জিরো পয়েন্ট নিউজ ডেস্ক, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১:
অশোক নগর কল্যাণ গড় শিশু উৎসব কমিটির উদ্যোগে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিবস উদযাপন। ২৬ সেপ্টেম্বর বাংলার নবজাগরণের অন্যতম প্রাণপুরুষ, স্ত্রী শিক্ষা ও প্রাথমিক শিক্ষা প্রসারের পথপ্রদর্শক, সমাজ সংস্কারক, বাংলা মায়ের সু-সন্তান ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিবস উদযাপন অনুষ্ঠান অশোক নগর কল্যাণ গড় শিশু উৎসব কমিটির পরিচালনায় অশোক নগর কচুয়া মোড়ে অনুষ্ঠিত হয় ।
মহাপুরুষের জন্মদিবসে তাঁর আদর্শ, ভাবনা ও সৃষ্টিকে স্মরণ করে শিশু শিল্পী অরিত্র দাস, অশেষ মুখার্জি, সিগ্ধা দাস বক্তব্য রাখে এবং বক্তব্য রাখেন ডাক্তার সুজন সেন, অশোক নগর বিদ্যাসাগর বানিভবন হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনোজ ঘোষ ও অর্ণব মিত্র। শিশুরা মূলত বিদ্যাসাগরের জীবনের কিছু উল্লেখ যোগ্য ঘটনা বক্তব্যে তুলে ধরে । অর্ণব মিত্র বক্তৃতায় বাল্য বিবাহ রোধ ও বিধবা বিবাহ প্রবর্তনের ক্ষেত্রে বিদ্যাসাগরের অবদানের কথা উল্লেখ করেন।তিনি বিদ্যাসাগরের পড়াশুনার সময় ও ধারা বক্তৃতায় তুলে ধরেন ।
ডাক্তার সুজন সেন বলেন আজকে বিদ্যাসাগর জন্মদিনে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে এই এলাকাতে বিদ্যাসাগরের নামে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই, নেই কোনো ক্লাবের নাম এবং বিদ্যাসাগর হাই স্কুল ছাড়া এলাকাতে কোনো মূর্তিও বিদ্যাসাগরের নেই । এরজন্য নিজের মনে একটা জ্বালা অনুভব করি । বাল্য বিবাহ বন্ধের জন্য বিদ্যাসাগর অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন । কিন্তু খারাপ লাগে আজও বাল্য বিবাহ চলছে । আজ বাল্য বিবাহের সংখ্যার ক্ষেত্রে এই রাজ্য তৃতীয় স্থানে আছে । বিদ্যাসাগর ভাবনা ছিল সবার জন্য শিক্ষা হওয়া দরকার । প্রথমে শিশু শিক্ষা, তারপর সাধারণ শিক্ষা , তারপর নারী শিক্ষা ।
শিক্ষার ক্ষেত্রে তার অবদান অনস্বীকার্য । বিধবা বিবাহ প্রচলনের জন্য আইন পাশ করাতে বিদ্যাসাগর বাধ্য করেছিলেন । বাল্য বিবাহ বন্ধের জন্যও বিদ্যাসাগরের ভূমিকার কথা ডাক্তার সেন বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেন । শিক্ষার প্রসারে বিদ্যাসাগরের বিশেষ ভূমিকার কথা তিনি বিস্তারিতভাবে বলেন । বিদ্যাসাগর অনেক মানুষদের দান করেছেন কিন্তু কোনো দিন মন্দিরে কিছু দান করেন নি । বিদ্যাসাগর জাতপাত মানতেন না, ধর্মের লড়াই করতেন না। ছোটদের মধ্যে যাতে জাত পাত এর ভাবনা না আসে সেইজন্য বর্ণপরিচয় এ চরিত্র গুলোতে শুধু নাম ব্যবহার করছেন কিন্তু টাইটেল ব্যবহার করেন নি ।
বাংলাতে বানানের ব্যবহার আমরা বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয় থেকে শিখেছি । বিদ্যাসাগর ছিলেন বিজ্ঞান মনস্ক মানুষ । বিদ্যাসাগরের চিন্তা, ভাবনা আজও খুব প্রাসঙ্গিক। বিদ্যাসাগরের কর্মকাণ্ড যেভাবে সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরা দরকার তা সেভাবে কোনো সরকার করছেন না । এরপর বিদ্যাসাগরের আরো কর্মকাণ্ড ডাক্তার সুজন সেন সুন্দর ভাবে তুলে বলেন।
এরপর অশোক নগর বিদ্যাসাগর বাণী ভবনের প্রধান শিক্ষক মনোজ ঘোষ বলেন বিদ্যাসাগর ভাবতেন মানুষই ভগবান । মানুষই দেবতা। ভগবান বা দেবতা বলে আলাদা কিছু নেই । বিদ্যাসাগরের জীবনের কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা মনোজ ঘোষ সুন্দরভাবে বক্তৃতা তে তুলে ধরেন । তিনি আরো বলেন আমরা নিজেরা যদি নিজের কাজ ঠিক ঠিক ভাবে করি তাহলে অনেক কিছুর সমস্যার সমাধান তাড়াতাড়ি হয় । আর তবেই এই মহান ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এছাড়া অনুষ্ঠানে বিদ্যাসাগর কে স্মরণ করে সঙ্গীত পরিবেশন করেন রেইণী দাস, প্রমনা কুন্ডু ও শ্রুতি নাটক বর্ণপরিচয় পরিবেশন করে শিশু উৎসব কমিটির শিশু নাট্য কর্মীরা ।