জিরো পয়েন্ট নিউজ – রীতা ভট্টাচাৰ্য, কালনা, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০:
বর্ধমান রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা সঙ্গম রায়ের আদি বাসস্থান ছিল পাঞ্জাবের কোটলা মহল্লায় সুতরাং তাঁরা বাঙালি ছিলেন না।
তাঁদের বংশের নিয়ম ছিল মৃত ব্যক্তির সৎকারের পর তাঁদের চিতাভষ্মের উপর পাথর বা ধাতুর উপর তাঁর প্রিয় জিনিস রেখে তাঁর উপর যে স্মৃতি মন্দির তৈরি করা হয় তাকেই “সমাজ বাড়ি ”
বলা হয়।
তেজচাঁদ বাহাদুরের আগে তাদের সমাধি মন্দির বা সমাজ বাড়ি নির্মিত হতো দাঁইহাটে বর্গি আক্রমণের জন্য কালনার ভাগীরথীর তীরে ১৮৩২-১৮৩৩ সালে বর্ধমানের রাজা মহতাবচাঁদ ১ একর ৪৩ শতক জমির উপর পুরনো সমাজ বাড়ি নির্মাণ করান।
পাঁচিল ঘেরা এই এলাকায় রয়েছে দুটি স্মৃতি মন্দির। একটি তেজচাঁদের সমাধি মন্দির এটা তৈরি হয়েছিল ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে বিরল এই মন্দিরের উপর আছে ১৭ টি চূড়া(১২+৪+১) ।আপর টি তাঁর স্ত্রী কমল কুমারীর ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে এটা তৈরি করা হয়। এই মন্দিরে আছে ৯ টি চূড়া (৪+৪+১) একে নবরত্ন মন্দির ও বলা হয়।
১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দের ২৮ শে জানুয়ারি বর্ধমান রাজ এস্টেট থেকে দীর্ঘমেয়াদি লিজে সমাজ বাড়ির দেখভালের দায়িত্ব পান তেঘড়িপাড়ার বাসিন্দা অবনী বিশ্বাস। দায়িত্ব পাবার পর রাজ এস্টেটে কর দিতেন বিশ্বাসরা। পরে তারা সমাজ বাড়ি নিজেদের দায়িত্বে নেওয়ার আবেদন জানান। সেই আবেদন মঞ্জুর হয়।
কিন্তু ভূমি সংস্কার দফতরের নথিতে এটি সমাধিস্থল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সমাধি স্থলের অধিকার ব্যক্তি মালিকানাধীন হতে পারে না। এরপর অধিকারের দায়িত্বে বিশ্বাসরা ২০১১ সালে আদালতে মামলা করেন এবং সেই মামলায় তারা জয়ী হন।
বর্তমান সময়ের অবস্থা সকলেরই জানা সেই বিষয়ে আলোকপাত নাই বা করলাম। তবে ইতিহাসের এই নির্মম মৃত্যু সত্যিই বেদনা দায়ক। “কালনার তাজমহল” আর কতদিন টিকে থাকবে তা জানা নেই। বড় বড় গাছের শেকড় ক্রমশঃ গিলে খাচ্ছে ঐ মন্দির গুলোকে।