06/05/2024 : 3:25 AM
আমার বাংলাদক্ষিণ বঙ্গপূর্ব বর্ধমান

ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর তদন্তের দাবি বর্ধমানে

জিরো পয়েন্ট বিশেষ সংবাদদাতা, ২৯ মার্চ ২০২৩:


পূর্ব বর্ধমানের খন্ডঘোষ থানার উজ্জ্বলপুকুর এলাকার বাসিন্দা ১৯বছর বয়সী নাসমিন খাতুন কে চিকিৎসক কৌশিক দাসের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশনের জন্য খোষবাগানের কল্পতরু নার্সিংহোমে গত ১৬মার্চ ভর্তি করা হয়েছিল। তার আগে ১৫তারিখ বড়নীলপুরে চিকিৎসকের বাড়িতে রোগীকে দেখানো হয়েছিল। তখনই চিকিৎসক অ্যাপেন্ডিক্স এর সমস্যার কথা জানায়। সেই অনুযায়ী বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় নাসমিন খাতুনের। রিপোর্টে কোন খারাপ কিছু ছিলনা। ১৭তারিখ নাসমিনের অপারেশন করা হয়। আশ্চর্যজনক ভাবে অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশনের জন্য চিকিৎসক প্রায় আড়াই ঘণ্টা সময় লাগিয়ে দেন। রোগীর আত্মী.পরিজন কে কিছু না জানিয়েই রোগীকে আইসিইউ তে স্থানান্তর করে দেওয়া হয়। কিন্তু পরের দিন অর্থাৎ ১৮মার্চ রাত সাড়ে দশটা নাগাদ হটাৎ কল্পতরু নার্সিংহোম থেকে নাসরিন খাতুনকে নিয়ে চলে যাওয়া হয় নবাবহাট এলাকার বি সি রায় হসপিটালে। সেখানে ভর্তি করার আধ ঘণ্টার মধ্যেই রোগীর মৃত্যু হয়।
অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশন করতে গিয়ে বর্ধমানের খোসবাগানের নার্সিংহোমে ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ জানিয়েছিলেন খন্ডঘোষের এক পরিবার। জেলার পুলিশ সুপার থেকে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে এই অপারেশনে যুক্ত চিকিৎসক কৌশিক দাস সহ খোদ নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে তদন্ত চেয়ে দরখাস্ত জমা করেছিলেন মৃত নাসমিন খাতুনের বাবা জাকির হোসেন।

অভিযোগে অপারেশন থিয়েটারে রোগীকে নিয়ে যাওয়া থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত চিকিৎসা পদ্ধতি ঠিক ছিল কিনা, ওষুধ প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনো গাফিলতি হয়েছে কিনা, কারা উপস্থিত ছিলেন অপারেশনের সময়, কেন আড়াই ঘণ্টা সময় লাগল অপারেশনের জন্য ইত্যাদি নানান বিষয়ের তদন্ত দাবি করেছেন মৃতার পরিবার। ইতিমধ্যে এই ঘটনার তদন্ত করতে এক সদস্যের কমিটি করে দ্রুত রিপোর্ট জমা করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায়।

আর এরই মাঝে মঙ্গলবার নাসমিন খাতুনের পরিবার থেকে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে চিকিৎসক কৌশিক দাসের বিরুদ্ধে তদন্ত চেয়ে লিখিত আবেদন করলেন। আবেদনপত্রের সঙ্গে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন, যাবতীয় শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট সহ নার্সিংহোমের কাগজ ও মৃত্যুর কারন সম্মন্ধীয় শংসাপত্র সবকিছুই জমা করেছেন।

মৃত নাসমিন খাতুনের বাবা জাকির হোসেন অভিযোগ করেছেন,’ আমার মেয়েকে চিকিৎসক কৌশিক দাস ভুল চিকিৎসা করে মেরে দিয়েছেন। আমার মেয়ের পেটে ব্যাথা হওয়ায় নীলপুরের চেম্বারে এই ডাক্তারকে দেখিয়েছিলাম। উনি কয়েকটি পরীক্ষা করানোর পর অ্যাপেন্ডিক্স এর সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন অপারেশন করে দিলে সে সুস্থ হয়ে যাবে। কিন্তু সামান্য আপ্যান্ডিক্স অপারেশন করতে গিয়ে আমার মেয়ে মরে যাবে আমরা কেউই ভাবতে পারিনি। এই মৃত্যুর জন্য সম্পূর্ন ভুল চিকিৎসাই দায়ী। আমরা ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি করেছি।

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় জানিয়েছেন, ‘মৃত রোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। সেই বিষয়ে এক সদস্যের কমিটি করে ২৭মার্চের মধ্যে রিপোর্ট জমা করতে বলা হয়েছিল। কিছু কাজ এখনও বাকি আছে। আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার আশা করছি রিপোর্ট জমা হবে। তারপর পরিবারের লোকেদের ডেকে গোটা ঘটনার বিষয়ে শোনা হবে। সবদিক খতিয়ে দেখে যদি কিছু অনিয়ম পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে যা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সংবাদসূত্র এফবি

Related posts

সেরা পুজোঃ সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের প্রতি শ্রদ্ধা, মেমারির মোনালিসার

E Zero Point

মন্তেশ্বরে প্রতিকূল আবহাওয়ায় ছাত্রীরাও কৃষিকাজে

E Zero Point

দাদপুর থানার পুলিশের মানবিক ভূমিকা

E Zero Point

মতামত দিন