জিরো পয়েন্ট নিউজ – জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, মঙ্গলকোট, ১০ জানুয়ারি ২০২২:
হরিশে বিষাদ! পিকনিকের আনন্দঘন পরিবেশে মুহূর্তের মধ্যে নেমে এল বিষাদের কালো ছায়া। সবার বাড়ি ফেরা হলেও অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুমনা খাতুনের আর বাড়ি ফেরা হলোনা। আশঙ্কা মা-বাবার কোল খালি করে দিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছে সে। বেদনাদায়ক ঘটনাটি গত ৯ ই জানুয়ারি পশ্চিম মঙ্গলকোটের পালিগ্রামে ঘটে ।
স্হানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে পালিগ্রাম অঞ্চলের নবগ্রামের বাসিন্দা সুমনা, রেহেনা ও আসিফ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে অজয় নদের ধারে পিকনিক করতে যায়। কোনো একসময় ওরা তিনজন বন্যার ফলে অজয়ের বুকে সৃষ্ট ‘দহ’ এর জলে স্নান করতে নামে। তখনই ঘটে যায় বিপর্যয়। তিনজনই স্রোতের টানে জলে তলায় তলিয়ে যায়। চিৎকার চেঁচামেচিতে নদীর দু’পারে লোক জমে যায়। তাদের উদ্ধার করতে জলে নেমে পড়ে গ্রামবাসীদের একাংশ। জলের উপর রেহানাকে ভাসতে দেখে গ্রামবাসীরা তাকে উদ্ধার করে। ঘটনার আকষ্মিকতায় সে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে চিকিৎসার জন্য প্রথমে তাকে গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ও পরে বর্ধমান হাসপাতালে স্হানান্তর করা হয়। আসিফকে উদ্ধার করা গেলেও বিভিন্নভাবে বহু চেষ্টা করেও সুমনাকে আর উদ্ধার করা যায়নি। দীর্ঘ সময় অতিক্রম হওয়ায় গ্রামবাসীদের আশঙ্কা সে হয়তো আর ফিরে আসবেনা। দুর্ঘটনার জন্য অজয়ের দু’পাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে নেমে আসে বিষাদের ছায়া।
খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্হলে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ আসে। মেয়েটিকে উদ্ধার করার জন্য কাটোয়া থেকে উদ্ধারকারী দল আসে। স্পিড বোটের সাহায্যে তারা দীর্ঘক্ষণ ধরে তল্লাশি চালায়। কিন্তু রাত পর্যন্ত মেয়েটির কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
জানা যাচ্ছে যেখানে ‘দহ’টি আছে সেখানে অজয়ের পাড়টি যথেষ্ট খাড়া। ‘দহ’টির গভীরতাও যথেষ্ট। জলের মধ্যে তীব্র স্রোতও ছিল । অসাবধানতাবশত অথবা স্রোতের টান – যেকোনো কারণেই হোক ঐ তিনজন স্নান করতে নেমে জলে তলিয়ে যায়।
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সঙ্গে অজয়ের উভয় পাড়ের বাসিন্দারা এইভাবে একটা ফুটফুটে বাচ্চা মেয়ের তলিয়ে যাওয়া মেনে নিতে পারেনি। সকলের চোখে-মুখে বিষাদের ছায়া। মেয়েটির ফিরে আসার আশায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তারাও দুর্ঘটনাস্হলের দিকে তাকিয়ে থাকে।