29/03/2024 : 5:15 AM
আমার বাংলাদক্ষিণ বঙ্গপূর্ব বর্ধমানমেমারি

মেমারিতে দুয়ারে সরকার এবার বাড়ির অন্দরমহলে

জিরো পয়েন্ট নিউজ, মেমারি,  ৩১ মে ২০২২:


দুয়ারে সরকার এখন আর শুধুমাত্র দুয়ারেই সীমাবদ্ধ নেই। এখন সরকার একেবারে বাড়ির উঠানে পৌছে গেছে। দুয়ারের সরকারের চতুর্থ পর্যায়ের আজই ছিল শেষ দিন। এমন কিছু মানুষজন এখনো আছেন যারা বিভিন্ন কারণে দুয়ারে পৌঁছেতে পারেনি , সেই সমস্ত মানুষের কাছেই সরকার পৌছে গেল ভ্রাম্যমান দুয়ারের সরকার নিয়ে। মেমারি-১ ব্লকের উদ্যোগে আজ একটি ভ্রাম্যমান দুয়ারে সরকারের গাড়ি প্রথমেই গেল কলনবগ্রামের একটি বৃদ্ধাশ্রমে। সেখানে দুইজন বৃদ্ধা এবং একজন বৃদ্ধ মানুষের কাছে সরকারি পরিষেবা নিয়ে সরাসরি হাজির হলেন বিডিও এবং তার সহকারিরা। কল্পনা ঘোষ, আভা চ্যাটার্জী, বিপ্লব কুমার দত্ত -দের কারোর স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেই, তো কেউ ভাতা পাননা বা কেউ ভোটার কার্ড নেই বা আধার নেই। সবার সাথে কথা বলে ব্লক প্রশাসন ব্যবস্থ গ্রহণের পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন। সবার হাতে নির্দিষ্ট ফর্ম দিয়ে তা পূরণ করে উপযুক্ত ব্যবস্থাগ্রহণ করার জন্য দলুইবাজার-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে নির্দেশ দেন। বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা এই সুযোগ পেয়ে খুবই খুশি। বিপ্লববাবু জানালেন, ভাবতেও পারছি না যে আমাদের কথা সরকার ভেবেছেন। এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে জীবনযাপন করার মধ্যেও সরকারি সুযোগ যে ঘর বসে পাচ্ছি তাতেই আমরা খুশি। কল্পনাদেবী এবং আভাদেবীরা খুব খুশি। তারাও এই দুয়ারের সরকার ঘরে আসায় নিজেদের চাহিদার কথা, মনের কথা সরাসরি প্রশাসনকে জানাতে পারলেন।


পাশেই আছে একটি আবাসিক হোম। সেখানেও প্রায় ১৯ জন মানুষ আছেন। ব্লক প্রশাসনের ভ্রাম্যমান দুয়ারে সরকার সেখানেও হাজির। তাদের স্তাহে কথা বলে যাদের যা সমস্যা আছে তা মেটানোর চেষ্টা করলো।
এরপর ভ্রাম্যমান দুয়ারে সরকার যায় কলনবগ্রামের ভিতরে দুই প্রতিবন্ধী ভাই – সঞ্জিব ও মানিক মণ্ডলের বাড়িতে। জন্মগত দুই প্রতিবন্ধী ভাই কি কি সুবিধা পাচ্ছে, কি কি সমস্যা সব খোঁজখবর নেন স্বয়ং বিডিও। এরা আগের দুয়ারে স্বাস্থ্যসাথীর জন্য আবেদন করেছিলো, সেটা পেয়ে গেছে। ওদের বৃদ্ধ মা ভাতা পাচ্ছেন। আধারের কিছু সংশোধনী ছিলো সেটাও হয়ে গেছে। আপাতত তাদের কিছু সমস্যা না থাকলেও, তারা এতেই খুশি যে ব্লক প্রশাসন ভ্রাম্যমান দুয়ারের এসে তাদের খোঁজ নিয়ে গেলেন।


