সংবাদ সংস্থাঃ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া নতুন করোনাভাইরাসে ব্রাজিলে মৃত্যুর সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। দেশটিতে কভিড-১৯-এ শনাক্ত আক্রান্তের সংখ্যাও ৩ লাখ ১০ হাজার পেরিয়ে গেছে বলে এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে। প্রাণঘাতী ভাইরাসটি শনাক্তে পর্যাপ্ত পরীক্ষা না হওয়ায় ব্রাজিলে আক্রান্ত-মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রাজিলে সংক্রমণ সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছাতে আরও অন্তত কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে। মৃত্যুর সংখ্যায় দেশটি শিগগিরই স্পেন, ইতালি, ফ্রান্সকে ছাড়িয়ে যাবে বলেও আশঙ্কা তাদের। ব্রাজিলে করোনাভাইরাসের মৃতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যকই বয়সে তরুণ। অথচ বিশ্বের অন্যান্য দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতদের মধ্যে তরুণদের তুলনায় বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি। ব্রাজিলে করোনায় মৃতদের ৬৯ শতাংশের বয়স ৬০ বছরের বেশি। অথচ স্পেন ও ইতালিতে এই বয়সী মৃতদের প্রায় ৯৫ শতাংশ। ব্রাজিলের তরুণদের মৃত্যুহার বেশি হওয়ার কারণে দেশটিতে বয়স্কদের সংখ্যা মাত্র ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ। আর স্পেন ও ইতালিতে বয়স্কদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ২৫ ও ২৮ শতাংশ।
ব্রাসিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামারীবিদ মাউরো শানচেঝ বলেন, ‘ব্রাজিলে তরুণ জনসংখ্যাই বেশি। ফলে ৬০ বছর বয়সের নিচের জনগণের মধ্যেই করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেশি হবে এমনটাই স্বাভাবিক। তবে তরুণদের মৃত্যুর বড় কারণ তাদের বেপরোয়া ভাব। লকডাউনের মাঝেও রাস্তায় বিপুলসংখ্যক তরুণকে দেখা যায়। তরুণরা বিধিনিষেধ কম মানে।’
এপ্রিলের শুরুতে ব্রাজিলে করোনায় মৃতদের মধ্যে ১৯ শতাংশের বয়সই ৬০ বছরের নিচে। আর চলতি সপ্তাহে এই মাত্রা ৩১ শতাংশে ঠেকেছে বলে জানিয়েছে এএফপি। মোবাইল ফোনের লোকেশন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ব্রাজিলের শহরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে লকডাউনে ঘরে থাকার প্রবণতা খুব কম। কিছু বিশেষজ্ঞ অবশ্য সরকারের নীতিমালাকে দায়ী করেন। তাদের মতে, প্রেসিডেন্ট জইর বোলসোনারো লকডাউনের মাঝেই তার পার্টির সমর্থকদের দিয়ে ব্যাপক শোডাউন করেন। রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টই যখন নিয়ম মানেন না, তখন জনগণও স্বাভাবিক নিয়মেই প্রেসিডেন্টকে অনুসরণ করবে। বোলসোনারো শুরু থেকেই করোনাভাইরাসকে ‘লিটল ফ্লু’ বলে আখ্যা দিয়ে আসছেন। ন্যাশনাল স্কুল অব পাবলিক হেলথের বিশেষজ্ঞ প্যাট্রিসিয়া কান্টো বলেন, ‘মৃতের সংখ্যা উদ্বেগজনক।