29/03/2024 : 5:50 PM
আমার দেশ

ডবল ইঞ্জিন সরকারঃ ৩ হাজার ৫০ কোটি টাকা উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন গুজরাতে

জিরো পয়েন্ট নিউজ ডেস্ক, দিল্লী, ১০ জুন ২০২২:


প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ‘গুজরাট গৌরব অভিযান’ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তিনি নভসরির আদিবাসী অঞ্চল খুদভেলে’তে ‘গুজরাট গৌরব অভিযান’ অনুষ্ঠানে একাধিক উন্নয়নমূলক উদ্যোগের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। এর মধ্যে ৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন, ১২টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং ১৪টি প্রকল্পের ভূমিপুজো করেছেন তিনি। এই প্রকল্পগুলি সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের জল সরবরাহের উন্নতিসাধনে সাহায্য করবে। একইসঙ্গে, যোগাযোগ ব্যবস্থা বৃদ্ধি পাবে এবং জীবনযাত্রায় স্বাচ্ছন্দ্য বাড়াতে সাহায্য করবে। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র রজনীকান্ত প্যাটেল এবং একাধিক কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের মন্ত্রী ও জনপ্রতিনিধিরা।

সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী  তাঁর ভাষণে অনুষ্ঠান-স্থলে বহুসংখ্যক উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করেন। তিনি গর্বের সঙ্গে জানান, এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন আদিবাসী ভাই ও বোনেদের নিরন্তর ভালোবাসার ইঙ্গিত বহন করে। তিনি উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের গৌরবময় কর্মকান্ডে ও সংকল্পের কথা স্বীকার করে নভসরির মাটিকে প্রণাম জানান।

তিনি বলেন, গুজরাটের গৌরব হল – গত দু’দশকে দ্রুত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন এবং এই উন্নয়ন থেকে জন্ম নেওয়া এক নতুন আকাঙ্খা। ডবল ইঞ্জিন সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে এই গৌরবময় ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। তিনি জানান, এদিনের প্রকল্পগুলি গুজরাটের সুরাট, নভসরি, ভালসাদ এবং তাপি জেলার মানুষের জীবনযাত্রায় স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে আসবে।

প্রধনমন্ত্রী স্মরণ করেন যে, ৮ বছর আগে কিভাবে গুজরাটের মানুষ তাঁকে দিল্লিতে পাঠিয়েছিলেন। তিনি বলেন, গত ৮ বছরে সরকার উন্নয়ন প্রক্রিয়া ও আকাঙ্খার সঙ্গে সাধারণ মানুষ এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের নতুন অংশকে যুক্ত করতে সফল হয়েছেন। তিনি স্মৃতিচারণ করেন যে, এক সময় কিভাবে দরিদ্র, বঞ্চিত, দলিত, উপজাতি, মহিলা ও অন্য দুর্বল শ্রেণীর মানুষ কেবলমাত্র মৌলিক চাহিদা পূরণেই তাঁদের সারা জীবন অতিবাহিত করতেন। আগের সরকার উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয়নি। অধিকাংশ অভাবী শ্রেণীভুক্ত মানুষ ও এলাকা সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল। তিনি জানান, গত ৮ বছরে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ – এর মন্ত্র উচ্চারণ করে তাঁদের সরকার দরিদ্রদের কল্যাণে, দরিদ্রদের মৌলিক সুযোগ-সুবিধাদানের উপর সর্বাধিক জোর দিয়েছেন। সরকার কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির মাধ্যমে দরিদ্রদের ১০০ শতাংশ ক্ষমতায়নের কর্মসূচি শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে পৌঁছনোর আগে উপজাতি সম্প্রদায়ের সুবিধাভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ ও সুবিধাভোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ উন্নয়নের সহায়তায় নতুন গতিসঞ্চার করে।

