জিরো পয়েন্ট নিউজ – আলেক শেখ, কালনা, ২৫ অগাস্ট ২০২০:
সুখা মরসুমে –দড়ি ধরে মারো টান, এইভাবে চলে খড়ি নদীর নৌকা পারাপার। আর সুখা মরশুমে নদীর জল শুকিয়ে গেলে তখন ঝরঝরে বাঁশের সেতু দিয়েই চলে পারাপার। এই ভাবেই ঐতিহাসিক সূটরা ঘাটে ঝুঁকিপূর্ণ নদী পারাপার চলে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। এ রাজ্যের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতায় আসার আগে মানুষকে স্বপ্ন দেখেছিল শুটরা ঘাটে খড়ি নদীর উপর দিয়ে পাকা সেতু হবে | গ্রামের মধ্য দিয়ে পাকা সড়ক হবে | কিন্ত স্বপ্ন দেখানোই সার | সেই দেখানো স্বপ্ন আজও বাস্তবায়িত হয়নি। তাই বর্ষাকালে নৌকায় আর সুখা মরশুমে বাঁশের সেতু বেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ নদী পারাপার করতে হচ্ছে মানুষজনকে | কারন রাস্তা নেই, ঘাট নেই, নৌকায় ওঠার কোন সিঁড়ি পর্যন্ত নেই | লাফ মেরে নৌকা চাপতে হচ্ছে। নদীর দুই পাড়ে বাধা দড়ি টেনেই নৌকা চালাতে হচ্ছে। অথচ এই শুটরার ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম | রাস্তা ও পাকা সেতুর চাহিদা অপরিসীম | কেন ? তা শুটরা ঘাটের মানুষের পারাপার দেখেই বোঝা যায় | এক সময় এই খড়ি নদী বেয়েই কলকাতার সাথে ব্যবসা বাণিজ্য চলতো | কিন্তু কালের নিয়মে রাস্তা ঘাটের আমূল পরিবর্তনে বর্তমানে নদী ভিত্তিক ব্যবসা বাণিজ্যে ভাটা পড়েছে | তবুও মানুষের জীবন জীবিকার টানে নদীপাড়াপার বন্ধ হয়নি। রাজ্যে নদী পারাপারের স্থানগুলোর অন্যতম স্থানটি হল শুটরা ঘাট। উল্লেখ্য এক সময় আদি সুরের পুত্র ভু-সুরের রাজধানী ছিল এই শুটরাতে | এক পাড়ে পূর্বস্থলীর দোগাছিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত অপর পাড়ে মন্তেশ্বরের মামুদপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত | দুই পাড়ের মানুষজনকে জীবিকার টানে প্রতিদিনই নদী পারাপার করতে হয়। এমনকি পূর্বস্থলীর সাত / আট শো ছাত্র ছাত্রীকে প্রতিদিনই নদী পাড় হয়ে শুটরা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তে যেতে হয়। যদিও বর্তমানে লকডাউন এর কারণে স্কুল বন্ধ আছে। এলাকার মানুষ ছাড়াও নদীয়া জেলার বহু মানুষ এই পথ ধরেই বর্ধমান যাতায়াত করেন। এই ফেরিঘাট প্রতি বছর বিলি করে হাজার হাজার টাকা রাজস্ব আদায় করে বর্ধমান জেলা পরিষদ। কিন্তু সূটরা ঘাট উন্নয়নের জন্য কিছুই করেনি বলে এলাকার মানুষের অভিযোগ। এলাকা মানুষের দাবি এই ঘাটটিকে বছরের পর বছর সরকারের রাজস্ব আদায়ের উৎস না করে রেখে, পাকা সেতু তৈরি করা হোক। যাতে এলাকার হাজার হাজার মানুষের নদী পারাপারের দুর্ভোগ দূর হয়।