আলেক শেখঃ পূর্বে সাধারণ মানুষের হয়ে কাজ করতে গিয়ে শাররীক ভাবে নির্যাতিত হতো। এখন সেই আক্রমনের পাশাপাশি শুরু হয়েছে মগজের উপরও আক্রমন। মানুষকে সংগঠিত করে দুটো আক্রমনেরই মোকাবিলা করে সাধারণ মানুষের স্বার্থে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। কারন অত্যাচারীরা শেষ কথা বলে, শেষ কথা বলে জনগন। বৃহস্পতিবার কালনাষ্টেশন চত্বরে অনুষ্ঠিত শহীদ দিবসের স্মরণ সভায় বলেন– সারা ভারত কৃষকসভার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক অমল হালদার। সভা পরিচালনা করেন পার্টির কালনা শহর এরিয়া কমিটির সম্পাদক ডাঃ গৌরাঙ্গ গৌস্বামী। তিনি আরো বলেন– মগজের আক্রমনের সাথে সাধারণ মানুষের উপর অর্থনৈতিক আক্রমনও শুরু হয়েছে। এ বছর তো বটেই গত বছরের পর্যন্ত প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা জমা পড়েনি। এক দিকে জিও, এয়ারটেলের মত বেসরকারি সংস্থাগুলির হাজার হাজার কোটি টাকা সরকারের বকেয়া পরে আছে। অথচ বিএসএনএল-এর মতো সরকারি সংস্থাকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই যায় সংস্থার ১২ জন কর্মচারী আত্মহত্যা করেছেন। দেশে মোটরগাড়ি বিক্রি হচ্ছে না। এই মোটরগাড়ি শিল্পের সাথে যুক্ত ১২ লক্ষ কর্মচারী চরম সংকটের মুখে। বস্ত্র শিল্পের তিন ভাগের দুই ভাগ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। দেশে ৪০ লক্ষ কোটি টাকার তুল উৎপাদন হয়। চরম বিপাকে পড়বেন দেশের তুলো কৃষকরা। কেন্দ্র সরকার ১৯০ টি রুটের ট্রেন বেসরকারি সংস্থার হাতে ইতিমধ্যেই তুলে দিয়েছে। ব্যাংক, বিমাও বেসরকারি করা হচ্ছে। কৃষক ও শ্রমিক মারা জন্য অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়েছে। শ্রমিকের কাজের সীমা বাড়বে, তারা অধিকার হারাবে কারখানায় আন্দোলন করাও। আর কৃষি ক্ষেত্রটাই চলে যাবে বহুজাতিক সংস্থার হাতে। অর্থাৎ নতুন করে নীলকর সাহেবদের আগমন ঘটবে। অত্যাবশ্যকীয় আইন তুলে দেওয়ার ফলে কালোবাজরারীদের পোয়া বারো হয়ে গেল। মিডিয়ার সমালোচনা করে হালদার বলেন— গতকালের দিলীপ ঘোষের উপর আক্রমনের ঘটনা নিয়ে হৈ হৈ করে প্রচারে নেমে পড়লেও বামপন্থীরা রাজ্য জুড়ে সংকটে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়ালেও এক লাইন কোন খবর হয় না। এই ভাবেই মানুষের মগজকে তৃণমূল- বিজেপির কৃত্রিম লড়াইয়ে ডুবিয়ে রাখা হচ্ছে। তাই আমাদের চতুর্মুখী আক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে সাধারণ মানুষকে সংগঠিত করে। স্মরণসভা শুরুর আগে পতাকা উত্তোলন, শহীদবেদিতে মাল্যদান করে কালনার ৫২ জন শহীদকে শ্রদ্ধা জানান– শহীদ পরিবার পরিজন ও বিভিন্ন গণসংঠনের নেতৃবৃন্দ।
১৯৭১ সালের ২রা জুলাই রাত্রিবেলা এই কালনা ষ্টেশনেই কংগ্রেসি ঘাতক বাহিনীর হাতে শহীদ হন সি পি আই এমের বর্ধমান জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য মহাদেব ব্যানার্জি। তাঁর আগে ও পরে শহীদ হন আরো ৫১ জন সি পি আই এম নেতা ও কর্মী। এই ৫২ জন শহীদকে স্মরণ করতে প্রতি বছর ২রা জুলাইকে শহীদ দিবস হিসাবে নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালন করে আসছে কালনার মানুষ। এদিন সকাল ৮ টার মধ্যেই কালনা ষ্টেশন চত্বরে জমায়েতের পর পতাকা উত্তোলন, শহীদ বেদিতে মাল্যদান, স্মরণ সভা শেষে শুরু হয় বর্ণাঢ্য মিছিল। কালনা শহর পরিক্রমার পাশাপাশি রাস্তার পাশে থাকা শহীদবেদীগুলিতে মালয়দান করা হয়। শেষে কালনার চকবাজারে অবস্থিত শহীদ মহাদেব ব্যানার্জির আবক্ষ মূর্তির পাদদেশে গিয়ে মিছিল শেষ হয়। সেখানে মহাদেব ব্যানার্জির মূর্তিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানান নেতৃবৃন্দ | এখানে বক্তব্য রাখেন সুকান্ত কোনার |