গুজরাটি ভাষায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় মানুষের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ সম্পর্কের কথা স্মরণ করেন। এমনকি, ঐ অঞ্চলে কাজ করার সময় স্থানীয় মানুষের আতিথেয়তা ও স্নেহের কথাও স্মৃতিচারণ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আপনাদের স্নেহ ও আশীর্বাদ আমার শক্তি”। তিনি আরও জানান, উপজাতি সম্প্রদায়ের শিশুদের সমস্ত সম্ভাব্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়া উচিৎ। তিনি উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের জীবনযাপন ও পরিবেশ সুরক্ষার মূল্যবোধের কথাও তুলে ধরেন। আদিবাসী এলাকায় জল সরবরাহ সুনিশ্চিত করতে তাঁর কর্মকান্ডের কথাও জানান। আগে ছোট জলের ট্যাঙ্ক উদ্বোধনে বড় বড় হেডলাইন হত। এদিন ৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। তিনি বলেন, নিরন্তর কল্যাণ ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলি দীর্ঘকাল ধরে তাঁর শাসনশৈলীর অঙ্গ। সাধারণ মানুষ ও গরীব কল্যাণে এই প্রকল্পগুলি গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতিটি দরিদ্র মানুষ যতই সে দুর্গম এলাকায় বসবাসকারী হন না কেন, প্রতিটি আদিবাসী বিশুদ্ধ পানীয় জল পাবার যোগ্য। সেজন্য এত বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, “আমরা সরকারের থাকাকে সেবা করার সুযোগ হিসাবে বিবেচনা করি”। প্রবীন প্রজন্মের মানুষ যে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন, তা আমাদের নতুন প্রজন্ম যাতে সেই সমস্যার সম্মুখীন হতে না হয়, তার জন্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই কারণেই বিশুদ্ধ পানীয় জল, সকলের জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষার মতো মৌলিক সুবিধাগুলি নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি স্মরণ করেন যে, এক সময় এই অঞ্চলে একটি বিজ্ঞান স্কুলও ছিল না। এখন সেখানে মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠছে। সবচেয়ে দূরবর্তী অঞ্চলে পরিকাঠামো, শিক্ষা, ব্যবসা, যোগাযোগ সম্পর্কিত প্রকল্পগুলির মাধ্যমে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আসছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রাকৃতিক চাষাবাদের বিষয়ে আগ্রহ দেখানোর জন্য ডাং জেলা ও দক্ষিণ গুজরাটের প্রশংসাও করেন তিনি। এমনকি, মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মতো কারিগরি পাঠ্যক্রমে ওবিসি, আদিবাসীদের জন্য মাতৃ ভাষায় শিক্ষা নতুন সুযোগের দরজা খুলে দিয়েছে। বন বন্ধু যোজনার নতুন পর্যায় বাস্তবায়নের জন্য প্রশংসাও করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সামগ্রিক অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়সঙ্গত উন্নয়নের জন্য কাজ করছি।

প্রধানমন্ত্রী প্রায় ৫৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মধুবন বাঁধ-ভিত্তিক আস্তল আঞ্চলিক জল সরবরাহের প্রকল্প উদ্বোধন করেন। এছাড়াও, ১৬৩ কোটি টাকা মূল্যের ‘নল সে জল’ প্রকল্পের উদ্বোধনও করেন তিনি। এই প্রকল্পগুলি সুরাট, নভসরি, ভালসাদ ও তাপি জেলার বাসিন্দাদের নিরাপদ ও পর্যাপ্ত পানীয় জল সরবরাহ করবে।

প্রধানমন্ত্রী তাপি জেলার বাসিন্দাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে ৮৫ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে নির্মিত বীরপুর ভায়ারা সাব-স্টেশনের উদ্বোধন করেন। ভালসাদ জেলার ভাপি শহরের জন্য বর্জ্য জল শোধনের সুবিধার্থে ২০ কোটি টাকা মূল্যে ১৪ এমএলডি ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বর্জ্য নিকাশি কেন্দ্রেরও উদ্বোধন করেন তিনি। পাশাপাশি, নভসরিতে ২১ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে নির্মিত সরকারি আবাসনেরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। পিপলাইদেবী – জুনার – চিচভিহির – পিপলদহদ থেকে নির্মিত সড়ক এবং ডাং-এ প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে ওঠা বিদ্যালয় ভবনের উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী সুরাট, নভসরি, ভালসাদ ও তাপি জেলার বাসিন্দাদের বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ করতে ৫৪৯ কোটি টাকা মূল্যের ৮টি জল সরবরাহ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এছাড়াও, নভসারি জেলায় ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত খেরগাম এবং পিপকালখেদ’কে সংযোগকারী একটি প্রশস্ত রাস্তার ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন। প্রায় ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সুপা হয়ে নভসরি থেকে বারদলির মধ্যে আরেকটি চার লেনের সড়ক নির্মাণ করা হবে। এদিন প্রধানমন্ত্রী প্রায় ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে জেলা পঞ্চায়েত ভবন নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

Related posts

ন্যাশনাল প্রেস ডে উদযাপন করেছে প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া

E Zero Point

মিউকরমাইকোসিস থেকে নিরাপদে থাকুন, ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের নিয়মিত রক্তের শর্করা পর্যবেক্ষণ করে সজাগ থাকুন

E Zero Point

এবার বাংলা সহ ১৩টি আঞ্চলিক ভাষায় কন্সটেবল পরীক্ষা

E Zero Point

মতামত দিন