মেঠো গ্রামের পথ বেয়ে ভ্রাম্যমান দুয়ারে সরকারের গাড়ি এবার ছুটে গেল অন্য দিকে। মেন রাস্তায় মোড় নিয়েই পড়ে সন্দীপন সরকারের বাড়ি। স্থানীয় প্রধান জানান যে সন্দীপনের স্ত্রী গর্ভবতী। সে দুয়ারের ক্যাম্পে যেতে পারেনি। শুনেই ব্লকের ভ্রাম্যমান গাড়ি গিয়ে থামলো সন্দিপনদের বাড়ির সামনে। ওনার স্ত্রী অদিতি গর্ভবতী, সেই কারণে সে দুয়ারে যেতে পারেনি। আর তার কাছেই যে সরকার একেবারে ঘরে এসে হাজির সেটা শুনেই তারা সকলেই খুব খুশি। অদিতির স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ফর্ম পূরণ করে দুয়ারে সরকারের টিম, পাশাপাশি তাদের রেশন কার্ডে আধার লিঙ্কের কিছু সমস্যা ছিলো সেটাও সহযোগিতা করে দেওয়া হয়। ওর ভোটার কার্ড স্থানান্তরিত করার বিষয়ে পরামর্শ দেয় টিম। সামগ্রিকভাবে সরকারের এই ঘরের মধ্যে পরিষেবা পৌঁছে দেবার উদ্যোগে এই সরকার পরিবার বেজায় খুশি। অদিতি সরকার জানান, আমি কল্পনা করতে পারছি না, আমি বিশেষ কারণে দুয়ারের ক্যাম্পে যেতে পারিনি বলে সরকার সরাসরি আমার ঘর এসে গেল। আমি ক্যাম্পে যেতে না পারায় যতটা মনখারাপ হয়েছিল স্বাস্থ্যসাথী কার্ডটা না হবে বলে, আজ তার থেকে দ্বিগুন আনন্দিত হলাম এই ভ্রাম্যমান দুয়ারে সরকার আমার ডাইনিং এ এসে পড়াতে। খুব খুশি।


আজ সারাদিন ভ্রাম্যমান দুয়ারে সরকারের গাড়ি নিয়ে ব্লকের এদিক থেকে ওদিক বিভিন্ন ধরনের মানুষের কাছে যিনি সকাল থেকে নিজের দল কে নিয়ে ঘুরলেন সেই মেমারি-১ ব্লকের বিডিও ডা. আলি মহঃ ওয়ালি উল্লাহ জানালেন, আমাদের দুয়ারে সরকার কর্মসূচী সফল্ভাবে চর্তুথ পর্যায় শেষ করলাম। ইতিমধ্যে ব্যাপক মানুষের কাছে বিভিন্ন পরিষেবা পৌঁছে দিতে পেরেছি। তবুও কিছু মানুষে যারা এই পরিষেবা থেকে বঞ্চিত ছিল আজ একটা প্রচেষ্টা চালানো হলো তাদের কাছে সরকারি পরিষেবা কিছুটা হলেও পৌঁছে দেবার। তাই সরকারের এবার সিদ্ধান্ত মতে আমরা আমাদের ব্লকের উদ্যোগে একটি ভ্রাম্যমান গাড়ি নিয়ে দুয়ারে সরকার বাড়ি বাড়ি, পাড়ায় পাড়ায় গেছি। আশা করি এতে কিছু মানুষ উপকৃত হলেন। এরপরও যদি কিছু মানুষ বাকি থেকে থাকেন তাদের কাছেও আগামী দিনে পৌঁছে যাবার চেষ্টা করবো।

Related posts

নদী পারাপার করতে গিয়ে জলে তলিয়ে গেলেন এক ব্যক্তি

E Zero Point

লকডাউন থেকে আংশিক লকডাউনঃ তাঁতশিল্পীদের অবস্থা এখনও খারাপ

E Zero Point

করোনা টেষ্ট করুন, বিনামূল্যে ২ কিলো আলু নিয়ে যান

E Zero Point

মতামত দিন