27/04/2024 : 6:41 AM
অন্যান্য

আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সামনে রেখে… গল্প – পুরস্কার

পুরস্কার


✍️নীল অর্কিড

খবরটা শোনার পর নিজের কানকেই যেন বিশ্বাস করতে পারছেনা মেঘনা।বছর পাঁচেক হল প্রফেশনালি লেখালেখি করছে বেশ কয়েকটি সাহিত্য পত্রিকায়।এই কিছুদিন হল তাঁর উপন্যাস “মা” প্রকাশিত হয়েছে।তবে এই উপন্যাসই যে মেঘনা বোসকে “বর্ষসেরা সাহিত্য পুরস্কার” উপহার দেবে তা স্বপ্নেও ভাবেনি সে।আর সবচেয়ে বড়ো ব্যাপার হল পুরস্কারটি দেবেন বর্তমান প্রজন্মের হার্টথ্রব কবি দিগন্ত সেন।খবরটা তৎক্ষণাৎ জয়ন্তকে জানাল।শুনে স্ত্রীর জন্য গর্ববোধ হলেও একমাত্র মেয়ে এণা এবং মা গীতাদেবীর জন্য মনটা কেমন যেন করে উঠল।বিয়ের দেড় বছরের মাথায় উচ্চাকাঙ্খী বৌমার সাথে সামান্য প্রাচীনপন্থী শাশুড়ির এক ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়।ফলে সন্তানের সুখের জন্য নিজেকে সরিয়ে নেওয়াই শ্রেয় মনে করেন গীতাদেবী।প্রথমটায় যোগাযোগ থাকলেও বিগত তেরো বছর কোনো যোগাযোগ নেই।আর পরিস্থিতির চাপে এণাও বোর্ডিং এ।তবে অনুগামী ভক্তদের মাঝে স্বাধীন বিচরণ পিপাসু মেঘনা বোসের কলম থেমে থাকে না।

নির্দিষ্ট দিনে মিডিয়ার ভিড় ঠেলে অডিটোরিয়ামে প্রবেশ করেন অনুষ্ঠানের মধ্যমণি মেঘনা।দর্শকাসনে বসে জয়ন্ত এবং বিভিন্ন গুণীবৃন্দ।প্রারম্ভিক অনুষ্ঠান শেষে সঞ্চালক মহাশয় নানান বিশেষণ প্রয়োগে লেখিকা ও তাঁর লেখার ভূয়সী প্রসংশায় মুখর।অবশেষে আসে সেই মহেন্দ্রক্ষণ।এক সম্মোহক অনুভূতিতে যেন আবিষ্ট প্রতিটি রোমকূপ।এবার মঞ্চে আসেন বিশিষ্ট কবি দিগন্ত সেন।করতালিতে মুখরিত হয় সমস্ত অডিটোরিয়াম।মাইক্রোফোনের সামনে এসে আপ্লুত কণ্ঠে তিনি বলেন—“আমি অনাথ,আশ্রয়হীণ ছিলাম।চায়ের দোকানে কাজ করতাম।কিন্তু এক মা আমায় আশ্রয় দিয়ে মাতৃস্নেহের অমৃতসুধায় আমার জন্মান্তর ঘটান।আর তাই আমি আপনাদের সামনে।আমি তাঁর সন্তানের কাছে ঋণী,কারন এই মা কে ঘরছাড়া না করলে আমি এই দেবীকে পেতাম না।তাই আজকের পুরস্কারটা মেঘনাদেবীকে তিনিই দেবেন”।দর্শকদের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অতি সাধারণ পোশাকে এক বৃদ্ধা ধীরগতিতে মঞ্চে আসেন।নিরন্তর করতালি চারিদিকে।”ইনিই আমার মা গীতাদেবী।”ইতিমধ্যেচেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছে জয়ন্ত।মুখে বিস্ময়।মেঘনার শরীরে যেন হিমস্রোত বইছে।গীতাদেবী পুরস্কারটা মেঘনার হাতে দিয়ে বললেন,”আরও বড়ো হও মা”।
অশ্রুসজল চোখে মেঘনা ঝুঁকে পড়ে গীতাদেবীর পায়ে।আধবোজা গলায় বলে ওঠে—“আমায়,,আ…মা…য় ক্ষমা করুন মা”।।

Related posts

আট লাখ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা, করোনায় কাঁপছে জাপান

E Zero Point

মেমারি সব্জী বাজারে তৃণমূল নেতৃত্বের মাস্ক প্রদান

E Zero Point

করোনার কারণে ব্যাঙ্কের লেনদেনের সময় রদবদল, জেনে নিন এখনই

E Zero Point

মতামত দিন