স্টাফ রিপোর্টার, মেমারি, ২৪ জুলাইঃ
একদিকে করোনার সাম্প্রতিক গতিবৃদ্ধি অন্যদিকে অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতির চিন্তায় যখন সাধারণ মানুষ নাজেহাল তখন দেশ ও রাজ্যের শাসকদলের একমাত্র চিন্তা ক্ষমতা দখলের খেলায় নিত্যনতুন পদ্ধতি। ঠান্ডাঘরে থেকে নেতারা যখন ঘুঁটি সাজান ভোটযুদ্ধের তখন দলের সৈনিকরা একে অপরের বিরুদ্ধে লড়তে থাকে দলের আনুগত্যের জন্য। সাধারণ মানুষের সুযোগ সুবিধার কথা তখন তারা ভুলে যায়।
কয়েক বছর ধরেই মেমারি পৌরসভার ১৪ নং ওয়ার্ডের দিঘীর পাড়ায় প্রায়ই তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে বচসার খবর সংববাদ মাধ্যমে প্রকাশ পায়, ফলে ১৪ নং ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ এই বিবাদে বিরক্ত হয়ে উঠেছে।
ঘটনায় প্রকাশ গত ২১ জুলাই মেমারি পৌরসভার ১৪ নং ওয়ার্ডের দিঘীর পাড়ায় ড্রেনের আবর্জনার স্তুপ পরিষ্কার করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপি কর্মী দম্পতি সনৎ বিশ্বাস ও দীপিকা বিশ্বাসকে মারধরের অভিযোগ দায়ের করা হয় তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর রঞ্জিত বাগের বিরুদ্ধে।
মেমারি বিধান সভার কনভেনার চন্দ্রশেখর সাউ জানান যে, প্রায় ১ সপ্তাহ ব্যাপী দিঘীর পাড়ের ড্রেনের ময়লা আবর্জনার স্তুপ পরে আছে। মেমারি পৌরসভা থেকে তা পরিস্কার করা হয়নি, পাড়ার লোকেদের সাথে এই নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে ১৪ নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর রঞ্জিত বাগ ও তার সহযোগীরা পূর্ব আক্রোশবশত বিজেপি কর্মী সনৎ বিশ্বাসকে মারধর করে এবং সনৎ বিশ্বাসের স্ত্রী দীপিকা বিশ্বাস তার স্বামীকে বাঁচাতে এলে তাকেও হেনস্থা করা হয়। তিনি আরও জানান যে প্রশাসন এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না নিলে আর প্রতিবাদ নয়, প্রতিশোধ নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ১৪ নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর রঞ্জিত বাগের কাছে জানতে চাওয়া হলে উক্ত ঘটনার অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ করেন সনৎ বিশ্বাস ও তার অন্যান্য বিজেপি সহযোগীদের বিরুদ্ধে। তিনি জানান যে, ২১ জুলাই শহীদ দিবসের জন্য সকালে পার্টি অফিস অভিমুখে রওনা হওয়ার সময় তারই জ্যেঠিমা বাড়ির কাছের ড্রেনের ভিজে আবর্জনার স্তুপ পরিষ্কার করার জন্য বলেন। যেহেতু আবর্জনা ভিজে ছিল তাই সাফাইকর্মীরা শুকনো না হওয়া পর্যন্ত এক-দুদিন রেখে আবর্জনার স্তুপ পরিস্কার করেন, পরেরদিন পরিস্কার করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়, এই কথাবার্তা হওয়ার সময় জ্যেঠিমার প্রতিবেশী বিজেপি কর্মী সনৎ বিশ্বাস ঘরের বাইরে বেড়িয়ে এসে অকথ্য গালিগালাজ ও মারমুখী হয়। পাড়ার লোকেরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
প্রাক্তন কাউন্সিলর আরও জানান যে, সেদিনই সন্ধ্যায় তার বন্ধুর মায়ের অপারেশন থাকায় তিনি বর্ধমানে যাওয়ার পরই বিজেপি কর্মী সনৎ বিশ্বাস ও স্বপন মজুদার প্রায় ১০-২০ জন পাড়ার বহিরাগত বিজেপি কর্মী নিয়ে এসে তার বাড়িতে মহিলাদের উপর হামলা চালায় এবং ঘরে ঢুকে শাসিয়ে যায়।
এমতাবস্থায় পরের দিন মেমারি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন, প্রাক্তন কাউন্সিলর রণজিৎ বাগ ও তার পরিবার। তিনি জানান দিনকে দিন বিজেপি সমাজবিরোধীদের দৌরাত্মে পাড়ায় প্রায়ই বচসা লেগে থাকে, তিনি মেমারি থানার ওসির হস্তক্ষেপ চেয়ে জানান যে নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক।
প্রসঙ্গক্রমে প্রাক্তণ কাউন্সিলর রঞ্জিত বাগ জানান তিনি ও তার সহকর্মীরা প্রায়ই আক্রান্ত হয় বিজেপির কাছে, এব্যাপারে তিনি তৃণমূলের উদ্ধর্তন নেতৃত্বের সাথে কথা বলবেন।