30/10/2024 : 3:00 AM
অন্যান্য

বুদ্ধ পূর্ণিমার দিনেই পশু বলির পুজো

পরাগ জ্যোতি ঘোষ, মঙ্গলকোটঃ বুদ্ধ পূর্ণিমা এক পবিত্র দিন। ভগবান বুদ্ধ এই দিন বোধি লাভ করেন। তার এই মোক্ষ প্রাপ্তির দিনটিকে স্মরণ রাখার জন্য তা নির্দেশিত পথে তাকে পুজো অর্চনা করেন বুদ্ধ অনুগামীরা। আশ্চর্যের বিষয় এই দিনটিতেই রাঢ় বাংলায় নানা স্থানে পশু বলির মাধ্যমে উপাসনা করা হয় ধর্মরাজ কালি বা আদিরানাথের। কিন্তু কেন এই দিনটিকে বেছে নিয়েছিলেন পশু বলির উপাচারে তাদের আরাধ্য দেবতাদের পুজোকে। এ বিষয়ে অনুসন্ধান করলে জানা যায়, যখন বৌদ্ধ ধর্ম ভীষণভাবে তার প্রভাব হারিয়ে ফেলেছিল বাংলায় তখনই শঙ্করাচার্য প্রবর্তিত ব্রাহ্মণ্য ধর্ম প্রবলভাবে মাথাচাড়া দেয় বাংলায়। তারা চিন্তা করেন কিভাবে এই অহিংস ধর্মের প্রভাবকে চিরতরে খর্ব করে দেওয়া যায় ইতিহাস থেকে। শঙ্করাচার্য অনুগামীরা এই দিনটাকে বেছে নেন এবং বলিপ্রথা ,বানফোরা, ধুনোর গন্ধ ইত্যাদির মাধ্যমে জাগিয়ে তোলেন তাদের ধর্মমতকে। ধীরে ধীরে ঢাকা পড়ে যায় বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব। তাইতো এই দিনটিতে একদিকে যেমন দেখা যায় সম্পূর্ণ অহিংস মতে ভগবান বুদ্ধের আরাধনা, অন্যদিকে ঢাক ঢোল, পশু হত্যার মাধ্যমে তন্ত্রসাধক দের পূজা। কয়েকদিন আগেই লকডাউন এর মধ্যেই হয়ে গেল বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন এই ধরনের না না পুজো মঙ্গলকোটের উনিয়া, মুদিয়ান তাতারপুর, পালিগ্রাম পশ্চিমপাড়া , মহিষ গড়িয়া, জালপাড়া প্রভৃতি গ্রামে। শুধু মঙ্গলকোট ছাড়াও জেলার অন্যান্য গ্রামেও পশুবলি পুজো হয়েছে বলে জানা গেছে। কোথাও ধর্মরাজ, কোথাও আদিরানাথ ইত্যাদি নানা পূজার উৎসব।

কোথাও নিয়ম বিধি মেনে সামান্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পুজো হলো, কোথাও আবার কোন নিয়ম বিধি মানার উপক্রম নেই। পেশায় শিক্ষক মানুষকেও অনভিজ্ঞ এর মত দেখা গেল অন্ধ ভক্তের ভূমিকায় দাঁড়িয়ে থাকতে। বড় অবাক লাগে এই লক ডাউন এর সময় এই ধরনের মাস্ক বিহীন জমায়েত কত বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে সে বিষয়ে সাধারণ মানুষকে যাদের সচেতন করা দরকার তারাই মানলেন না ধর্মের দোহাই দিয়ে। যেখানে দেশের বড় বড় ধর্ম প্রতিষ্ঠান এর দরজা বন্ধ সেখানে এই ধরনের ধর্মের দোহাই দিয়ে মানুষকে বিপদের মধ্যে ফেলে দেওয়া সুস্থ মানসিকতার লক্ষণ নয়। আসলে ভগবান বুদ্ধ দেবের প্রবর্তিত পথ হলো সাম্য মৈত্রী ও সততার পথ। বিজ্ঞানের ছায়া আছে সেই পথে। সত্যিকারের ধর্ম হল ধারণ করার ক্ষমতা। তাই এই দিন ভগবান বুদ্ধের আরাধনা যেখানেই হয়েছে সম্পূর্ণ লকডাউন এর নিয়ম বিধি মেনেই হয়েছে। অথচ তার বিপরীতমুখী ধর্মীয় অনুষ্ঠান গুলি অধিকাংশ লক ডাউনের নিয়ম বিধি মানলো না। এর দায় নেবে কে তার উত্তর দেবে সময়ই।

Related posts

অনুগামীদের অপদস্থ করার চেষ্টা করলে, মেরে হাড়গোড় সমান করে দেবোঃ বিধায়ক

E Zero Point

ভিডিওতে দেখুন – লকডাউনের দিনে মেমারিতে পুলিশি অভিযান

E Zero Point

সাঁঝের বলাকা : মুস্তারী বেগম

E Zero Point

মতামত দিন