29/03/2024 : 4:20 PM
আমার বাংলা

ওরা চায় মাথা তুলে বাঁচতেঃ প্যারাটিচার সুবিচারের আশায় প্রতীক্ষমান

জিরো পয়েন্ট নিউজ – পরাগ জ্যোতি ঘোষ, গুসকরা, ২৯ জানুয়ারি ২০২১:


সর্ব শিক্ষা মিশন এর আওতায় থাকা হাজার হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যাদের কেতাবি নাম প্যারাটিচার নীল আকাশের নীচে সামান্য একটু সুবিচারের আশায় প্রতীক্ষমান। সংখ্যাটা বেশি বলে হয়তো এদের কথাটাই লোকে বেশি করে জানে কিন্তু এদের মত আরো কয়েক হাজার কর্মী আছেন একই ছাতার তলায়। এদের কারো পোশাকি নাম ম্যানেজমেন্ট স্টাফ ,যার মধ্যে একাউন্টেন্ট ,গ্রুপ সি ,গ্রুপ ডি আছেন আবার অন্যদিকে আছেন সেপশাল এডুককেটর, শিক্ষা বন্ধু ,ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ইত্যাদি কর্মী।

এক কথায় শিক্ষকদের এই সংগ্রামী জেহাদ যে শুধু মাত্র তাদের মনের আগুন তা নয় সমগ্র সর্ব শিক্ষা মিশন এর আওতায় থাকা কর্মীদের প্রাণের কথা। কিন্তু কে শোনে কার কথা । দিল্লির রাজপথে থাকা কৃষকদের আন্দোলনের থেকে কোন অংশে কম নয় এই সব কর্মীদের জ্বালা। বরঞ্চ বলা যায় অনেকটাই বেশি। তাদের তো তাও জমি আছে, ফসল ফলানোর ক্ষমতা আছে। আর সর্বশিক্ষা মিশনের কর্মীদের না আছে জমি, না আছে ফসল ফলানোর অধিকার। প্রত্যেক কর্মীরাই স্ব-স্ব জায়গায় আধিকারিকদের ফাই-ফরমাশ খাটতে খাটতে আজ যেন বড় বেশি ক্ষয়িষ্ণু হয়ে পড়েছে।

শুধু কি বিভাগীয় কাজ, আছে অন্য সকল বিভাগের দায়-দায়িত্ব সামলানোর দায়। সমস্ত দপ্তরের কাজ কর্ম সমাধানের এমন ছুটো মুনিষ আর কোথায় পাওয়া যাবে !তাতেও কিন্তু নির্বিকার চিত্তে কর্ম সম্পাদন করে যায় তারা। অথচ দিন গুজরান আয় খুব সামান্য। গাল ভরা কন্ট্রাকচুয়াল তকমা সেঁটে যদি এতই আনন্দ লাগে তাহলে এত কাজ কেন তাদের দিয়ে করিয়ে নেওয়া হয় ?তখন কি বিবেকে বাধে না !তখন কোথায় থাকে আইনি বাধা গুলো! তখন আধিকারিকদের একটাই কথা সব কাজ না করলে দপ্তর চলবে কি করে !বাস্তব কথা। সর্বশিক্ষা মিশনের একেবারে grass-root স্তরে রয়েছে বিভিন্ন সিএল আর সি গুলি। যাদের পোশাকি নাম চক্র  স্তর সম্পদ কেন্দ্র ও অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক এর কার্যালয়। দ্বিতীয় যে নামটি রয়েছে তার কারণ একই সাথে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক মহাশয় প্রথম দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ।দুটি পৃথক হলেও একই ছাতার তলায় বিদ্যমান ।

এখন সমস্যা হল দীর্ঘ দিন ধরে অধিকাংশ অফিস এই স্কুল দপ্তরের কোন গ্রুপ সি বা গ্রুপ ডি নিয়োগ হয় নি অনেক সার্কেলে। এই কর্ম গুলিও সমাধা করেন সর্বশিক্ষা মিশনের কর্মীরাই । কোথাও কর্মী থাকলেও প্রধান কাজ তারাই করেন ।এ কথা জানেন সমস্ত আধিকারিক। প্রায় অনেকেই এই সকল কর্মীদের বাহবা দেন তাদের কর্ম দক্ষতার জন্য ।আসল কথা হলো সর্বশিক্ষা মিশনের অধিকাংশ কর্মীরাই শিক্ষাগত যোগ্যতায় উচ্চ মানের ।অনেকে আবার প্রশ্ন তোলেন এদের নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে ।কিন্তু তাদের একথা জেনে রাখা উচিত বিধান মেনে তাদের নিয়োগ হয়েছে এবং সংসদ, ব্লক, মহাকুমা এবং জেলায় প্রত্যেকেই নিজ নিজ যোগ্যতার বেস্ট কাজটা পেয়েছে ।আর রাজনৈতিক প্রভাবের প্রশ্ন তুললে বলা যায় সে তো সবার জন্য নয় ।দু-একটা এমন কেস থাকতেই পারে তবে তাও প্রামাণ্য হতে হবে ।

এমন অভিযোগ তো সব নিয়োগের ক্ষেত্রে যে কেউ তুলতে পারে। নিয়মিত কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রেও চলছে কোর্ট কেস ।তাহলে তাদের বেলা কেন এত প্রশ্ন আসেনা ?আসলে নরম মাটিতে বেড়াল আচরাতে বড্ড বেশি ভালোবাসে ।সম্প্রতি এক বিশিষ্ট সাংসদের
মুখে শোনা গেল কবিরবাণী “আদিম হিংস্র মানবিকতার আমি যদি কেউ হই/ স্বজনহারানোর সে শ্মশানে চিতা তোর তুলবই”। তিনি যেমন নিজের ব্যথাতুর হৃদয়ের প্রতিবাদের ভাষা বললেন প্রকাশ্য জনসভায় তার থেকেও নীরবে-নিভৃতে ঠান্ডায় নীল আকাশের নিচে বসে থাকা দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ করে আসছেন শিক্ষক শিক্ষিকা রা আবার কোথাও বা ম্যানেজমেন্ট স্টাফরা করছেন সবকিছু বজায় রেখেই। তাহলে তাদের বেলায় কেন দ্বিচারিতা করছেন ।তারা কেন দীর্ঘ এতগুলো বছর কেটে যাওয়ার পরও সর্ব শিক্ষা মিশন এর আওতায় থাকা হাজার হাজার কর্মীদের শিক্ষকদের একটু সম্মানজনক জায়গা দেওয়া গেল না? কোন অজ্ঞাত কারণে বন্ধ হয়ে গেল তিন পারসেন্ট ইনক্রিমেন্ট ?আসল কথা হলো “মুকুট পরে বসে আছ সিংহাসনে /রাজ্য জুড়ে সবাই তোমায় ভীষণ মানে /নিজেও তুমি বন্দি সেটা কজন জানে?” না জানার দরকারও নেই তাদের। শুধু দরকার ভদ্র ভাবে বাঁচার মতো বেতন কাঠামো যার দ্বারা সহজ-সরল ভাবে মাথা উচু করে তারা বাঁচতে পারে সর্বশিক্ষা মিশন এর আওতায় থাকা সমস্ত কর্মীরা।

Related posts

খোলাবাজারে আলুর দাম কমতেই ২৫ টাকার আলু কেনার ভিড় উধাও ভাতার কৃষক বাজারে

E Zero Point

মেমারির তৃণমূল নেতৃত্বের নেতাজী জয়ন্তী

E Zero Point

রাস্তার দাবিতে ভোট বয়কটের ডাক মেমারিতে

E Zero Point

মতামত দিন