24/04/2024 : 2:27 AM
জীবন শৈলীস্বাস্থ্য

জেনে নিন পালস অক্সিমিটার যন্ত্রের খুঁটিনাটি

দিগন্তিকা বোস

বর্তমানে পালস অক্সিমিটার নামক যন্ত্রটির কথাও কানে গেছে প্রায় সবার। এবং এই যন্ত্র কেন প্রয়োজন । করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা উপসর্গ রয়েছে এমন মানুষদের জন্য পালস অক্সিমিটার হতে পারে সাহায্যকারী একটি যন্ত্র
খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারা যায় ।
এই যন্ত্রে আঙুল দিলে জানিয়ে দিচ্ছে আমাদের হৃৎস্পন্দন ও শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা।

দুই হাতের সব আঙুলের মাধ্যমেই মাপা যায়। কিন্তু দেখা গেছে, ডান হাতে কাজ করতে অভ্যস্ত মানুষ ডান মধ্যমা ও বুড়ো আঙুল এবং বাঁ হাতে বেশি কাজ করতে অভ্যস্ত মানুষের ক্ষেত্রে বাঁ হাতের মধ্যমা ও বুড়ো আঙুল ভালো ফল দেয়। অনেকের কাছে শোনা যাচ্ছে অক্সিমিটার সঠিক কাজ করছেনা । সঠিক পরিমাপ পেতে কয়েক টি বিষয় নজর রাখতে হবে যেমন হাত যদি শরীরের তাপমাত্রার চেয়ে বেশি ঠান্ডা থাকে, তাহলে অক্সিমিটার সঠিকভাবে কাজ করে না। সে ক্ষেত্রে পালস অক্সিমিটার ভুল ফল দিতে পারে। এছাড়াও কয়েকটি বিষয় নজর রাখতে হবে পরিমাপের সময় জোরালো আলো যেন অক্সিমিটারে না পড়ে।আলোর প্রভাবে পরিমাপে ক্রটি দেখা দিতে পারে।

যেহেতু এই যন্ত্র ইনফ্রারেড আলোর সাহায্যে রক্তের রঙের ভিত্তিতে অক্সিজেন পরিমাণ নির্ধারণ করে, তাই হাতের আঙ্গুলে নেইল পলিশ পরা থাকলে সঠিক পরিমাপ না হতে পারে।
অক্সিমিটারে ব্যবহার করার সময় হাত নাড়ালে কম্পন তৈরি হতে পারে,
আঙুলে অক্সিমিটার দিয়ে ৩০ থেকে ৪০ সেকেন্ড সময় দিয়ে সবথেকে বেশি যে ফলাফল আসবে সেটিই আসল।
তাই ব্যবহারের আগে অবশ্যই এই বিশেষ গুলি বিশেষ নজর রাখা আবশ্যক।
সাধারণত পালস অক্সিমিটারে ৯৫ শতাংশ থেকে (পূর্ণ বয়স্ক মানুষের) অক্সিজেন মাত্রাকে স্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয় । ৯৫ শতাংশের কম হলে অর্থাৎ হাইপোক্সিয়া বা শরীরে তখন অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। তখন শ্বাস কষ্ট হয়। এ জন্যই ভেন্টিলেশনের মাধ্যমে অক্সিজেন দিতে হয়। ৯৪ নীচে যদি এর মান চলে যায় তাহলে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শের প্রয়োজন।রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা আশঙ্কাজনক নয় বলেই যে আপনি সুস্থ তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়না। তাই ‘পালস অক্সিমিটারের রিডিং ভালো বলেই যে চিকিৎসা নেবেন না এমনটা করা যাবে না।

কিভাবে কাজ করে এই যন্ত্র।
বেশি অক্সিজেনযুক্ত রক্তের রং লাল এবং কম অক্সিজেনযুক্ত রক্ত কালচে-লাল বর্ণের হয়ে থাকে। রঙের এই পার্থক্য কে কাজে লাগিয়ে অক্সিমিটারের যন্ত্র আমাদের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা নির্ধারণ করে। পালস অক্সিমিটার-এর এক পাশের ক্লিপে থাকে দুটি ইনফ্রারেড LED (লাইট এমিটিং ডায়ড) লাইট এর একটি থেকে ৬৬০ ন্যানো মিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্য এর লাল আলো এবং অপর LED থেকে ৯৪০ ন্যানো মিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্য এর Near-IR লাইট বেরহয় । এই দুই বর্ণ ব্যবহারের কারন লাল এবং Near-IR লাইট ত্বক এবং জল দ্বারা খুব কম পরিমানে শোষিত হয়, ধমনী ও শিরার মধ্যে থাকা রক্তেই এই দুই বর্ণের যাবতীয় শোষণ ঘটে। ধমনীর রক্তে অক্সিজেনের পরিমান বেশি থাকায় Near-IR লাইট বেশি শোষিত হয় এবং লাল বর্ণ অপেক্ষাকৃত কম শোষিত হয়, অন্যদিকে শিরার রক্তে ঠিক উল্টো ঘটনা ঘটে।

যন্ত্রের অপর বাহুতে থাকা ফোটো ডায়োডে ধরা পরে এই দুই বর্ণের তীব্রতার আপেক্ষিক পার্থক্য যা থেকে যন্ত্রে থাকা মাইক্রোপ্রসেসর সহজেই মেপে নেয় রক্তে থাকা অক্সিজেনের শতকরা পরিমান কে। যন্ত্রটি পালস রেটও মাপতেও সক্ষম। আমাদের হার্ট আসলে একটা পাম্প, যার কাজ রক্তকে পাম্প করে সারা দেহে ছড়িয়ে দেওয়া। হৃৎপিন্ড সংকুচিত হওয়ার সাথে সাথে ধমনীতে রক্তের পরিমান বাড়তে থাকে ফলে ধমনীর রক্তদ্বারা শোষিত IR লাইটের তীব্রতার পরিবর্তন ফোটো ডায়োডে ধরা পরে। যতবার হৃৎপিন্ড সংকুচিত হয় ততবার IR লাইটের তীব্রতার পরিবর্তন ধরা পরে আর সেই পরিবর্তনের সংখ্যার সাহায্যে পালস রেট পরিমাপ করা হয়। চিত্রে পালস অক্সিমিটারের অভ্যন্তরীণ ব্লক ডায়াগ্রাম দেওয়া রয়েছে।


তথ্য সাহায্যে https://patient.info/doctor/pulse-oximetry

Related posts

জেনে নিন শুক্রবারের রাশিফল

E Zero Point

জেনে নিন শুক্রবারের রাশিফল

E Zero Point

জানেন কি পূর্ব বর্ধমানে কোথায় আছে পোষ্যবান্ধব হোমস্টে

E Zero Point

মতামত দিন