল্যাণগড় এর এই ঘটনায় বিজেপির শিক্ষা সম্পর্কে মনোভাব পরিষ্কার হয়েছে বলে রায়চৌধুরী দাবি করেন।শিক্ষা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপর এই আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সকলকে সরব হবার জন্য তিনি আহ্বান জানান।তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে।