বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’-এর রিপোর্ট বলছে, শিশুদের শরীর ও মনের বিকাশের ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা হল তাদের শরীরচর্চা না করা। সমীক্ষা বলছে ১৪৬টি দেশের শিশুদের মধ্যে দেখা গিয়েছে, মাত্র চারটি দেশ ছাড়া আর সব দেশেই মেয়েদের চেয়ে ছেলেরা বেশি সক্রিয়।
সাম্প্রতিক একাধিক পরিসংখ্যান বলছে, গোটা বিশ্বের ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের ৮০ শতাংশই বিভিন্ন কারণে শরীরচর্চা বিমুখ। এদের অনেকেই মোবাইল ফোন, অ্যানড্রয়েড গেম, ভিডিয়ো গেম, টিভি দেখার প্রতি অতিরিক্ত আশক্তির ফলে শরীরচর্চা বিমুখ হয়ে পড়েছে। তবে এ ছাড়াও সুযোগ, সঙ্গী এবং উপযুক্ত জায়গার অভাবে শরীরচর্চা করতে পারে না অনেক শিশু।
কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিটা একেবারে আলাদা। এই সময় করোনা আতঙ্কের জেরে গোটা বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষই ঘরবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তাই বাচ্চা থেকে বুড়ো— সক্রিয় শরীরচর্চার সুযোগ নেই কারও। ফলে প্রায় সব বয়সের মানুষই এখন হয় মোবাইল ফোন, অ্যানড্রয়েড গেম নয়তো টিভি দেখেই দিনের বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুদের শরীর ও মনের বিকাশ।
শিশুদের নিয়মিত শরীরচর্চা কেন জরুরি?
১) হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখতে,
২) ফুসফুস সুস্থ রাখতে,
৩) হাড় ও পেশি শক্ত করতে,
৪) মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে,
৫) এবং ওজন কমাতে।
শিশুদের শরীরচর্চা না করার কারণ কি?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’-এর সমীক্ষার রিপোর্ট থেকে জানা যায়, পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপ ও মোবাইলই হল শিশুদের শরীরচর্চা না করার অন্যতম কারণ।
এর জন্য কী কী করবেন?
১) ঘরবন্দি অবস্থায় দৌড়ানোর অভ্যাস করানো সম্ভব নয়। তাই খেলার ছলে স্কিপিং বা লাফ দড়ির সাহায্য সন্তানকে শরীরচর্চা করার।
২) সন্তানের সঙ্গে খেলায় সঙ্গ দিন আপনিও। ওদের সঙ্গে খেলতে খেলতে বাড়ির বড়দেরও খানিকটা শরীরচর্চা হয়ে যাবে।
৩) খেলার ছলে সন্তানকে যোগাভ্যাস করান। ঘরবন্দি অবস্থায় যোগার চেয়ে ভাল শরীরচর্চা আর কিছুই হতে পারে না।
৪) পড়াশুনার বাইরে অবসর সময় কাটানোর জন্য সন্তানের হাতে মোবাইল ফোনের পরিবর্তে তুলে দিন গল্পের বই, ধাঁধাঁর সামগ্রী।
খেয়াল রাখবেন, ওদের যেন কখনওই মনে না হয় যে, ঘরে আটকে রেখে ওদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। বরং এই সময়টা ঘরের মধ্যে থাকার উপকারিতা সম্পর্কে ওদের বোঝানোর চেষ্টা করুন।
পূর্ববর্তী পোস্ট