জিরো পয়েন্ট প্রতিবেদন
ডাঃ সায়ন ভট্টাচার্য
এখন আমরা এক ভয়ানক সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি । কোভিড অতিমারীর দ্বিতীয় স্রোত আছড়ে পড়েছে ভারতে তথা সারা বিশ্বে । আমাদের দেশের অবস্থা গুরুতর। রোজ প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন ও রোজ প্রায় তিন হাজার মৃত্যু হচ্ছে। তীব্র সঙ্কটের মধ্যে সারা দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবা । অক্সিজেন, টীকা, ওষুধ , সব কিছুরই আকাল দেখা দিয়েছে ।
এই ক্ষণে দাঁড়িয়ে আমাদের আরো বেশি করে সচেতন হওয়া উচিত । চেনা পরিচিত কেউ যদি কোভিডে আক্রান্ত হন তবে তাঁকে ঘৃণা করা উচিত নয় । বরং তার সাথে সহমর্মী আচরণ করা দরকার। তবে তারা যদি পজিটিভ হওয়া সত্ত্বেও ঘন্টার পর ঘন্টা বাড়ির সদর দরজা খোলা রাখে বা তার বাড়িতে কাজের লোক যায় আসে, তবে সে কোভিড আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে। অবিলম্বে তখন আইনি হস্তক্ষেপ চাওয়া দরকার।
সবাই মাস্ক নতুন ও ঠিকভাবে পরুন। থুতনিতে মাস্ক ঝুলিয়ে রেখে বা পকেটে রেখে ঘুরলে কোনোই লাভ নেই।
এখন অনেক গবেষণায় নাকি দেখা যাচ্ছে যে ধূমপান করলে কোভিড সংক্রমণ হয় না। এটি পুরোপুরি ভিত্তিহীন । এ ধরনের গুজবে কান দেবেন না। রাস্তায় বিড়ি বা সিগারেট খাওয়া বন্ধ করুন। কখনোই রাস্তায় থুতু বা পানের পিক ফেলবেন না। অকারণে বাইরে বেরোনোও একেবারেই উচিত নয় এখন। এখন এই ভাইরাসের নানা অভিযোজিত প্রজাতি দেখা যাচ্ছে, যা আরো বেশি করে ছড়াচ্ছে দ্বিতীয় স্রোতে। বলা যায় দ্বিতীয় স্রোত এসেছে আমাদের অসাবধানতার ফলেই ।
তাই সাবধানের মার নেই। মাস্ক নতুন বাইরে বেরোলেই । দম আটকে আসছে বা গরম লাগছে ইত্যাদি অজুহাত দিলে পরে ভুগতে হবে আপনাকে ও আপনার প্রিয়জনকে । একজন মাস্ক না পরা কোভিড আক্রান্ত ব্যক্তি ৪০৬ জনকে সংক্রমিত করতে পারেন ।
তা ছাড়া পরস্পরের সঙ্গে ছয় ফিটের দূরত্ব বিধি মোতাবেক চলুন। বারে বারে সাবান দিয়ে অন্ততঃ কুড়ি সেকেন্ড ধরে হাত ধুয়ে নিন। হাতে সেরকম ময়লা না লেগে থাকলে স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন । বারে বারে ছোঁয়া হয় এমন কিছু অ্যালকোহল দিয়ে পরিষ্কার করুন রোজ । টীকা নিন সময়মতো। বিপদে আপদে একে অন্যকে সাহায্য করুন, তবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে। যাদের বয়স বেশি বা যাঁরা মধুমেহ বা উচ্চ রক্তচাপের রুগী, তাঁরা বিশেষ ভাবে সাবধানে থাকবেন । আশা করি এগুলি মেনে চললে আমরা জয়ী হবো এই মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে।