28/04/2024 : 9:50 AM
আমার বাংলাগুসকরাদক্ষিণ বঙ্গপূর্ব বর্ধমান

শহীদ স্মরণে গুসকরা বয়েজ ক্লাব

জিরো পয়েন্ট নিউজ – জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, মঙ্গলকোট, ২৮ জুন ২০২১:


গত বছর জুন মাসে চিন সীমান্তে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা লাল ফৌজের আগ্রাসন রুখতে ঝাঁপিয়ে পড়ে ভারতের বীর জওয়ানরা। কিন্তু চিনা ফৌজের অনৈতিক আক্রমণে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহীদ হন। এদের মধ্যে ছিলেন বীরভূমে ছেলে রাজেশ ওরাং। মাত্র ২৫ বছর বয়সে নিভে যায় তার জীবন দীপ। বীর শহীদকে সম্মান জানাতে গুসকরা শিরিষতলার বয়েজ ক্লাবের সদস্যরা পৌঁছে যায় শহীদের বেলগড়িয়া গ্রামের বাড়িতে। তার জন্মভিটা থেকে সংগ্রহ করা হয় মাটি। তারপর সংশ্লিষ্ট ক্লাবের উদ্যোগে গুসকরা বিদ্যাসাগর হলের সামনে নির্মিত হয় গুসকরার প্রথম শহীদ বেদী।


শহীদ বেদীর বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে গত ২৭ শে জুন শহীদদের স্মৃতিতে শহীদ বেদীতে মাল্যদান করেন শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। শুধু শহীদদের স্মৃতিতে মাল্যদান নয় একইসঙ্গে সম্মাননা প্রদান করা হয় গুসকরা শহরের সামনের সারির করোনা যোদ্ধা ডাক্তার দেবতনু দত্ত ও প্রবীণ ডাক্তার শ্যামল দাস, গুসকরা বিট হাউসের সমস্ত পুলিশ আধিকারিক, করোনা রুগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স চালক বাবু ও শববাহী গাড়ির চালক রাজা শেখ সহ স্হানীয় সামরিক জওয়ান ও সাংবাদিকদের। একইসঙ্গে প্রায় ৭৫ জন দুস্থ মানুষকে খাওয়ানো হয়।


অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্হানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার, পৌর প্রশাসকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য কুশল মুখার্জ্জী সহ এলাকার বেশ কয়েকজন সেনা জওয়ান ও বিশিষ্ট সমাজসেবীরা। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি ছিল গালওয়ান হামলায় শহীদ সেনা রাজেশ ওরাং এর পরিবারের সদস্যদের। প্রতিটি বক্তা দেশের সম্মান রক্ষার্থে শহীদের অবদান স্মরণ করেন। নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা যোদ্ধারা কিভাবে মানুষের জীবন রক্ষা করে গেছে তারা সেটাও উল্লেখ করেন।


এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য রাজেশের বোন শকুন্তলা দেবী উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন এইভাবেই দেশের সমস্ত শহীদ জওয়ানরা মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবে।


এই উপলক্ষ্যে বিদ্যাসাগর সিনেমাহলের পাশে শহীদ বেদীর সামনে একটি ছোট্ট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। সেখানে উপাসনা মল্লিক উদ্বোধনী সঙ্গীত এবং শতাক্ষী ড্যান্স অ্যাকাডেমির শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করেন।


ক্লাবের সভাপতি সৌগত মল্লিক বলেন – রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শহীদ বেদী থাকলেও আমাদের শহরে কোনো শহীদ বেদী নাই। অথচ দেশের সম্মান রক্ষা করতে গিয়ে প্রতি বছর বহু বীর জওয়ান শত্রুদের আক্রমণে শহীদ হয়। তাদের উদ্দেশ্যে আমাদের এই শ্রদ্ধার্ঘ। পাশের জেলার বীর শহীদ জওয়ান রাজেশ ওরাং এর জন্মভিটের মাটির স্পর্শ দিয়ে এই শহীদ বেদী গড়ে উঠেছে। শহীদ বেদীর মাথার উপর ছাউনি ও আলোর ব্যবস্হা করার জন্য তিনি পৌর প্রশাসক মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য কুশল মুখার্জ্জীকে অনুরোধ করলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণের আশ্বাস দেন।


প্রসঙ্গত গত কয়েক বছর ধরেই বয়েজ ক্লাব নিজেদের সীমিত সামর্থ্য নিয়ে সমাজসেবামূলক কাজ করে চলেছে। সভাপতির কাছে জানা গেল আগামী দিনে শহরের কিছু দুস্থদের সপ্তাহে একদিন করে খাবার দেওয়া তাদের অন্যতম লক্ষ্য। এরজন্য তিনি এলাকার সহৃদয় ব্যক্তিদের কাছে সাহায্যের আবেদন করেন।

Related posts

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু 

E Zero Point

চোলাই মদ কারবারিকে গ্রেফতার করল ভরতপুর থানার পুলিশ

E Zero Point

ফেসবুক হ্যাক পুরোহিতের

E Zero Point

মতামত দিন